সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক হজরত মহম্মদকে অসম্মানিত করেছে ফ্রান্স। এতে অপমানিত হয়েছেন এদেশের মুসলিমরাও। অবিলম্বে ফ্রান্সের সমালোচনা করুক ভারত। রাষ্ট্রসংঘে ফ্রান্সের বিপক্ষে দাঁড়াক নয়াদিল্লি। কেন্দ্রীয় সরকারকে এমনই আবেদন করল দেশের অন্যতম প্রভাবশালী মুসলিম সংগঠন দারুল উলুম দেওবন্দ।
ইসলামিক মৌলবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোয় সম্প্রতি মুসলিম বিশ্বের রোষে পড়েছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ (Emmanuel Macron)। শালীনতার সীমা ছাড়িয়ে ফরাসি প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত স্তরে অত্যন্ত কুরুচিকর ভাষায় আক্রমণ শানিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেসেপ তায়েপ এরদোগান-সহ অনেকেই। এহেন পরিস্থিতিতে ম্যাক্রোঁর সমর্থনে এগিয়ে আসে ভারত। তাঁকে সরাসরি সমর্থন জানায় নয়াদিল্লি। তারপরই দারুল উলুম দেওবন্দের কাছ থেকে এই আবেদন এল।
[আরও পড়ুন: সৌদি আরবের নতুন মুদ্রায় ছাপা ভারতের মানচিত্র থেকে বাদ কাশ্মীর! ক্ষুব্ধ বিদেশমন্ত্রক]
এই প্রসঙ্গে দারুল উলুম দেওবন্দের ভাইস চ্যান্সেলর বলেন, ‘‘OIC’র সমস্ত সদস্য দেশের উচিত এই সময় একত্রিত হয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো। ভারত সরকারেরও উচিত এদেশে বসবাসকারী মুসলিমদের কথা ভেবে এগিয়ে এসে ফ্রান্সের সমালোচনা করা।’’ সংস্থার মুখপাত্র আশরাফ উসমানি বলেন, ‘‘ফ্রান্সে মহম্মদকে যেভাবে অসম্মানিত করা হয়েছে, তা খুবই দুঃখজনক। শুধু ভারতের নয়, গোটা বিশ্বের মুসলিমরা এতে অপমানিত হয়েছেন। ভারত সরকারেরও নির্দিষ্ট রীতি মেনে চলা উচিত।’’
উল্লেখ্য, গত অক্টোবরের ১৬ তারিখ প্যারিসের (Paris) বুকে এক শিক্ষককে মাথা কেটে খুন করে এক চেচেন মুসলিম জঙ্গি। তাঁর ‘অপরাধ’, পড়ুয়াদের বাক স্বাধীনতার পাঠ দিতে হজরত মহম্মদের একটি ব্যঙ্গচিত্র দেখিয়েছিলেন তিনি। ওই ঘটনাকে ‘ইসলামিক মৌলবাদের’ স্বরূপ বলে তোপ দেগেছিলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ওই শিক্ষককে ‘নায়ক’ বলে মন্তব্য করেন। হামলার ওই ঘটনার প্রেক্ষিতে ‘ইসলামিক বিচ্ছিন্নতাবাদ’ ও ‘ইসলামিক সন্ত্রাসবাদী হামলা’র মতো শব্দ ব্যবহার করেন তিনি। তারপর থেকেই আসরে নেমে পরে মুসলিম দেশগুলি। ফরাসি প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে ‘মুসলিম ভীতি’ জাগিয়ে তোলার অভিযোগ এনে তুমুল হইচই শুরু করেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেসেপ তায়েপ এরদোগান।
[আরও পড়ুন: শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়েই বিপদে ফ্রান্স, রেড ক্রসের নথি নিয়ে তিউনিশিয়া থেকে ঢুকেছিল জঙ্গি]
এরপরই সম্প্রতি একটি বিবৃতি জারি করে ভারতের (India) বিদেশমন্ত্রক। সেখানে ফরাসি প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত স্তরে আক্রমণের নিন্দা করে নয়াদিল্লি। এহেন কাজ আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও নীতির পরিপন্থী। শুধু তাই নয়, ফরাসি শিক্ষকের উপর জঙ্গি হানার ঘটনটিরও তীব্র নিন্দা করে ভারত। বিদেশমন্ত্রক সাফ জানায়, কোনও পরিস্থিতিতেই সন্ত্রাসবাদী হামলার সপক্ষে যুক্তি খোঁজ উচিত নয়। এদিকে, বিদেশমন্ত্রকের বিবৃতির পর ভারতকে ধন্যবাদ জানান নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত ফরাসি রাষ্ট্রদূত ইমানুয়েল লেনাইন। এক বিবৃতিতে ফরাসি দূতাবাস বলে, “সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ভারত ও ফ্রান্স সবসময় একে অপরের উপর বিশ্বাস রেখে পদক্ষেপ করতে পারবে।”