সুব্রত বিশ্বাস: নিশ্চিত মৃত্যু বুঝতে পেরে ছেলের হাত ছেড়ে দেন বাবা। ফলে ট্রেন থেকে পড়ে মৃত্যু হল যুবকের, কিন্তু বেঁচে গেল স্কুলপড়ুয়া শিশুটি। শুক্রবার সকালে এই মন খারাপ করা ঘটনার সাক্ষী হল বনগাঁ-লালগোলা প্যাসেঞ্জার (Krishnanagar Lalgola Passenger) ট্রেনের যাত্রীরা। দুর্ঘটনাটি ঘটে বাদকুল্লা (Batkulla) ও কৃষ্ণনগরের মাঝে। ট্রেন থেকে পড়ে মৃত যুবকের দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে রেল পুলিশ।
পুলিশ সূত্র জানা গিয়েছে, মৃত যুবক বছর ৩৫-এর গৌতম কয়াল (Goutam Kayal)। তিনি বাদকুল্লার বাসিন্দা। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশকিছুদিন ধরে অসুস্থ গৌতম। তাঁর পাঁচ বছরের শিশুপুত্র কৃষ্ণনগরের অ্যাকাডেমির নার্সারির পড়ুয়া। অন্যদিনের মতো এদিন সকালে ছেলেকে কৃষ্ণনগরের স্কুলে পৌঁছে দিতে বাদকুল্লা থেকে ট্রেন ধরেন গৌতম। বুধবার সকলে বনগাঁ-লালগোলা প্যাসেঞ্জার ট্রেন ধরেছিলেন তিনি। কাছাকাছি স্টেশনে নামবেন বলে ট্রেনের দরজার কাছে ছেলের হাত ধরে দাঁড়ান। মাঝপথে হয় বিপত্তি।
[আরও পড়ুন: ৩ বছরেও মেলেনি পেনশন, অবসাদে হেয়ার স্কুলের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের ‘আত্মহত্যা’]
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী যাত্রীদের বক্তব্য, তখন ঘড়ির কাঁটায় সকাল ৭টা বাজে। ছেলের হাত ধরে ট্রেনের সামনে দাঁড়ানো অবস্থাতেই আচমকা অতিরিক্ত অসুস্থ বোধ করেন গৌতম কয়াল। একট সময় বুঝতে পারেন শরীরের ভারসাম্য রাখতে অসুবিধা হচ্ছে। ট্রেন থেকে পড়ে যাবেন বুঝতে পেরে, নিশ্চিত মৃত্যু জেনে শেষ মুহূর্তে ছেলের হাত ছেড়ে দেন তিনি। ট্রেন থেকে পড়েই মৃত্যু হয় যুবকের। অক্ষত থাকে শিশুসন্তান।
[আরও পড়ুন: সেপ্টেম্বরে দ্বিতীয় সপ্তাহে ডুয়ার্সে অভিষেক, যোগ দিতে পারেন চা শ্রমিকদের সম্মেলনে]
পরে দু্র্ঘটনার জায়গায় পৌঁছান রেল পুলিশের কর্মীরা। তাঁরাই যুবকের দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়। নিজের প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে গেদে (Gede) ডিভিশনের রেল পুলিশের ডিএসপি (DSP) নরেন্দ্রনাথ দত্ত দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “সকালবেলায় এমন দুর্ঘটনা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।” এদিকে যুবকের মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা জানার পরে শোকের ছায়া নেমেছে তাঁর এলাকায়।