shono
Advertisement

ধর্মীয় প্রথাতে রুদ্ধ নারীত্ব-বাদ

যেখানে আরাধ্যাই নারীশক্তি, সেখানে নারীদের কীভাবে বাদ রাখা যায় গোটা প্রক্রিয়া থেকে? The post ধর্মীয় প্রথাতে রুদ্ধ নারীত্ব-বাদ appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 05:21 PM Nov 04, 2016Updated: 02:41 PM Jul 13, 2018

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দক্ষিণ কিংবা পশ্চিমের রাজ্যগুলির থেকে পূর্ব-ভারতকে বরাবরই এগিয়ে থাকা বা আধুনিক হিসাবে গণ্য করা হয়৷ দেশের পশ্চিম প্রান্ত বা দক্ষিণ প্রান্তের রাজ্যগুলির তুলনায় পূর্ব-ভারতের রাজ্যগুলি অনেকটাই সংস্কারমুক্ত ও স্বাতন্ত্রচিত্ত৷ ভারতে রেনেসাঁ শুরু হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ থেকেই৷ আর উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রধানত মাতৃতান্ত্রিক সমাজ যে অনেক অঞ্চলের থেকেই সামাজিকভাবে এগিয়ে রয়েছে তা বলাই বাহুল্য৷ কিন্তু সেই পশ্চিমবঙ্গের একটি খণ্ডচিত্র এই ভাবনাকে নাড়িয়ে দেওয়ার জোগাড় করেছে৷

Advertisement

সাম্প্রতিক দীপাবলির মরশুমে দক্ষিণ কলকাতার একটি পুজোমণ্ডপের বাইরে লিখিত নির্দেশিকা টাঙিয়ে দেওয়া হয় যে, কোনও মহিলা যেন মণ্ডপে প্রবেশ না করেন৷ সাধারণভাবে বারোয়ারি পুজোর ক্ষেত্রেও পাড়ার মহিলারাই পুজোর আয়োজন করে থাকেন৷ উপবাস বা পুজোর আচরণেও তাঁদের আগ্রহও অনেকটাই বেশি থাকে৷ কিন্তু এই মণ্ডপে তাঁদের ব্রাত্যই রাখা হয়৷ কারণ হিসাবে যা দেখানো হয়, তা পশ্চিম কিংবা দক্ষিণ-ভারতে নিছক অপ্রতুল নয়৷ রজঃস্বলা মহিলাদের পুজো থেকে দূরে রাখতেই এমন নির্দেশিকা বলে জানিয়েছে পুজো কমিটি৷ কারণ, তারা দেবী ছিন্নমস্তার আরাধনা করছে যা অতি জটিল প্রক্রিয়া৷ পাছে নিয়মে ত্রূটি ঘটে, তাই শুধুমাত্র শিশুকন্যাদের  মন্দিরে প্রবেশের অনুমতি দিয়েই ক্ষান্ত থেকেছে তারা৷

সাম্প্রতিক অতীতে গত বছরখানেকের মধ্যে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে মন্দির বা দেবস্থানে প্রবেশের অধিকার নিয়ে নানা স্থানে লড়াই মাথাচাড়া দেয়৷ প্রধানত মহিলা কমিশন ও মানবাধিকার কমিশনগুলিই নেতৃত্ব দেয় এই ধরনের আন্দোলনের ক্ষেত্রে৷ চাপের মুখে এবং আদালতের হস্তক্ষেপে বিষয়টি অনেক জায়গাতেই সাম্যের পথে হেঁটেছে৷ এর মধ্যে যে সমস্ত নাম আলোচনায় সবথেকে বেশি উঠে এসেছে সেগুলি হল–কেরলের পেরিয়ারের সবরিমালা মন্দির, মুম্বইয়ের হাজি আলি দরগা, মহারাষ্ট্রের শনি শিংনাপুর মন্দির ইত্যাদি৷ এর সবক’টিতেই প্রধানত ঋতুকালে মহিলাদের প্রবেশ আটকাতে এই বিধান নিশ্চিত করা হয়৷ সবরিমালায় তো আবার নিষেধের কারণ হিসাবে বলা হয়, মহিলা প্রবেশে মন্দিরের আরাধ্য দেবতার মনোসংযোগ ভঙ্গ হতে পারে! রাজস্থানের বহু মন্দিরে এমন নিষেধাজ্ঞা না থাকলেও নির্দেশিকা রয়েছে, ঋতুকালে কোনও মহিলা যেন কোনওভাবেই প্রবেশ না করেন৷ সে-ক্ষেত্রে অবশ্য মহিলাদের সদ্বুদ্ধির উপরই ভরসা রেখেছে কর্তৃপক্ষ, যে তাঁরা নির্দেশ মেনে চলবেন৷

কিন্তু সম্প্রতি শীর্ষ আদালত কিংবা উচ্চ আদালতের হস্তক্ষেপে তা রদ হয়েছে৷ সবক্ষেত্রেই যাতে মহিলারা বিনা বাধায় দেবস্থানে প্রবেশ করতে পারেন তা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত৷ মুম্বইয়ের হাজি আলি দরগাতে মূল সমাধিস্থলেও মহিলাদের প্রবেশে সম্প্রতি অনুমতি মিলেছে৷ শনি শিংনাপুরের ক্ষেত্রেও তাই৷ সেখানে হঠাৎ আলোকপ্রাপ্ত পশ্চিমবঙ্গে এমনধারা নিষেধাজ্ঞা কেন? অন্যান্য বহু ক্ষেত্রেই বাংলায় গোঁড়ামি তেমন নেই৷ খুচরো কিছু নীতিপুলিশকে বাদ দিলে সামাজিক চোখরাঙানিও কম৷ তাহলে রেনেসাঁ বঙ্গে এমন আজব ফতোয়া কেন? যেখানে আরাধ্যাই নারীশক্তি, সেখানে নারীদের কীভাবে বাদ রাখা যায়  গোটা প্রক্রিয়া থেকে?

The post ধর্মীয় প্রথাতে রুদ্ধ নারীত্ব-বাদ appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement