সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বহু কসরতের পরও নোবেল ফসকে গিয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হাত থেকে। শুক্রবার নোবেল কমিটি ২০২৫ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য ভেনেজুয়েলার মারিয়া করিনা মাচাদোর নাম ঘোষণা করেছে। এই ঘটনায় নোবেল কমিটির বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠল হোয়াইট হাউস। কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়ে হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, 'নোবেল কমিটি আসলে শান্তির চেয়ে রাজনীতিকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে।'
মার্কিন প্রেসিডেন্ট দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছেন তিনি ৭ থেকে ৮টি যুদ্ধের অবসান ঘটিয়েছেন। বিশ্বশান্তির লক্ষ্যে তাঁর এই বিরাট অবদানের জন্য তিনি নোবেল পুরস্কারের যোগ্য। তবে শেষ পর্যন্ত সব হিসেব উলটে পালটে যাওয়ায় আপাতত হোয়াইট হাউসের কাছে নোবেল পুরস্কার অনেকটা আঙ্গুর ফল টকের মতো। এক্স হ্যান্ডেলে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র স্টিভেন চিউং বিবৃতি জারি করে জানিয়েছেন, 'প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প শান্তি চুক্তি, যুদ্ধের অবসান এবং অসহায় মানুষের প্রাণ বাঁচানোর কাজ আগের মতোই জারি রাখবেন। তাঁর মধ্যে মানবিক হৃদয় রয়েছে। তাঁর মতো ব্যক্তি আর কখনও আসবেন না যিনি মনের জোরে পাহাড় সরাতে পারেন।' এরপরই তিনি লেখেন, 'নোবেল কমিটি আসলে শান্তির চেয়ে রাজনীতিকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে।'
তবে হোয়াইট হাউস নোবেল শান্তি পুরস্কারে রাজনীতি দেখলেও বাস্তব বলছে চলতি বছর ট্রাম্পের নোবেল না পাওয়ার নেপথ্যে একাধিক কারণ ছিল। তিনি এই পুরস্কারের যোগ্য কি না তা পরের বিষয়, ছিল একাধিক নিয়মের গেরো। ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি। এদিকে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন জমার সময়সীমা ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত। মনোনয়ন নেওয়া হয়েছে ৩৩৮ জনের। অর্থাৎ দায়িত্ব গ্রহণের মাত্র ১২ দিন পর বন্ধ হয় মনোনয়ন প্রক্রিয়া। এই সময়ের মধ্যে বিশ্বশান্তির লক্ষ্যে কোনও কৃতিত্ব নেই ট্রাম্পের। তাছাড়া, নোবেল কমিটির নিয়ম অনুযায়ী, ২০২৫ সালে যাঁরা নোবেল পুরস্কার পাচ্ছেন, তাঁদের এই পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে ২০২৪ সালের কাজের ভিত্তিতে। সেই নিয়মেও যোগ্য ছিলেন না ট্রাম্প।
এদিন নোবেল কমিটির তরফে শান্তির নোবেল পুরস্কার ঘোষণার সঙ্গেই স্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দিয়েছে কেন ট্রাম্প পেলেন না নোবেল। কমিটির তরফে জানানো হয়, ''স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য গণতন্ত্রই প্রথম শর্ত। তবে আমরা এমন একটি পৃথিবীতে বাস করছি যেখানে গণতন্ত্র পিছিয়ে পড়েছে। কতৃত্ববাদ শাসনব্যবস্থার নীতিকে লাগাতার চ্যালেঞ্জ ছুড়ছে এবং হিংসার আশ্রয় নিচ্ছে।'' নোবেল পুরস্কারের জন্য মাচাদোর নাম ঘোষণা করে কমিটি জানায়, ''মাচাদো গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে লাগাতার কাজ করে চলেছেন।''
