shono
Advertisement

মধ্যমগ্রামে প্রোমোটার খুনে গ্রেপ্তার ১, বাকি অভিযুক্তদের খোঁজে ম্যারাথন তল্লাশি

ভিনরাজ্যের খুনিরা প্রত্যেকেই ছিল 'শার্প শুটার'! The post মধ্যমগ্রামে প্রোমোটার খুনে গ্রেপ্তার ১, বাকি অভিযুক্তদের খোঁজে ম্যারাথন তল্লাশি appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 11:15 AM Feb 03, 2018Updated: 11:31 AM Feb 03, 2018

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মধ্যমগ্রামে প্রোমোটরকে খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার এক। ধৃত কুরু বোসকে আজ বারাসত আদালতে তোলা হবে। পুলিশ সূত্রে খবর, বাকি অভিযুক্তদের খোঁজে রাতভর তল্লাশি চলেছে। প্রোমোটার প্রকাশ দে সরকার ওরফে ঢাকাই গৌতমকে খুন করতে ৮-১২ জনের একটি দল এসেছিল বলে অনুমান। খুনিরা প্রত্যেকেই ‘শার্প শুটার‘ বলে মনে করা হচ্ছে। অভিযোগ, ধৃত কুরুই দুষ্কৃতীদের চিনিয়ে দেয় গৌতমকে। আর তারপরই একের পর এক গুলিতে ঝাঁজরা হয়ে যান গৌতম।  মৃত্যুর আগে গৌতমের বাড়িতে নিয়মিত যাতায়াত ছিল কুরুর। স্থানীয় দুষ্কৃতী কুরু ও টুবাই গোষ্ঠীর সঙ্গে এলাকা দখল নিয়ে বিবাদের জেরেই খুন বলে অভিযোগ। পুলিশের সন্দেহ, এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত বাকি দুষ্কৃতীরা রাজ্য ছেড়ে চম্পট দিয়েছে। মৃতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে কুরু বোসকে। আজই বারাসত আদালতে তাকে পেশ করা হবে।

Advertisement

[মধ্যমগ্রামে গ্যাংওয়ার, সেলুনে ঢুকে গুলি করে খুন প্রোমোটারকে]

শুক্রবার বেলা সাড়ে দশটা নাগাদ ব্যস্ত মধ্যমগ্রাম চৌমাথার কাছের বঙ্কিমপল্লিতে সেলুনে চুল-দাড়ি কামাতে বসেছিলেন ঢাকাই গৌতম। গৌতম ভাইপোকে সিগারেট কিনতে পাঠান। ভাইপো পাপাই জানান, ‘ফিরে আসতেই দেখি, দশ-বারো জন কাকাকে গুলি করছে। তারপর হেঁটে হেঁটেই ফিরে যাচ্ছিল। আমাকে দেখে ওরা বন্দুক দেখায়। আমি পালিয়ে যাই। কয়েকজনের মাথায় হেলমেট পরা ছিল। বিজয়নগরের দিকে ওরা বাইক রেখে এসেছিল।’ খুব কাছ থেকে পরপর তিনটি গুলি চালানো হয় গৌতমের মাথা লক্ষ্য করে। ঝাঁজরা করা হয় গুলিতে। মাটিতে লুটিয়ে পড়েন গৌতম। সেলুন থেকে বেরিয়ে দুষ্কৃতীরা বোমা ছুড়তে থাকে। বেশ কয়েকটি বোমা মেরে তারা পালিয়ে যায়।

দিনে-দুপুরে এই ঘটনা মনে করিয়ে দিচ্ছে জনপ্রিয় হিন্দি সিনেমা ‘গ্যাংস অফ ওয়াসেপুর‘-এর কথা। পালটেছে শুধু ঘটনাস্থল। মধ্যমগ্রামে চাপানউতোর শুরু জমি কেনাবেচার কারবারের মধ্যে দিয়ে। তারপর সিন্ডিকেট ব্যবসা। সেখান থেকে প্রোমোটিং। মধ্যমগ্রাম অঞ্চলে পাঁচটি আলাদা গ্যাং তৈরি করেছিল পাঁচ রাউডি প্রোমোটার। যাদের লড়াইয়ে বার বার রক্তাক্ত হয়েছে শহরের সড়ক। পাঁচটির মধ্যে দুটি দল গ্যাংওয়ারে আগেই খতম হয়ে গিয়েছে। শুক্রবার আরও এক গ্যাংয়ের মাথা ঢাকাই গৌতমকে গুলিতে ঝাঁজরা করে দিল অন্য দলের দুষ্কৃতীরা। মধ্যমগ্রামের রাউডি প্রোমোটারদের এই গ্যাংওয়ার হিন্দি সিনেমার চিত্রনাট্যকেও হার মানায়। ধানবাদের গ্যাংওয়ারের প্রেক্ষাপটে তৈরি গ্যাংস অফ ওয়াসেপুর-এরই যেন বাস্তব রূপায়ণ দেখা যাচ্ছে মধ্যমগ্রামে।

