সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: ওঝার ঝাড়ফুঁকে সময় নষ্ট। সময় মতো হাসপাতালে না নিয়ে যাওয়ায় সাপের (Snake) কামড়ে ফের মৃত্যু। এবার প্রাণ গেল বছর আটেকের বালকের। দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাথরপ্রতিমার অচিন্ত্য নগর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিষ্ণুপুর এলাকার ঘটনায় নেমেছে শোকের ছায়া।
সাপের কামড়ে মৃত রমেশ বরের বাবা নাড়ুগোপাল বর ও মা দিল্লিতে পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করেন। তাঁরা বাড়িতে ছিলেন না। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে মশারির মধ্যে দাদুর সঙ্গেই বিছানায় শুয়ে ঘুমোচ্ছিল রমেশ। বিছানাতেই ছিল বিষধর। ঘুমন্ত অবস্থাতেই সাপের ছোবল খায়। যন্ত্রণায় চিৎকার করে ওঠে। নাতির কান্নার আওয়াজে ঘুম ভাঙে দাদুর। সাপটিকে দেখেন তিনি। কিন্তু পালিয়ে যায় সাপটি।
[আরও পড়ুন: ‘পার্থ আর প্রভাবশালী নন, বিধায়ক পদও ছাড়তে রাজি’, আদালতে জোর সওয়াল আইনজীবীর]
এদিকে, সাপের কামড়ে অসুস্থ বালককে চিকিৎসকের পরিবর্তে এলাকার এক ওঝার কাছে নিয়ে যান পরিবারের লোকজন। সারারাত ধরে চলে ঝাড়ফুঁক, মন্ত্রোচ্চারণ। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় শুক্রবার সকালে স্থানীয় গদামথুরা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়। ততক্ষণে সব শেষ। চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
বিজ্ঞানের যুগে সুন্দরবনের বেশিরভাগ মানুষের এখনও ওঝার প্রতি অন্ধবিশ্বাস রয়েছে। সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকার বেশিরভাগ বাসিন্দারাই এখনও কুসংস্কারাচ্ছন্ন। সাপে কামড়ানো রোগীকে প্রথমেই হাসপাতালে না নিয়ে গিয়ে ওঝা গুনিনের কাছে নিয়ে যান তাঁরা। বৃহস্পতিবার গভীর রাতের ঘটনা সে কথাই প্রমাণ করল আরও একবার। কুসংস্কারের বলি হতে হল আট বছরের বালকের। পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্যরা এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাঁদের পরামর্শ, কুসংস্কার বাদ দিয়ে অবিলম্বে সাধারণ মানুষকেই সচেতন হতে হবে। শুধুমাত্র সচেতনতা প্রচার করে কোনও কাজ হবে না।