ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: ‘তৃণমূলে নবজোয়ার’ কর্মসূচিকে কটাক্ষ করেছে বিরোধীরা। কেউ বলেছে, রাজ্যের শাসকদল ভয় পেয়ে রাস্তায় নেমেছে। তো কেউ বলেছে, জনবিচ্ছিন্ন নেতারা মন বুঝতে মাটিতে নেমেছে। মঙ্গলবার দিনহাটার সাহেবগঞ্জের সভা থেকে বিরোধীদের জবাব দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। তাঁর কথায়, “৬০ দিন ছাড়ুন, ৬ দিন এভাবে রাস্তায় তাঁবু খাটিয়ে থাকুন। তাহলে বুঝব!”
আজ থেকে শুরু হওয়া তৃণমূলের জনসংযোগ যাত্রা চলবে আগামী দু’মাস। রাজ্য়ের ৩ হাজার ৩৪৩ পঞ্চায়েতে যাবেন অভিষেক নিজে। তাই আগামী ৬০ দিন পরিবার, পরিজনকে ছেড়ে জেলায়-জেলায় ঘুরবেন তিনি। রাস্তার ধারে তাঁবু খাটিয়ে দলীয় কর্মসূচি ও রাত্রিযাপন করবেন। তাঁর এই কর্মসূচিকে তীব্র কটাক্ষ করেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এই কর্মসূচিকে ‘আলেকজান্ডারের ভারত অভিযানে’র সঙ্গে তুলনা টেনে তাঁর খোঁচা, “নতুন তৃণমূল হয়েছে। মমতার তৃণমূল হয়তো উঠে গিয়েছে। ওই নেতারা বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। যে নেতারা সিবিআই ডাক পাচ্ছেন, তাদের কুশল হাল জানতে গিয়েছেন হয়তো। দলে পুরনো লোক আর কে কে আছে হয়তো সেটাই দেখতে গিয়েছেন।” তাঁর আরও সংযোজন, “আমার তো মজা লাগছে, এই প্রথম এই রাজনীতি শুরু হল, যে প্রার্থী কাকে চাই। ওঁরা আগে ঘোষনা করেছিলেন ৬০ হাজার প্রার্থী মমতা ব্যানার্জি ঠিক করবেন। এতদিন কারা ঠিক করত? এখন বলছে মানুষ ঠিক করবে! প্রতিবার এ ধরনের ভাঁওতাবাজি রাজনীতি দিয়ে মানুষকে বোকা বানানোর চেষ্টা হয়।” বিজেপির কটাক্ষের পালটা দিলেন অভিষেক।
[আরও পড়ুন: অমর্ত্য সেনের পাশে দাঁড়াচ্ছেন কোন লাভের আশায়? টুইটে বিদ্বজ্জনদের বিঁধলেন অমিত মালব্য]
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের কথায়, “ঘর-বাড়ি, পরিবার ছেড়ে ৬০ দিন রাস্তায় থাকব। রাস্তায় নামার দরকার ছিল না। কিন্তু আমরা যে কথা দিই তা রাখি। তাই আপনাদের কাছে এলাম। কিছু মানুষ ভেবেছি, অভিষেক তো বলেছে প্রার্থী মানুষ বাছবে। কিন্তু কাজে হবে কী? সেটাই যাতে হয় তার জন্য এসেছি।” অভিষেকের সংযোজন, “২০২৬ পর্যন্ত সরকার আছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৩ বার মুখ্যমন্ত্রী। আবার চতুর্থবার জিতবেন। কিন্তু পঞ্চায়েতে মানুষের প্রতিনিধি না থাকলে সেখানে পরিষেবা বাধা পাবে। শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক অবাধ নির্বাচন হোক। তার জন্য প্রার্থী তৃণমূল ঠিক করবে না। আপনারা যাকে প্রার্থী ঠিক করবেন দলের সর্ব শক্তি দিয়ে তাকে জিতিয়ে আনা হবে। পঞ্চায়েতের পাহারাদার থাকবে।”
প্রসঙ্গত, এদিন কর্মসূচিতে সামান্য বদল এনেছেন অভিষেক। এতদিন ঠিক ছিল তাঁবুতে জেলা অধিবেশনে গোপন ব্যালটে ভোট হবে। এদিন তিনি জানান, প্রতিদিনের সভা শেষেই ‘গণভোট’ শুরু হবে। গোপন ব্যালটে পঞ্চায়েতের পছন্দের প্রার্থীর নাম জানাতে পারবে সাধারণ মানুষ। আর গোপন ব্যালটে ভোট দিতে না পারলে ৭৮৮৭৭৭৮৮৭৭
নম্বরে ফোন করে গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদের পছন্দের প্রার্থীদের নাম জানাতে পারবে আমজনতা।