ধীমান রায় , কাটোয়া: চার পরিযায়ী শ্রমিককে আটকে রেখে 'মুক্তিপণ' দাবি করা হয়েছিল। পূর্ব বর্ধমান জেলার আউশগ্রামের ওই চার পরিযায়ী শ্রমিককে উদ্ধার করে আনল পুলিশ।
'ভালো কাজে'র টোপ দিয়ে আউশগ্রামের চার যুবককে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। অসমের গুয়াহাটি শহরে কাজের কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু সেখানে পৌঁছনোর পর তাঁদেরকে বলা হয় ট্রেনে আরও তিনদিনের পথ যেতে হবে। কিন্তু কোথায় নিয়ে যাওয়া হবে বলা হয়নি। সন্দেহ হতেই আউশগ্রামের মল্লিকপুর গ্রামের বাসিন্দা আকাশ লোহার,ছোট্টু লোহার ,কমল লোহার ও মিঠুন লোহার লোকাল ট্রেন ধরে বাড়ি ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু দালাল চক্রের লোকজন খবর পেয়েই এক্সপ্রেস ট্রেনে দ্রুত চলে এসে তাঁদের ধরে ফেলে।
[আরও পড়ুন: বামেরা ক্ষমতায় এলে দ্বিগুণ হবে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার! ভোটপ্রচারে সৃজনের মন্তব্য নিয়ে শোরগোল]
অভিযোগ, ট্রেন থেকে নামিয়ে মালদহ জেলার প্রত্যন্ত গ্রামে তাঁদের আটকে রেখে 'মুক্তিপণ' দাবি করা হয়। চার যুবকের পরিবারের লোকজন ঘটনার কথা পুলিশকে জানাতেই আউশগ্রামের ছোড়া ফাঁড়ির পুলিশ ভিনজেলা থেকে উদ্ধার করে আনল ওই চার পরিযায়ী শ্রমিককে। পুলিশের তৎপরতায় আউশগ্রামের মল্লিকপুর গোষ্বামীখণ্ড গ্রামের ওই চার যুবককে উদ্ধারের পর স্বস্তিতে পরিবারের লোকজন। তাঁরা কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন ছোড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ত্রিদীপ রাজ সহ পুলিশকর্মীদের।
জানা গিয়েছে আকাশ, ছোট্ট, কমল ও মিঠুন নামে ওই চার যুবক আগে গুজরাটে কাজ করতেন। মাস তিনেক আগে বাড়ি ফেরেন। এর পর ওই গ্রামেরই বাসিন্দা রাখাল কোরার মাধ্যমে আসামের গুয়াহাটি শহরে বাগান পরিচর্যা করার জন্য কাজের কথা বলা হয়। ওই গ্রামেরই বাসিন্দা রামনগর পঞ্চায়েতের সদস্য সুব্রত পাল বলেন,"চার যুবককে কাজে নিয়ে যাওয়ার আগে ১০ হাজার টাকা করে অগ্রিম দেওয়া হয়েছিল। চারদিন আগে ওরা ট্রেন ধরেছিল। কিন্তু গুয়াহাটি পৌঁছনোর পর ওদের বলা হয় তাদের আরও তিনদিনের পথ ট্রেনে যেতে হবে। ওরা গুয়াহাটি থেকেই ফিরে আসার চেষ্টা করে। কিন্তু ওদের আটকে দেওয়া হয়। এর পর ফোন করে বাড়িতে বলা হয়, ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা না দিলে ওঁদের ছাড়া হবে না। পরিবারের লোকজন বাধ্য হয়ে টাকা জোগাড় করতে গরু ছাগল বিক্রি করতে শুরু করে। আমি জানতে পারি। পরিবারকে বলি পুলিশকে জানাতে।"
[আরও পড়ুন: তিরন্দাজি বিশ্বকাপে সোনা জয়ের হ্যাটট্রিক, ফের বিশ্বমঞ্চে ভারতের জয়জয়কার]
জানা গিয়েছে, মল্লিকপুর গ্রামের ওই চার যুবকের পরিবারের লোকজন ছোড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ত্রিদীপ রাজকে ঘটনার কথা জানান। এরপর পুলিশ তৎপর হয়। মালদা জেলার সংশ্লিষ্ট থানার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। ছোড়া পুলিশ ফাঁড়ি থেকে একটি দল মালদা রওনা দেয়। তারপর এদিন শনিবার উদ্ধার করে আনা হয় চার পরিযায়ী শ্রমিককে। স্থানীয় গ্রামবাসী রাধামাধব মণ্ডল, পঞ্চায়েত সদস্য সুব্রত পালরা বলেন, "আমাদের এলাকার চার যুবককে যে কোথায় নিয়ে যাওয়া হত তা জানা নেই, ওদের চরম ক্ষতিও হতে পারত। ছোড়া পুলিশ দ্রুততার সঙ্গে ব্যবস্থা নিয়েছে বলেই ওরা বাড়ি ফিরতে পেরেছে।" জানা গিয়েছে যে যুবকের মাধ্যমে চারজনের কাজের যোগাযোগ হয়েছিল সেই রাখাল কোড়াকে এখন এলাকায় পাওয়া যাচ্ছে না। পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।