সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Cm Mamata Banerjee) দিল্লি সফর শুরুর আগেই তাঁর জন্য যাবতীয় রাজনৈতিক ক্ষেত্র তৈরি করতে লেগে পড়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। ইতিমধ্যেই দলীয় সাংসদদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেছেন। এবার সংসদের মিটিং রুমে সংসদীয় দলের বৈঠক ডাকলেন ডায়মন্ডহারবার সাংসদ।
২১ জুলাই শহিদ দিবসের অনুষ্ঠান শেষ করে রাতেই এসেছেন দিল্লি। পরদিন থেকেই শুরু করে দেন বিভিন্ন কর্মসূচি। ২২ জুলাই দু’দফায় বৈঠক করেন দলের সাংসদদের সঙ্গে। প্রথমে সকালে সংসদের দলীয় দপ্তরে। পরে দুপুরে রাজ্যসভায় তৃণমূল কংগ্রেস মুখ্য সচেতক সুখেন্দুশেখর রায়ের বাড়িতে। এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন প্রশান্ত কিশোর, তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি যশবন্ত সিনহাও। পাঁচদিনের মধ্যে তৃতীয়বার সাংসদদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চলেছেন তৃণমূল সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। তবে এই বৈঠকের এক আলাদা তাৎপর্য রয়েছে। সুচনাকাল থেকে এই প্রথম সংসদের কোনও মিটিং রুমে বসতে চলেছে তৃণমূল সাংসসদের বৈঠক। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বিভিন্ন সময়ে সংসদের মিটিং রুমে এই ধরনের বৈঠক করে থাকে। তবে এতদিন সংসদে তৃণমূলের যাবতীয় বৈঠক হয়েছে নিজেদের দলীয় দপ্তরে। এই প্রথম অন্যান্য সর্বভারতীয় দলগুলির মতো সংসদের কোনও মিটিং রুমে বৈঠক করতে চলেছেন তৃণমূল সাংসদরা। এছাড়া করোনা আবহ শুরু হওয়ার পর এই প্রথম কোনও রাজনৈতিক দল সংসদের মিটিং রুমে বৈঠক করতে চলেছে। সূত্রের খবর, বিকেল চারটের সময় ৬২ নম্বর রুমে এই বৈঠকের অনুমতি দিয়েছেন অধ্যক্ষ ওম বিড়লা।
[আরও পড়ুন: Pegasus ইস্যুতে অভিষেকের পাশে রাহুলরা, মমতার দিল্লি সফরের আগে কী বার্তা কংগ্রেসের?]
জাতীয় রাজনীতিতে ক্রমশ পরিচিত মুখ হয়ে উঠেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সংগঠনে নতুন দায়িত্ব পাওয়ার পর সংসদীয় দলের নেতৃত্ব দিতে বাড়তি দায়িত্ব নিচ্ছেন। দফায় দফায় সাংসদদের সঙ্গে বৈঠক, ওয়েলে নেমে দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার মধ্যেই তা স্পষ্ট। শোনা যাচ্ছে সাংসদদের কাছে বিভিন্ন জাতীয় ইস্যুতে ওয়াকিবহাল থাকার বার্তা দিতে চলেছেন তিনি। প্রশ্নোত্তর পর্ব, জিরো আওয়ার, বিলের উপর আলোচনা-সহ সংসদের যে কোনও বিষয়ে অংশ নিতে ও নিজেদের ছাপ রাখতে তৃণমূল সাংসদদের নির্দেশও দিয়েছেন ইতিমধ্যে। অনুপস্থিত সাংসদদের নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছেন বলেও শোনা গিয়েছে। সোমবারের বৈঠকে কী বার্তা দেন, সেদিকে নজর দলীয় সাংসদদের।
লোকসভা ও রাজ্যসভার মুখ্য সচেতক কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও সুখেন্দুশেখর রায় ইতিমধ্যেই মেসেজ করে প্রত্যেক সাংসদকে বৈঠকে থাকার কথা জানিয়ে দিয়েছেন বলেই খবর। স্বাভাবিক নিয়মেই এই বার্তা দেওয়া হয়নি শিশির অধিকারী, সুনীল মণ্ডলদের। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকবার দলত্যাগী দুই সাংসদের সদস্যপদ বাতিলের দাবী করেছেন লোকসভায় তৃণমূল দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্প্রতি তাঁদের অবস্থান জানতে চেয়ে দুই সাংসদকে চিঠিও পাঠিয়েছেন লোকসভা অধ্যক্ষ। দলের মধ্যে ইতিমধ্যেই নিজের আলাদা ভাবমূর্তি তৈরি করে নিয়েছেন অভিষেক। এবার জাতীয় রাজনীতিতেও সেই পথ নিতে চলেছেন বলেই ইঙ্গিত স্পষ্ট। এদিন তাঁকে নিয়ে টুইট করেছে কংগ্রেস। এবার দেখার মুখ্যমন্ত্রীর দিল্লি সফরে নতুন কোন অবতারে সামনে আসেন অভিষেক।