shono
Advertisement

বাবার ইউনিফর্ম পরেই শহিদ জওয়ানকে শেষ স্যালুট ২ বছরের ছেলের

বাবা যে শহিদ হয়ে গিয়েছে তা বুঝে ওঠার বয়সই হয়নি তার। The post বাবার ইউনিফর্ম পরেই শহিদ জওয়ানকে শেষ স্যালুট ২ বছরের ছেলের appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 02:43 PM Feb 17, 2019Updated: 02:43 PM Feb 17, 2019

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চারিদিক অসংখ্য মানুষের কালো মাথা আর সামনে দাঁড়িয়ে দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী। মায়ের কোলে চড়ে এইসব দেখতে দেখতে কেমন যেন হয়ে গিয়েছিল দু’বছরের ছোট্ট শিবামুনিয়ান। আসলে দেশের মানুষকে নিরাপত্তা দিতে গিয়ে তার বাবা যে শহিদ হয়ে গিয়েছে তা বুঝে ওঠার বয়সই হয়নি তার। বয়স হয়নি বাড়িতে আসা প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারমণকে চেনারও।

Advertisement

তাই সবাই যখন তামিলনাড়ুর আরিয়ালুর জেলার বাসিন্দা পুলওয়ামায় শহিদ হওয়া সিআরপিএফ জওয়ান সি শিবাচন্দরনের বাড়িতে এসে তাঁর পরিবারকে সমবেদনা জানাচ্ছেন। তখন মা গান্ধীমতীর কোলে চড়ে সবার দিকে অবাক নয়নে তাকিয়েছিল সে। হয়তো বোঝার চেষ্টা করছিল, সবার চোখে জল কেন? কেন সবাই মার সঙ্গে কথা বলার সময় তার মাথায় একবার করে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে? সবার কথা মতো তেরঙ্গা পতাকায় মোড়া বাবার কফিনে কেনই বা সে স্যালুট জানিয়ে চুমু খেল? ছবিতে দেখা বাবা কফিনের মধ্যে কেন শুয়ে আছে?

[‘শহিদের রক্ত বিফলে যাবে না’, প্রতিশোধের আগুনে ফুটছে ইস্টার্ন কম্যান্ড]

তবে শুধু ছোট্ট শিবামুনিয়ানই নয় চারিদিকের পরিস্থিতি দেখে অবুঝ নয়নে তাকিয়ে ছিলেন তার মা গান্ধীমতীও। আসলে কোলে থাকা শিবা আর গর্ভে থাকা আরেক সন্তানকে নিয়ে আগামীদিন কী করে কাটাবেন তাই হয়তো ভাবছিলেন তিনি। ২০১০ সালে পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থা ফেরাতে স্থানীয় স্কুলের চাকরি ছেড়ে সিআরপিএফের চাকরি নিয়েছিলেন বি এড পাশ করা শিবাচন্দরন। তারপর থেকে সবকিছু বেশ ভালই চলছিল। পুরনো মাটির বাড়ির জায়গায় বানিয়েছিলেন পাকাবাড়ি। ডিউটি করার ফাঁকে মাঝে মাঝে বাড়ি এসে স্ত্রী ও পরিবারের বাকি সদস্যদের নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরারও অভ্যেস ছিল তাঁর। কয়েকদিন আগেই যেমন ছুটিতে এসে সবরীমালা মন্দিরে গিয়েছিলেন পুজো দিতে। তারপর গত শনিবার কাজে যোগ দিতে ফিরে যান কাশ্মীরে। আর ঠিক এক সপ্তাহ পর বাড়ি ফিরল তেরঙ্গায় মোড়া তাঁর কফিনবন্দি দেহ। তারপর গতকাল গ্রামের মাটিতেই দেশের জন্য আত্মবলিদান দেওয়া ওই সিআরপিএফ জওয়ানের শেষকৃত্য সম্পন্ন হল পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায়। পাশাপাশি তামিলনাড়ু সরকারের পক্ষ থেকে তাঁর পরিবারকে ২০ লাখ টাকা এবং পরিবারের একজনকে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়।

[স্থানীয় জেহাদিদের বাড়বাড়ন্তেই রক্তাক্ত উপত্যকা, বলছে পুলিশের পরিসংখ্যান]

এতকিছুর পরেও ব্যাপারটা বোধগম্য হচ্ছে না শিবাচন্দরনের বাবা চিন্নায়নের। ছেলে যে আর বাড়ি ফিরবে না সেকথা বিশ্বাসই করছেন না তিনি। দু’বছর আগে চেন্নাইয়ে কাজ করার সময় দুর্ঘটনায় মারা যায় তাঁর ছোট ছেলে। সেই শোকই এখনও সামলে উঠতে পারেননি। আর তার মাঝেই ফের সন্তান হারানোর শোক পেয়ে কেমন যেন ঘোরের মধ্যে চলে গিয়েছেন। নাতির মতো তিনিও ছেলের পুরনো ইউনিফর্ম পরে বাড়ির আনাচে কানাচে খুঁজে বেড়াচ্ছেন ভাল সময়ের স্মৃতি। আর বাড়ির এককোণে বসে তখন একা একা চোখের জল ফেলছেন শহিদের মূক-বধির বোন জয়াচিত্রা। এক আত্মীয়ের কথায়, এতদিন ওর সব প্রয়োজন মেটাত শিবাচন্দরন। এখন কে দেখবে ওকে?

[কথা রেখে ফাল্গুনেই ফিরল নদিয়ার সুদীপ, তবে শহিদ হয়ে]

The post বাবার ইউনিফর্ম পরেই শহিদ জওয়ানকে শেষ স্যালুট ২ বছরের ছেলের appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement