সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: উত্তরপ্রদেশের হাথরসের সৎসঙ্গে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। শেষ পাওয়া খবরে এই দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১৬। মৃতদের বেশিরভাগই শিশু ও মহিলা। যে ধর্মগুরুর ডাকে এই সৎসঙ্গ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল সেই সুরজ পাল ওরফে ভোলে বাবার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। পাশাপাশি, এই ঘটনায় কড়া পদক্ষেপের বার্তা দিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। মৃতদের পরিবার পিছু ২ লক্ষ টাকা এবং আহতদের চিকিৎসার জন্য মাথাপিছু ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণের ঘোষণা করেছে তিনি।
এদিকে ভয়াবহ এই দুর্ঘটনার জন্য সৎসঙ্গের আয়োজক কমিটিকেই দায়ী করছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। তাঁদের একাংশের দাবি, সৎসঙ্গের জন্য যে প্যান্ডেল বাঁধা হয়েছিল, তা ঘেরা ছিল। সেখানে কোনও পাখার ব্যবস্থা ছিল না। প্রচণ্ড গরমের কারণে প্যান্ডেলের ভেতর হাঁসফাঁস করছিলেন ভক্তরা। অনুষ্ঠান শেষের পর ভক্তরা হুড়মুড়িয়ে সেখান থেকে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তবে বেরনোর জন্য যে গেটের ব্যবস্থা করা হয়েছিল সেটিও ছিল অত্যন্ত সংকীর্ণ। ফলে বের হওয়ার সময় আগে যাওয়ার জন্য হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। এই অবস্থায় পড়ে যান অনেকেই বাকিরা তাঁদের উপর দিয়ে বাইরে বের হওয়ার চেষ্টা করে।
[আরও পড়ুন: হাথরাস প্রথম নয়, ধর্মীয়স্থানে পদপিষ্ট হয়ে মর্মান্তিক মৃত্যুমিছিল আগেও দেখেছে দেশ]
এছাড়া সংবাদমাধ্যমকে এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, "হাজার হাজার মানুষের জনসমাগম হয়েছিল। তবে প্যান্ডেলের মধ্যে কিছু হয়নি। রাস্তায় যে মেন গেট তৈরি হয়েছিল, সেখান দিয়ে বেরোনোর সময় অনেকে রাস্তার ডান দিকে যাওয়ার চেষ্টা করেন, আর অনেকে বাঁ দিকে যাওয়ার চেষ্টা করেন। সেই সময়ই ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। যাঁরা মাটিতে পড়ে গিয়েছিলেন, তাঁদের উপর দিয়েই অনেকে চলে যান।"
[আরও পড়ুন: শপথ নিতে সংসদে যাবেন ‘টেরর ফান্ডিং’য়ে অভিযুক্ত রশিদ, শর্তসাপেক্ষে প্যারোল দিল আদালত]
গোটা ঘটনায় ধর্মগুরু সুরজ পাল ওরফে ভোলে বাবার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। মর্মান্তিক এই ঘটনায় কড়া পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ জানিয়েছেন, যাঁদের গাফিলতির জেরে মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনা তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ঘটনার জন্য উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু এবং বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেছেন এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্যের জন্য প্রার্থনা করছেন। মৃতদের পরিবার পিছু ২ লক্ষ টাকা এবং আহতদের চিকিৎসার জন্য মাথাপিছু ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণের ঘোষণা করেছে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী।