সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অন্য কেউ নয়, এশিয়ার ভরকেন্দ্র আসলে ভারত। আমেরিকার ৪৭ তম প্রেসিডেন্ট পদে বসার পর কার্যত তেমনই ইঙ্গিত দিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে ভারতের প্রতিনিধি এস জয়শংকরকে বিশেষ সম্মান দিয়েছিল নয়া আমেরিকা। এবার নয়া সরকারের প্রথম কূটনৈতিক বৈঠকও বিদেশমন্ত্রী জয়শংকরের সঙ্গে করলেন মার্কিন বিদেশ সচিব মারো রুবিও ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালজ।
এমনিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ভালো বন্ধুত্ব রয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের। তবে বর্তমান আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি, বিশেষ করে এশিয়ায় মহাদেশে ভারতের গুরুত্ব যে অপরিসীম তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে আমেরিকা। তাই চিনের বাড়াবাড়িতে লাগাম টানতে ভারতকে আরও কাছে পেতে চাইছে ট্রাম্প প্রশাসন। তার ইঙ্গিত অবশ্য মিলেছিল প্রথম দিনই। ট্রাম্পের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে জয়শংকরকে আসন দেওয়া হয়েছিল একেবারে সামনের সারিতে, যা ইতিবাচক সংকেত হিসেবেই দেখছিল কূটনৈতিক মহল। জয়শংকরের দুই সারি পিছনে জায়গা পেয়েছিলেন কোয়াডের দুই সদস্য জাপান, অস্ট্রেলিয়ার প্রতিনিধিরা।
সেই ঘটনার পর মঙ্গলবার কোয়াড বৈঠকের আগে ভারতের বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে প্রথম কূটনৈতিক বৈঠক করল নয়া ট্রাম্প সরকার। নয়া সরকারের বিদেশ সচিব হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর রুবিও প্রথম বৈঠক করেন জয়শংকরের সঙ্গে। জানা যাচ্ছে, রুদ্ধদ্বার এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালজ ও ভারতের রাষ্ট্রদূত বিনয় কুয়াত্রা। সূত্রের খবর, এই বৈঠকে দুই দেশের কূটনৈতিক একাধিক ইস্যু তো বটেই ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনা আগ্রাসন রুখতে ভারতের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করার বার্তা দেওয়া হয়েছে। বৈঠক শেষে এক্স হ্যান্ডেলে জয়শংকর লেখেন, 'আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব নেওয়ার পর মারো রুবিওর সঙ্গে প্রথম দ্বিপাক্ষিক বৈঠক সম্পন্ন হল। দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ও একাধিক আন্তর্জাতিক ইস্যুতে আলোচনা হয়েছে আমাদের।' এই বৈঠকের ঠিক পর অস্ট্রেলিয়া, ভারত, জাপান ও আমেরিকা এই চার দেশ নিয়ে গঠিত কোয়াডের বৈঠকে যোগ দেন বিদেশমন্ত্রী।
উল্লেখ্য, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে চিনের আগ্রাসনকে সামাল দিতে হাতে হাত রেখেছিল এই চার দেশের মিলিত সংগঠন কোয়াড। যদিও বাইডেন শাসনে বার বার অভিযোগ উঠেছিল, কোয়াড ক্রমশ গুরুত্বহীন হয়ে পড়ছে। গত বছর জানুয়ারি মাসে কোয়াড বৈঠক হলেও তাতে যোগ দেয়নি আমেরিকা। বরং ভারতকে বাদ দিয়ে তৈরি হয় নয়া সংগঠন ‘স্কোয়াড’। এখানে জায়গা পায় ফিলিপিন্স। এর পর থেকে কোয়াডের অস্তিত্ব প্রশ্নের মুখে পড়ে। তবে ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরে চিনা আগ্রাসন ব্যাপক আকার নেওয়ায় ফের গুরুত্ব বাড়ে কোয়াডের। শুধু তাই নয়, গোটা এশিয়াতে ভারতই যে মুখ্য ভরকেন্দ্র হয়ে উঠেছে তা বেশ বুঝতে পারছে আমেরিকা। তাই ক্ষমতায় আসার প্রথম দিন থেকে ভারকে প্রাধান্য দিয়ে তা স্পষ্ট করে দিলেন ট্রাম্প।