অরিজিৎ গুপ্ত, হাওড়া: প্রেমিকার বিয়ে ঠিক হয়েছে অন্যত্র। সেই অবসাদে আত্মঘাতী প্রেমিক। ঘটনাকে কেন্দ্র করে করে তীব্র উত্তেজনা ছড়াল হাওড়ার ডোমজুড়ে (Domjur) । তরুণীর বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় মৃতের পরিবারের সদস্যরা। পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে আয়ত্তে আসে পরিস্থিতি।
ডোমজুড়ের কলোড়া মধ্যপাড়ার বাসিন্দা শেখ জাহিরুদ্দিন। হায়দরাবাদে একটি সোনার দোকানে কাজ করতেন তিনি। পাশের গ্রাম নতিবপুরের পারভিন খাতুনের (২০) সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল তাঁর। বেশ কয়েক মাস আগে তাঁদের সম্পর্কে চিড় ধরে। মেয়েটির দাদা শেখ সফিউদ্দিন ফোনে জাহিরুদ্দিনকে নানাভাবে হুমকি দিতেন বলে অভিযোগ। গত রবিবার পারভিনের পরিবারের লোকজন অন্যত্র তরুণীর বিয়ে ঠিক করেন। বিয়ের কেনাকাটাও শুরু করে। এই খবর জাহিরউদ্দিনের কাছে পৌঁছতেই অবসাদে ভেঙে পড়েন তিনি। গতকাল রাতে নিজের ফ্ল্যাটে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি।
[আরও পড়ুন: সভার মাঝে অসুস্থ কিশোরী, বক্তৃতা শেষ করে চিকিৎসার ব্যবস্থা মমতার, হাত বুলিয়ে দিলেন মাথায়]
তাঁর মৃত্যুর খবর গ্রামে পৌঁছতেই জহিরউদ্দিনের পরিবারের লোকজন এবং গ্রামবাসীদের একাংশ পারভিনের বাড়িতে চড়াও হয়। সেখানে ব্যাপাক ভাঙচুর চালায় তাঁরা। এমনকী বিয়ের জন্য রাখা সোনার গয়না, কাপড় জামা এবং টাকাপয়সা লুট করে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এর পাশাপাশি গ্যাস সিলিন্ডার খুলে বাড়িতে আগুন লাগানো হবে বলে হুমকিও দেওয়া হয় বলে খবর। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় ডোমজুড় থানার পুলিশ। তাঁদের দীর্ঘক্ষণের চেষ্টায় আয়ত্তে আসে পরিস্থিতি। এরপরই গ্রামবাসীরা চড়াও হয় কলোড়া ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের বাড়িতে। সেখানে ইটপাটকেল ছোঁড়া হয়। স্কুটার ভাঙচুর করা হয়। সেখানেও পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। জাহিরউদ্দিনের পরিবারের লোকজন মেয়েটি দাদা শেখ শামসুদ্দিনের বিরুদ্ধে ডোমজুড় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।
পুলিশ একটি আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা শুরু করেছে। তবে মেয়েটির মা জানিয়েছেন, তাঁদের মেয়েকে নানাভাবে উত্ত্যক্ত করতেন মৃত যুবক। গত রবিবার অন্য জায়গায় তরুণীর বিয়ে ঠিক হয়। এমনকী বাড়িতে সোনার গয়না এবং পোশাক কিনে রাখা ছিল। গতকাল রাতে তাঁদের বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট চালায় জাহিরউদ্দিনের পরিবারের লোকেরা। তবে জাহিরউদ্দিনের পরিবারের লোকজনের দাবি, মেয়েটির সঙ্গে তাদের ছেলের সম্পর্ক ছিল। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, দু’জনের মধ্যে দীর্ঘদিনের সম্পর্ক ছিল। মেয়েটির বিয়ে অন্যত্র ঠিক হয়ে যাওয়ায় অবসাদে আত্মহত্যা করেছেন জাহিরউদ্দিন। পুলিশ গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান জানিয়েছেন, এটা একেবারে ব্যক্তিগত বিষয়। তিনি চেয়েছিলেন বসে মিটিয়ে দিতে। কিন্তু যেভাবে তাদের বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে তার বিরুদ্ধে ডোমজুড় থানায় অভিযোগ দায়ের করবেন।