নব্যেন্দু হাজরা: ১৫ বছরের পুরনো বেসরকারি যান বাতিল প্রক্রিয়া আগেই শুরু হয়েছে। এবার পনেরো বছরের পুরনো সরকারি গাড়িও বাতিল করতে চলেছে সরকার। ইতিমধ্যেই এবিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। নম্বর ধরে ধরে গাড়ি চিহ্নিতকরণ হয়ে গিয়েছে। পরিবহণ দপ্তর সূত্রে খবর, প্রায় ১১ হাজার সরকারি গাড়ি বাতিল করা হবে। যার মধ্যে রয়েছে শ’পাঁচেক পুরনো সরকারি বাস। যার বেশিরভাগই গ্যারেজেই পড়ে আছে। বাকি গাড়িগুলোর অধিকাংশই সরকারি অফিসারদের জন্য বরাদ্দ। ফলে এই বিপুল সংখ্যক গাড়ি বাতিল হলে আমলারা চড়বেন কীসে! তা নিয়েই শুরু হয়েছে জল্পনা।
পরিবহণ দপ্তরের কর্তারা বলছেন, এমনিতেই আধিকারিকদের জন্য নতুন গাড়ি কেনা বন্ধ তাও বহু বছর হয়ে গিয়েছে। ভাড়ায় গাড়ি নেওয়া হয়। এখনও কয়েক হাজার ভাড়ার গাড়ি চলছে। পুরনো গাড়ি বাতিল হলে সেক্ষেত্রে ভাড়ার গাড়িই নিতে হবে। কিন্তু তার জন্যও অর্থ দপ্তরের ছাড়পত্রের প্রয়োজন। সেই প্রক্রিয়াই শুরু হচ্ছে। নিয়ম মেনে এই বুড়ো গাড়িগুলোকে স্ক্র্যাপ করে দেওয়া হবে। কোনও এজেন্সিকে দিয়ে দেওয়া হয় সেক্ষেত্রে। একইসঙ্গে পরিবহণ দপ্তরের খাতা থেকেও মুছে ফেলা হবে এর অস্তিত্ব।
[আরও পড়ুন: ৭-১৩ মে’র Horoscope: সুখবর পেতে পারেন এই রাশির জাতকরা, কী রয়েছে আপনার ভাগ্যে?]
সরকারি আমলা, আধিকারিকদের যাতায়াতের জন্য মূলত সরকারি এই গাড়িগুলো ব্যবহার করা হয়। কিন্তু সেগুলোর একটা বড় অংশই বাতিলের পথে। মোট ২০ হাজার মতো সরকারের গাড়ি রয়েছে। তারমধ্যে ৫০ শতাংশ গাড়িই স্ক্র্যাপ করে দেওয়া হবে। নবান্নের এক শীর্ষ কর্তার কথায়, গাড়ি অপব্যবহার নিয়েও একাধিক বার অভিযোগ উঠেছে। অফিসের যাতায়াত বাদ দিয়ে অনেকেই ব্যক্তিগত কাজেও সরকারি গাড়ি ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ। অনেকক্ষেত্রে যাদের গাড়ি পাওয়ার কথা নয়, তাঁরাও এই সুবিধা নেন। গাড়ি বাতিলের জেরে এসবই স্ক্যানারে উঠে আসবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে পরিবহণ দপ্তরের কর্তারা জানাচ্ছেন, এক ধাক্কাতেই সব গাড়ি বাতিল হবে তেমনটা নয়। হবে ধাপে ধাপে। নাহলে আমলাদের গাড়িতেও টান পড়বে। সরকারি গাড়ি ব্যবহারে এর আগেও উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য সরকার। কলকাতা তো বটেই, জেলা থেকেও বহু অভিযোগ এসেছে নবান্নে। সেখানে ব্যক্তিগত কাজে গাড়ি ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে খরচ যে পরিমাণ বেড়েছে, তাতে কড়া পদক্ষেপ অবশ্যম্ভাবী হয়ে পড়েছে বলেই মত পরিবহণ দপ্তরের এক আধিকারিকের।
সরকারি প্রশাসনে গাড়ির খরচে রাশ টানার উদ্যোগ নতুন কোনও বিষয় নয়। এর আগেই এ বিষয়ে নীতি তৈরি হয়েছিল। কিন্তু তা কখনওই কার্যকর হয়নি। সেই সময় নিয়ম করা হয়েছিল, যুগ্ম সচিব ও তাঁদের নিচু তলার অফিসারদের জন্য পুলকারের বন্দোবস্ত করা হবে। সবাইকে আলাদা আলাদা গাড়ি না দিয়ে বেসরকারি সংস্থায় প্রচলিত নিয়মের মতো একটি গাড়িতে এক দল কর্মীকে অফিসে আনা হবে এবং বাড়িতে ছেড়ে দিয়ে আসা হবে। কিন্তু সেই নিয়ম থেকে গিয়েছে কাগজ-কলমেই। এ বার সেই নিয়ম কার্যকর করা হয় কিনা সেটাই দেখার।