সুকুমার সরকার, ঢাকা: চলতি বছর জরাজীর্ণ ও অস্বাস্থ্যকর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে জন্ম নেবে ৪৮ হাজারের বেশি শিশু। ‘সেভ দ্য চিলড্রেন’ বলছে, ২০১৮ সালে প্রতিদিন প্রায় ১৩০টি শিশুর জন্ম হবে। এসব শিশু চরম অপুষ্টি-সহ ডিপথেরিয়া, কলেরা এবং হামের মতো রোগের বড় ঝুঁকিতে পড়বে। সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্যাম্পগুলোতে ভয়াবহ অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের মধ্যে থাকছে রোহিঙ্গারা। শুক্রবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত আগস্ট থেকে ৬ লক্ষ ৫৫ হাজার রোহিঙ্গা মায়ানমার ছেড়ে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
[ভিটে ফেরত পেতে চলেছেন ১ লক্ষ রোহিঙ্গা]
এর আগে বিভিন্ন সময় দুই লক্ষর বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আসে। ঘনবসতিপূর্ণ রোহিঙ্গা শিবিরে ব্যাপক স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। সেভ দ্য চিলড্রেনের কমিউনিকেশনস ম্যানেজার ডাফনি কুক বলেন, ক্যাম্প জুড়েই পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা এখন উন্মুক্ত। খাবারের জলও নিরাপদ নয়। এই অবস্থায় নতুন করে জন্ম নেওয়া শিশুদের রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। তাদের শরীর বর্তমান পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারবে না। রোহিঙ্গা শিবিরে মাত্র ২২ শতাংশ নারী গর্ভবস্থায় স্বাস্থ্য সেবা পাচ্ছেন। শিশু জন্ম নেওয়ার পর অপুষ্টিজনিত কারণে দুই-তৃতীয়াংশ নারীই তাদের সন্তানদের বুকের দুধ খাওয়াতে পারবে না। কক্সবাজারে সেভ দ্য চিলড্রেনের স্বাস্থ্য পরামর্শক ব়্যাচেল কামিংস বলেন, এমন পরিস্থিতিতে শিশুদের জন্ম খুবই হৃদয়বিদারক। সম্পদ ও তহবিলের স্বল্পতার কারণে জরুরিভাবে এসব মা ও শিশুদের চিকিৎসা সেবাও নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।
[রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশে ধ্বংস হাজার কোটি টাকার বনসম্পদ]
প্রসঙ্গত, পালিয়ে প্রাণ রক্ষা করলেও ভিটেমাটি হারিয়েছিলেন প্রায় ছয় লক্ষ রোহিঙ্গা। স্বদেশের স্বাধীনতা খুইয়ে শরণার্থী শিবিরে কোনওভাবে মাথা গোঁজার লড়াই করতে হচ্ছে তাঁদের। এবার শেষ হতে চলেছে রোহিঙ্গাদের দুর্দিন। শরণার্থীদের দেশে ফেরাতে এবার বাংলাদেশ ও মায়ানমার মধ্যে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে আইনি প্রক্রিয়া। গত মাসে নাইপিদাও-য়ের কাছে এক লক্ষ রোহিঙ্গা বাস্তুহারাদের তালিকা পেশ করে ঢাকা। সব ঠিক থাকলে প্রথম দফায় তালিকাভুক্তদের রাখাইন প্রদেশে ফেরত পাঠানো হবে।