shono
Advertisement

কী উপায়ে দূর হবে পুরুষ বন্ধ্যাত্ব? আশার আলো দেখালেন বাংলার ৫ গবেষক

আইসিএমআর সূত্রে খবর, দ্রুত মানবদেহে পরীক্ষামূলক ট্রায়াল হতে চলেছে।
Posted: 10:20 AM May 03, 2022Updated: 04:44 PM May 03, 2022

ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: দেশের গবেষক মহলে শোরগোল ফেলে দিয়েছেন কলকাতার পাঁচ তরুণ গবেষক। দীর্ঘ গবেষণায় চিহ্নিত করেছেন পুরুষ বন্ধ্যাত্বের মূল কারণ। একই সঙ্গে বাতলেছেন মুক্তির উপায়। যার মূল কথা হল, বন্ধ্যাত্বের শিকার হলেও অদূর ভবিষ্যতে মুক্তি পেতে পারে কোনও পুরুষ। এবং সেই জন্য অন্য়ের থেকে শুক্রাণু ধার করতে হবে না।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিতত্ত্বের অধ্যাপক সুজয় ঘোষ ও তাঁর তিন সহযোগী ও দুই চিকিৎসকের গবেষণাপত্র নিয়ে ব্যাপক আলোচনা কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের সংস্থা ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ। শুরু হয়েছে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা।

Advertisement

আইসিএমআর সূত্রে খবর, দ্রুত মানবদেহে পরীক্ষামূলক ট্রায়াল হতে চলেছে। অধ্যাপক সুজয় ঘোষ প্রমাণ করে ছেড়েছেন যে পুরুষের বন্ধ্যাত্বর (ইনফার্টলিটি) জন্য দায়ী TAF7 নামে একটি বিশেষ প্রোটিন। এই প্রোটিন তৈরি হয় যে জিনের মধ্যে, তাও TAF7 হিসাবে চিহ্নিত। অধ্যাপক সুজয় ঘোষের কথায়, “ঘটনা হল মানুষ ও ইঁদুরের প্রজনন প্রক্রিয়ার মধ্যে ব্যাপক সাদৃশ্য। আমরা পরীক্ষা করে দেখেছি জিন এককভাবে কাজ করতে পারে না। কাজ করে জিনের মধ্যে থাকা প্রোটিন। এখন যে সব ইঁদুরের মধ্যে TAF7 প্রোটিন নেই, তাদের অণ্ডকোষের মধ্যে যদি এই প্রোটিন ইঞ্জেকশন করা হয় তবে সেগুলি প্রজননক্ষম হয়ে ওঠে। আর এটাই হল পরীক্ষার মূল চাবিকাঠি।” সুজয় ঘোষ ও তাঁর সহযোগীরা এই পদ্ধতির নাম দিয়েছেন ‘মাউস মডেল’। এখন পাল্টা প্রশ্ন উঠতেই পারে, কতদিন এমনভাবে ধার করে প্রোটিন নিয়ে একজন মানুষ নিজেকে প্রজননক্ষম করে তুলবেন? সুজয়বাবুর কথায়, “দেখুন এটা অনেকটা পুরুষের প্রস্টেট গ্ল্যান্ডের মতো। সন্তান উৎপাদনে প্রস্টেট গ্ল্যান্ডের ভূমিকা আছে। এটা স্বীকৃত। কিন্তু বয়স হলে সেই প্রস্টেট বাদ দিতে হয়। এখানেও তাই। সন্তান উৎপাদনের জন্য দরকার TAF7 জিনের মধ্যে থাকা TAF7 প্রোটিন। আর জিন হচ্ছে ডিএনএ—র একটা অংশ। জিন কিন্তু নিজে কাজ করতে পারে না। এই প্রোটিন সেই ঘাটতি পুষিয়ে দেবে। অর্থাৎ সন্তান উৎপাদনে যে শুক্রাণুর দরকার হয় তা তৈরি করবে। অন্যের থেকে শুক্রাণু ধার করতে হবে না।

[আরও পড়ুন: হিটস্ট্রোক হলে কী করবেন? তাপপ্রবাহেও কীভাবে সুস্থ থাকবেন? পরামর্শ দিল নবান্ন]

আমাদের শরীরে যত জিন আছে তারা প্রোটিন তৈরি করে। এই ক্ষেত্রে TAF7 প্রোটিন সন্তান উৎপাদনে সক্ষম মানবদেহ থেকে সংগ্রহ করে ইঞ্জেকশন করা হবে। বেশ কয়েকবার এমন ইঞ্জেকশন দেওয়ার পরই ওই ব্যক্তি সক্ষম হবেন। এবং সন্তানের জন্মের পর আর কী দরকার এই ইঞ্জেকশন? পাল্টা প্রশ্ন করেছেন সুজয় ঘোষ।

পুরুষ বন্ধ্যাত্বের কারণ খুঁজতে এই শহরের প্রায় ১,২০০ জনকে বেছে নেয় এই গবেষকদলটি। যাদের ২০ শতাংশের মধ্যে ওয়াই ক্রোমোজম আংশিক ভাঙা। এখানে মনে রাখতে হবে ওয়াই ক্রোমোজোম পিতা হওয়ার প্রথম ও প্রধান শর্ত। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সমীক্ষায় দেখা গেছে ৫০ শতাংশ পুরুষ বন্ধ্যাত্বের শিকার। কিন্তু পিতৃতান্ত্রিক সমাজ যুগযুগ ধরে বিষয়টি প্রথম থেকে অস্বীকার করেছে। বলা হয় ‘মেয়েটি বন্ধ্যা’! ভুলেও বলে না ‘লোকটা বন্ধ্যা’!

[আরও পড়ুন: ফলেই সুফল! গরম থেকে রেহাই পেতে কী কী ফল খাবেন, পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement