রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: দেশপ্রেমের আবেগকে কাজে লাগিয়ে এবার নারী দিবসের কর্মসূচিতেও শহিদ পরিবারগুলিকে শামিল করতে চাইল রাজ্য বিজেপি। শুক্রবার দলের মহিলা মোর্চা সভানেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে রাজ্য বিজেপি দপ্তর থেকে শ্যামবাজার পর্যন্ত মিছিলের পর পুলওয়ামার শহিদ পরিবারকে সম্মান জানানোর কথা ছিল মহাজাতি সদনে। সেই মর্মেই তাঁদের কাছে পৌঁছেছিল আমন্ত্রণ। কিন্তু মিছিল শেষে দেখা গেল, মহাজাতি সদনে কোনও অনুষ্ঠান নেই। পরিবর্তে বিজেপি রাজ্য দপ্তরেই পরিবারের সদস্যদের সম্মান জানানো হয়েছে।
[দেশের অভ্যন্তরীণ ফাইল চুরি যায়নি তো? নারী দিবসের কর্মসূচিতে প্রশ্ন মমতার]
৮ মার্চ, আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষ্যে বিজেপির ঘোষিত কর্মসূচি ছিল পদযাত্রা। পূর্বঘোষণা অনুযায়ী শুক্রবার দুপুর দুটো নাগাদ মুরলীধর সেন লেনের পার্টি অফিস থেকে শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড় পর্যন্ত মিছিলে হাঁটলেন মহিলা মোর্চা সভানেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়, সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া আইপিএস ভারতী ঘোষ-সহ মহিলা মোর্চার সদস্যরা। মিছিলে নেতৃত্ব দেন লকেট চট্টোপাধ্যায়। নারী দিবসের এই কর্মসূচিতে বিজেপির তরফে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল দুই শহিদ পরিবারকে। পুলওয়ামায় শহিদ হাওড়ার জওয়ান বাবলু সাঁতরা এবং জানুয়ারিতে জম্মুতে টহলরত অবস্থায় শহিদ বিনয়প্রসাদ মিত্রের পরিবারকে সম্মান জানানোর জন্য তাঁদের ডাকা হয়েছিল।আমন্ত্রণ রক্ষা করতে বাবলু সাঁতরার মা বনমালা দেবী, দিদি ভগবতী বিশ্বাস কলকাতায় আসেন। হাওড়ার ডবসন রোডের শহিদ বিনয়প্রসাদ মিত্রের স্ত্রী বিদ্যা ছোট্ট মেয়ে বন্যাকে নিয়ে পৌঁছন নির্দিষ্ট জায়গায়। কথা ছিল, শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড়ে মিছিল শেষে মহাজাতি সদনের এক অনুষ্ঠানে তাঁদের হাতে সম্মান তুলে দেওয়া হবে।
[নারীদের সম্মান জানাতে ‘রেসপেক্ট উইমেন’ শুরু করল লালবাজার]
তবে দুই পরিবারের তরফেই স্পষ্ট জানানো হয়, তাঁরা কোনওরকম রাজনৈতিক দলের সমর্থক নন। বিজেপির মিছিলে পা মেলানোর জন্য আসেননি। শহিদ পরিবারকে সম্মান জানানোর আমন্ত্রণপত্র পৌঁছেছিল তাঁদের কাছে। তাতে সাড়া দিয়েই পরিবারের সদস্যরা হাজির হয়েছেন। কিন্তু মিছিলে হাঁটতে নারাজ দুই পরিবারের সদস্যরাই। তাই বিজেপির সদর কার্যালয়েই তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয়। মানপত্র এবং শাল দিয়ে সম্মান জানানোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখতে হয় বিজেপির শহিদ সম্মান কর্মসূচি। এতে রাজনৈতিক মহলের একাংশের মত, শহিদ জওয়ানদের পরিবারকে দলীয় কর্মসূচিতে শামিল করার উদ্যোগ নিয়ে আসলে দেশপ্রেমের ভাবমূর্তিই তুলে ধরতে চেয়েছিল রাজ্য বিজেপি। তবে শহিদ পরিবারের সদস্যরা নিজেরা রাজনীতি থেকে দূরত্ব বজায় রাখার বার্তা দেওয়ায় তাঁদের সেই পরিকল্পনা খুব একটা সফল হয়নি।