দেব গোস্বামী, বোলপুর: গরুহাটে দড়ি বিক্রি করতেন আবদুল লতিফ। সেটাই ছিল ব্যবসায় তাঁর হাতেখড়ি। তারপর গরু পাচারে (Cattle Smuggling) যুক্ত হয়ে পড়া। উল্কার গতিতে উত্থান লতিফের। পরিবারের অভাবের তাড়নায় নাবালক অবস্থায় ইলামবাজারের (Ilambazar) সুখবাজার হাটে গরু বাঁধার দড়ি বিক্রি করতেন। সেই সূত্রেই গরুহাটে যাতায়াত তাঁর। এনামুল হকের নজরে আসতেই ২০১০ সাল থেকে ইলামবাজার থেকে মুর্শিদাবাদ হয়ে বাংলাদেশের (Bangladesh) বর্ডার পর্যন্ত গরু পাচারের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েন তিনি।
লতিফ ছিলেন গরু পাচারের মূল দায়িত্বে। সিবিআই (CBI)চার্জশিট দাবি করেছে, ইলামবাজারের গরুর হাটও নিয়ন্ত্রণ ছিল তাঁরই হাতে। এরপরই একের পর এক প্রভাব-প্রতিপত্তি বাড়তে থাকে। বোলপুরে মার্বেলের গোডাউন, তার পিছনে বিঘার পর বিঘা জমি, সুখবাজারে চৌপাহারি এলাকায় পাঁচ একরেরও বেশি জমি হ্যাচারি-পোলট্রি ফার্ম, ইলামবাজার দুবরাজপুরে হাইওয়ের উপর গাড়ি শোরুম ও গাড়ি সার্ভিস সেন্টার, জয়দেব রোডের উপর ১৫ বিঘারও বেশি জমি, ইলামবাজার দুবরাজপুর রোডে চালু না হওয়া পেট্রোল পাম্প, হোটেল ব্যবসা ছাড়াও একাধিক বৈধ ও অবৈধ বালি ব্যবসা রয়েছে তাঁর।
[আরও পড়ুন: ‘বাবা সাহায্য করলে নামকরা গায়ক হতাম!’, বিস্ফোরক কুমার শানুর ছেলে জান কুমার]
তবে নিজেকে পাথরের ব্যবসায়ী বলেও দাবি করতেন লতিফ। গরু পাচার কাণ্ডে এনামুল গ্রেপ্তারের পরই গা ঢাকা দেন তিনি। গত শনিবার শক্তিগড়ে কয়লা মাফিয়া তথা বিজেপি নেতা রাজু ঝায়ের উপর শুটআউটের ঘটনার পরপরই ফের পলাতক লতিফ ওরফে হিঙ্গুর শেখ। ২০২২ সালে ৭ আগস্ট সিবিআইয়ের চার্জশিটে আগেই নাম রয়েছে বীরভূমের ইলামবাজারের বাসিন্দা আবদুল লতিফ ওরফে হিঙ্গুলের। তাঁর বিরুদ্ধে জারি হয়েছিল জামিন অযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা। চার্জশিট দেওয়ার অনেকদিন পরও আসানসোল আদালতে আবদুল লতিফের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য পরোয়ানা জারি করা হয়। অথচ শান্তিনিকেতনের রতন কুটির সিবিআই অস্থায়ী ক্যাম্প থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরেই বোলপুরে (Bolpur) মার্বেলের বিশাল শোরুম। ইলামবাজারের গরুর হাট সংলগ্ন সুখবাজারে তাঁর পেল্লাই বাড়ি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অনুগামীদের নিরাপত্তা বলয়ে ইলামবাজারে বাড়ির আশেপাশে এবং বোলপুরে মার্বেলের শোরুমে প্রায়শই কালো কাঁচ লাগানো দামি গাড়ি থেকে নামতে দেখা যেত লতিফকে। গত শনিবার শক্তিগড়ে জাতীয় সড়কের ধারেও জনবহুল এলাকায় ঝালমুড়ি খেতেও দেখা যায় আবদুল লতিফকে। আর তাতেই বাড়ছে রহস্য।