সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় ফুঁসছে কেরল। বিক্ষোভ-আন্দোলনের মাঝে উঠে এল সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ছবি। হিন্দু তরুণীর বিয়ের আসর বসল মসজিদে। খরচও দিল মসজিদ কর্তৃপক্ষ। পিতৃহারা মেয়ের বিয়ের বন্দোবস্ত করে দেওয়ায় বেজায় খুশি তরুণীর অসহায় মা। এই উদ্যোগের জন্য মসজিদ কর্তৃপক্ষকে কুর্নিশ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন।
বাবা মারা গিয়েছেন আগেই। বেসরকারি সংস্থায় কাজ করে তিন সন্তানকে নিয়ে সংসার চালান একা মা। বেতন মাত্র ৭ হাজার টাকা। নুন আনতে পান্তা ফুরনোর সংসারে ক্রমশই বড় হয়ে উঠছিল মেয়ে। চিন্তা বাড়ছিল মায়ের। হাজার হোক নিম্নবিত্ত পরিবারের কন্যাসন্তান বলে কথা। তাই তাঁকে পাত্রস্থ না করা পর্যন্ত যেন শান্তি পাচ্ছিলেন না মা। সে কারণেই বিয়ের কথাবার্তাও শুরু করেন তিনি। মনের মতো পাত্রের খোঁজ মিলছিল ঠিকই। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়ায় বিয়ের আয়োজনে প্রয়োজনীয় অর্থ। কী করবেন তা বুঝতে পারছিলেন না অসহায় মা। বাধ্য হয়ে কেরলের কায়ামকুলামের শতবর্ষ প্রাচীন চেরাভাল্লি জামাত মসজিদ কর্তৃপক্ষের কাছে সাহায্যের আবেদন জানান তিনি।
[আরও পড়ুন: নির্ভয়ার ধর্ষকদের ফাঁসির জন্য ডাক পড়ল জল্লাদের, পবনকে চাইল তিহার কর্তৃপক্ষ]
আবেদনে সাড়া দেয় মসজিদ কর্তৃপক্ষ। তাঁরা স্থির করেন সম্পূর্ণ মসজিদের খরচে শরদ শশী এবং অঞ্জু অশোক কুমারের বিয়ে হবে। বিয়ের ব্যবস্থার পাশাপাশি তরুণীকে নানা উপহার দেওয়ারও ব্যবস্থা করে মসজিদ কর্তৃপক্ষ। তাকে দেওয়া হয় ফ্রিজ-সহ নানা বৈদ্যুতিন সামগ্রী, নানা ধরনের সোনার গয়না এবং ২ লক্ষও টাকা। ৪ হাজার লোকের খাওয়াদাওয়ার বন্দোবস্ত করা হয়। সেই অনুযায়ী পুরোহিতের সামনে হিন্দু নিয়ম মেনে মসজিদে বিয়ে হয় তাঁদের। চার হাত এক হওয়ার পর প্রথমবার অঞ্জু ঢোকেন মসজিদে। প্রধান ইমাম রিয়াসুদ্দিন ফৈজির থেকে আশীর্বাদ নেন নবদম্পতি। মসজিদে হিন্দু তরুণীর বিয়ের ঘটনায় আপ্লুত কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। টুইটে নবদম্পতির জন্য শুভকামনা করেন তিনি। মসজিদ কর্তৃপক্ষকে কুর্নিশ জানান মুখ্যমন্ত্রী।
ধর্মনিরপেক্ষতাই ভারতের ঐতিহ্য। তাও বর্তমানে ক্রমশই শিরোনামে উঠে আসছে ধর্মীয় ভেদাভেদের ঘটনা। এই আবহে কেরলের মসজিদে হিন্দু তরুণীর বিয়ে যেন আরও একবার ভারতের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকেই তুলে ধরেছে।
The post সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নজির, মসজিদেই বসল পিতৃহারা হিন্দু তরুণীর বিয়ের আসর appeared first on Sangbad Pratidin.