অর্ণব আইচ: বাংলাদেশ থেকে সীমান্ত পেরিয়ে ‘বন্ধু’র সঙ্গে দেখা করতে এসে অপহরণকারীর ফাঁদে এক যুবক। ছক অনুযায়ী বাংলাদেশের (Bangladesh) বাসিন্দা যুবকের আত্মীয়কে মেসেজ পাঠিয়ে এক কোটি টাকা মুক্তিপণ দাবিও করে অপহরণকারীরা। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। ঢাকা থেকে পাওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে বুধবার রাতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুরে তল্লাশি চালিয়ে অপহৃত যুবককে উদ্ধার করল কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স। গ্রেপ্তার করা হয়েছে অপহরণকারীকে, যে আসলে অসমের বাসিন্দা। এই ঘটনায় সোনারপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযুক্ত যুবক মোক্তার হোসেন আসলে জেএমবি বা কোনও জঙ্গি সংগঠনের সদস্য। সংগঠনের তহবিল বাড়ানোর জন্যই এই অপহরণের ছক কষে অভিযুক্তরা।
পুলিশ জানিয়েছে, গত ১৩ মার্চ ঢাকার বাসিন্দা মহম্মদ এনামুল হক ফারুক নামে এক ব্যক্তি লিখিতভাবে লালবাজারকে (Lalbazar) জানান, গত ৭ মার্চ গভীর রাতে তাঁর ভাই হাফেজ মওলানা মহম্মদ মামুনুর রশিদ বাংলাদেশে তাঁর নেত্রকোনা জেলার বাড়ি থেকে বের হন। বাড়িতে বলে গিয়েছিলেন, তিনি এক ভারতীয় বন্ধুর সঙ্গে বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে দেখা করতে যাচ্ছেন। যদিও তখনও তিনি কোনও জায়গার নাম বলেননি। এর পরের দিন থেকে ভাই হাফেজ মওলানার মোবাইল থেকে মেসেজ করে এক ব্যক্তি মহম্মদ এনামুলকে জানায় যে, তাঁর ভাইকে অপহরণ করা হয়েছে। ভাইকে ফেরত পেতে গেলে এক কোটি টাকা মুক্তিপণ দিতে হবে। প্রথমে বিষয়টি আমল না দিলেও ক্রমে একের পর এক হুমকির মেসেজ আসতে থাকে। অবশেষে তিনি বাংলাদেশ পুলিশকে বিষয়টি জানান।
[আরও পড়ুন: ভোটে লড়বেন মুকুল-শমীক-রুদ্রনীল! আজই বাকি ১৬৭ আসনের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা বিজেপির]
গত ১১ মার্চ অভিযুক্ত অপহরণকারীরা অপহৃতের দাদাকে ওই যুবকের একটি ছবি পাঠায়। তাতে দেখা যায়, তাঁর ভাইকে বেঁধে রাখা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশ পুলিশ জানতে পারে যে, ওই যুবক ভারতে রয়েছেন। এরপরই এনামুল লালবাজারকে বিষয়টি জানান। কলকাতা পুলিশ অভিযোগকারীর সঙ্গে ফোনে কথা বলে। কোথা থেকে এই মেসেজ করা হচ্ছে, সেই সম্পর্কে পুলিশ খোঁজখবর নেওয়া শুরু করে। এর মধ্যে অভিযোগকারীকেও অপহরণকারীর সঙ্গে কথা চালিয়ে যেতে বলা হয়। তারই সূত্র ধরে বুধবার রাতে সোনারপুর থানার সহযোগিতায় ওই অঞ্চলে ফাঁদ পাতে এসটিএফ। গোপন ডেরায় হানা দেন আধিকারিকরা। সেখান থেকেই ২৬ বছর বয়সের হাফেজ মওলানা নামে ওই যুবককে উদ্ধার করা হয়। অপহরণকারী অসমের নওগাঁর বাসিন্দা মোক্তার হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। এ ছাড়াও ঢাকায় অভিযোগকারীর সঙ্গে পুলিশ যোগাযোগ করেছে। এই অপহরণ কাণ্ডের সঙ্গে মোক্তার হোসেন ছাড়াও আরও কয়েকজন জড়িত বলে পুলিশের সন্দেহ। ধৃতকে জেরা করে তাদের খোঁজ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।