shono
Advertisement

‘মানবিক সরকার’, সুপারিশপত্র পেয়ে আপ্লুত কর্মশিক্ষা ও শারীরশিক্ষার চাকরিপ্রার্থীরা

মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন সকলে।
Posted: 11:29 AM Nov 11, 2022Updated: 11:34 AM Nov 11, 2022

স্টাফ রিপোর্টার: ঢুকেছিলেন মুখে হাসি নিয়ে। নিয়োগের সুপারিশপত্র হাতে নিয়ে তাঁদের অধিকাংশই বেরিয়ে এলেন চোখে জল নিয়ে। কয়েকজনকে তো অঝোরে কাঁদতে দেখা গেল। কষ্টে নয়। স্কুলে শিক্ষকতা করার স্বপ্নপূরণের খুশিতে, আবেগে ভেসে কাঁদলেন কর্মশিক্ষা ও শারীরশিক্ষার প্রার্থীরা। মুখ্যমন্ত্রী, রাজ্য সরকার, শিক্ষামন্ত্রী, শিক্ষা দপ্তর-সহ স্বপ্নপূরণে সাহায্যকারী সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে তাঁরা বললেন, ‘মানবিক সরকার।’

Advertisement

সল্টলেকে স্কুল সার্ভিস কমিশনের নতুন দপ্তরে স্কুলে উচ্চপ্রাথমিক স্তরে কর্মশিক্ষা ও শারীরশিক্ষার শিক্ষক নিয়োগের অপেক্ষমান তালিকায় থাকা সকল প্রার্থীকে নিয়োগের সুপারিশপত্র দিতে কাউন্সেলিং প্রক্রিয়া শুরু হল বৃহস্পতিবার। প্রথমদিনে কর্মশিক্ষা বিষয়ের ২৭৮ জন পুরুষ প্রার্থীকে ডেকেছিল এসএসসি। এদিন সকাল দশটা থেকেই হাজির হন তাঁরা। তারপর ডাক পেয়ে একে একে ঢুকে যান ভিতরে। প্রায় প্রত্যেকের মুখেই ছিল হাসি। ভিতরে ঢুকে বদলে যায় চিত্রটা। পছন্দসই স্কুল বেছে নেওয়ার পর এসএসসি-র চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদারের হাত থেকে নিয়োগের সুপারিশপত্র নেওয়ার সময় অনেকের চোখ থেকেই জল গড়াল। মুখের হাসিটা যদিও মিলিয়ে যায়নি। তবে, ডাক পাওয়া ২৭৮ জনের মধ্যে ২৫০ জন এদিন সুপারিশপত্র নেন। স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার বলেন, ‘‘২৭ জন অনুপস্থিত ছিলেন এবং একজন সুপারিশপত্র নিতে অস্বীকার করেছেন। বাকি ২৫০ জনের হাতে আমরা সুপারিশপত্র তুলে দিয়েছি।’’

[আরও পড়ুন: দাপট বাড়ছে ডেঙ্গুর, ‘দুয়ারে সরকার’ ক্যাম্প থেকে সচেতনতা প্রচারের নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর]

এদিন নিয়োগের সুপারিশপত্র পাওয়া কর্মশিক্ষার প্রার্থী এনামুল মিদ্যা বলেন, ‘‘আমরা খুবই আনন্দিত, খুশি। বেকারত্বের জীবন থেকে মুক্তি পেলাম। পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। জানতাম পাব, কিন্তু সুপারিশপত্র হাতে পাওয়ার পর ভিতরে যে অনুভূতি হল তা মুখে বলে বোঝানো যাবে না। আনন্দে, আবেগে চোখে জল এসে গিয়েছিল।’’ দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাটের এনামুল বাড়ির কাছেই স্কুল পেয়েছেন। বহরমপুরের মিলন মণ্ডলের কথায়, ‘‘খুবই আনন্দিত। এতটাই যে চোখ থেকে জল বেরিয়ে এসেছিল। নিয়োগ পাব সরকারের তরফে সেই নিশ্চয়তাটা আগেই পেয়েছিলাম। একটা ভয় ছিল। সত্যি বলতে সুপারিশপত্র হাতে পেয়েও মাঝে মাঝে অবাক লাগছে। মনে হচ্ছে, পেয়েছি তো?’’

এদিন সুপারিশপত্র পেয়েছেন এবং আগামীদিনে সুপারিশপত্র পাবেন, এমন সকল প্রার্থীই সরকার, মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ। মিলন বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী আমাদের জন্য যা করেছেন, তার জন্য তাঁকে ধন্যবাদ। কুণাল ঘোষও আমাদের জন্য যথেষ্ট সাহায্য করেছেন। আন্দোলন চলাকালীন অনেককেই পাশে পেয়েছি। তার মধ্যে আমাদের কাছে কুণালবাবু একটু অন্যরকম। উনি সবসময় আমাদের পাশে থেকেছেন।’’ আর এক প্রার্থী বলেন, ‘‘মানবিকভাবে আমাদের দিকটা দেখার জন্য রাজ্য সরকারকে অসংখ্য ধন্যবাদ।’’ কর্মশিক্ষা ও শারীরশিক্ষার প্রার্থীদের আন্দোলনের নেতৃস্থানীয় সাফিয়া খাতুনের কথায়, ‘‘এতদিনের লড়াইয়ের সফল হল। আমরা যে যোগ্য মেধাতালিকাভুক্ত প্রার্থী তা মেনে নেওয়ার জন্য রাজ্য সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই কুণাল ঘোষকে।’’

সকল অপেক্ষমাণ প্রার্থীর নিয়োগের দাবিতে দীর্ঘদিন আন্দোলন করেছিলেন কর্মশিক্ষা ও শারীরশিক্ষার প্রার্থীরা। তাঁদের দাবি মেনে নিয়ে রাজ্য সরকার তৈরি করেছিল ১৬০০ অতিরিক্ত শূন্যপদ। সেই শূ্ন্যপদগুলিতেই কর্মশিক্ষা ও শারীরশিক্ষার মোট ১৪০৪ জন অপেক্ষমাণ প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে কর্মশিক্ষার ৫৮১ জন এবং শারীরশিক্ষার ৮২৩ জন প্রার্থী রয়েছেন। আজ, শুক্রবার কর্মশিক্ষার ৩০৩ জন মহিলা প্রার্থীর কাউন্সেলিং হবে। ১২, ১৪ এবং ১৬ নভেম্বর হবে শারীরশিক্ষার প্রার্থীদের কাউন্সেলিং। এরপর নিয়োগকর্তা মধ্যশিক্ষা পর্ষদ নিয়োগপত্র দিলেই স্কুলে গিয়ে শিক্ষকতায় যোগ দেবেন এই প্রার্থীরা। সমাপ্তি ঘটবে পাঁচ বছরের অপেক্ষার।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement