সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অ্যানিমিয়া আর মাত্রাতিরিক্ত ডায়াবেটিসে আক্রান্ত প্রবীণ অভিনেত্রী মাধবী মুখোপাধ্যায় (Madhabi Mukherjee )। আলিপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি তিনি। রবিবার হাসপাতালের তরফ থেকে জানিয়ে দেওয়া হল, এখনই ছুটি নয়। বরং আরও কিছুদিন হাসপাতালেই কাটাতে হবে অভিনেত্রীকে। কেন এমন? হাসপাতালের সিইও তথা ম্যানেজিং ডিরেক্টর ডা. রূপালী বসু জানিয়েছেন, গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনাল ট্র্যাক্ট এন্ডোস্কোপি করা হয়েছিল অভিনেত্রীর। পরীক্ষার রিপোর্ট স্বাভাবিক। ক্ষুদ্রান্ত্রে কোথাও জটিলতা না থাকলেও চিকিৎসকদের চিন্তায় রেখেছে রক্তে শর্করার মাত্রা।
রক্তে শর্করার মাত্রা ৭.০ শতাংশের বেশি হলেই হৃদরোগ, স্ট্রোকের সম্ভাবনা থাকে। যে কারণে প্রবীণ অভিনেত্রীর ক্ষেত্রে কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছেন না চিকিৎসকরা। মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. বিশ্বজিৎ ঘোষদস্তিদারের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের মেডিক্যাল টিম কড়া পর্যবেক্ষণে রেখেছে অভিনেত্রীকে। তাঁরা জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে প্রবীণ অভিনেত্রীর শর্করার মাত্রা ৬.৫ শতাংশের বেশি। দেহের শর্করা বা সুগার নিয়ন্ত্রণ করে ইনসুলিন হরমোন। অগ্ন্যাশয়ের বা প্যানক্রিয়াসের বিটা সেল থেকে এই ইনসুলিন হরমোন ক্ষরিত হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বিশেষ কোনও কারণে প্রবীণ অভিনেত্রীর শরীরে এই ইনসুলিন হরমোনের ক্ষরণ কমে গিয়েছে বা ব্যাহত হচ্ছে। যে কারণে শরীরে শর্করার পরিমাণ বেড়ে রয়েছে। সঠিক কারণ জানতে সোমবার আরও একাধিক শারীরিক পরীক্ষা করা হবে মাধবীর। উল্লেখ্য, অভিনেত্রীর বয়স এখন ৮০ বছর। গত কয়েক দশক ধরেই রক্তাল্পতার সমস্যায় ভুগছিলেন অভিনেত্রী।
[আরও পড়ুন: সত্যজিৎ রায়, আজও কেন এই নামের কোনও উত্তরসূরি নেই বাংলা সিনেমায়?]
শিশুশিল্পী হিসেবে সিনেমায় অভিনয় শুরু। এরপর ঋত্বিক ঘটক, তপন সিনহা, সত্যজিৎ রায়ের মতো কিংবদন্তি পরিচালকের সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি। সিনেমায় অভিনয় করার আগে তাঁর আসল নাম ছিল মাধুরী। ১৯৬০ সালে মৃণাল সেনের ‘বাইশে শ্রাবণ’ ছবিতে অভিনয়ের সময়, প্রযোজক বিজয় চট্টোপাধ্যায় তাঁর নাম রাখেন মাধবী। সত্যজিৎ রায়ের একের পর এক ছবিতে অভিনয় করে নজর কাড়েন টলিউডের এই বর্ষীয়ান অভিনেত্রী। সত্যজিৎ রায়ের ‘মহানগর’, ‘চারুলতা’, ‘কাপুরুষ’ ছবিতে অভিনয় করে গোটা দুনিয়ার সিনেমাপ্রেমীদের কাছ থেকে প্রশংসা কুড়িয়ে নেন মাধবী মুখোপাধ্যায়। এছাড়াও, ‘ছদ্মবেশী’, ‘শঙ্খবেলা’, ‘গণদেবতা’, ‘কড়ি দিয়ে কিনলাম’, ‘স্ত্রীর পত্র’, মতো ছবিতেও নজর কাড়েন মাধবী। সিনেমার পাশাপাশি মঞ্চেও অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। ১৯৯৫ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ ‘আমি মাধবী’। সেই বইতে উঠে আসে অভিনেত্রীর জীবনের নানা অজানা কথা।