[নাটকীয় কায়দায় ‘সিরিয়াল’ চুরি বাগুইআটিতে, খোয়া গেল ১৭ লক্ষ টাকার গয়না]

উত্তর ২৪ পরগনার সদর শহর বারাসতের সংলগ্ন মধ্যমগ্রাম। ন’য়ের দশক থেকে ক্রমশ উন্নতি হতে শুরু করল এই শহরের। নতুন বাড়ি, ফ্ল্যাট, মল তৈরি হতে শুরু করল। আর তার সঙ্গেই শুরু হল জমি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য। মধ্যমগ্রামের পুরনো বাসিন্দাদের থেকে জানা যায়, ঢাকাইপট্টিতে ঘাঁটি ছিল গৌতমের। এলাকায় সবাই তাকে ঢাকাই গৌতম নামে চিনত। গৌতমের বিরুদ্ধে ওই অঞ্চলের বাসিন্দা এক যুবককে খুনের মামলা রয়েছে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, চপার নিয়ে ওই যুবককে ধাওয়া করে একটি মিষ্টির দোকানে ঢুকিয়ে কুপিয়ে খুন করেছিল গৌতম। এলাকায় কোনও জমি কিনতে হলে তার মারফতই যেতে হত। এছাড়াও নানান অপরাধের বহু মামলা রয়েছে তার বিরুদ্ধে। একা গৌতম নয়। সে সময় আরও কয়েকটি দলও তৈরি হয়েছিল। একটি ছিল রাখালের। এখন খুনের দায়ে জেল খাটছে সে। অন্যটি ছিল পদোর। ৯ নম্বর রেলগেট তার ঘাঁটি ছিল। মধ্যমগ্রাম ব্রিজের কাছে জোড়া খুনের মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত হিসাবে জেল খাটছিল সে। সেখানেই মৃত্যু হয়েছে তার। বাকি দুটি গ্যাং ছিল রাম আর কমলের। পুলিশ সূত্রে খবর, এই পাঁচজনই একে অপরের  শত্রু ছিল। কমলকে খুনের অভিযোগ ছিল রামের বিরুদ্ধে। আবার রামকে খুন করেছিল পদোর ভাগনে টুবাই ও তার সঙ্গীরা, এমনটাই অভিযোগ। রাম ও কমলের মৃত্যু এবং রাখাল জেলে যাওয়ার পর গোটা এলাকাটি গৌতম ও পদোর দখলে চলে আসে। আর তা নিয়েই দু’জনের শত্রুতা আরও বাড়ে। সে সময় মধ্যমগ্রামে আবাসনের আরও রমরমা হয়।

স্থানীয়দের থেকে জানা যায়, মধ্যমগ্রাম চত্বরে কোনও জমি বা বাড়ি বিক্রি হলেই থাবা বসাত গৌতম। অন্যদিকে পদো ও তার ভাগনে প্রোমোটিং শুরু করে। এলাকা দখল নিয়ে প্রায়ই সংঘর্ষ হতে থাকে দুই গ্যাংয়ের মধ্যে। যদিও ২০১৫ সালে পদোর খুনের মামলায় এবং তার কিছুদিনের মধ্যেই গৌতম নার্কোটিক্সের মামলায় জেলে চলে যায়। পদোর মৃত্যুর পর গোটা কারবার সামলাতে শুরু করে তার ভাগনে টুবাই। গৌতমের পরিবারের দাবি, এলাকায় একছত্র ব্যবসা করার জন্যই টুবাই পথের কাঁটাকে সরাতে এই কাজ করেছে। অন্যদিকে তদন্তকারীদের অনুমান, গৌতম ও টুবাই দুজনেই একে অপরকে ভয় পাচ্ছিল। একে অপরকে যখন তখন মেরে দিতে পারে বলে আশঙ্কা ছিল দু’জনেরই। সেই আশঙ্কা থেকেই টুবাই হামলা চালিয়েছে বলে অনুমান তাঁদের।

[শরীরে অক্সিজেনের অভাবেই মৃত্যু ঐত্রীর, উল্লেখ ময়নাতদন্তের রিপোর্টে]

The post মধ্যমগ্রামে প্রোমোটার খুনে গ্রেপ্তার ১, বাকি অভিযুক্তদের খোঁজে ম্যারাথন তল্লাশি appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
toolbarHome ই পেপার toolbarup রাজধানী এক্সপ্রেস toolbarvideo ISL10 toolbarshorts রোববার