সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সন্দেশখালি কাণ্ডে প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক নিরাপদ সর্দারকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। তাঁর জামিন মামলায় কলকাতা হাই কোর্টের ভর্ৎসনার মুখে পড়ে পুলিশ। অভিযোগ দায়েরের আগেই কীভাবে হল এফআইআর, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে আদালতে। বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠক করে এ বিষয়ে ভুল স্বীকার করলেন এডিজি দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রতীম সরকার। এই ভুল সম্পূর্ণ অনিচ্ছাকৃত বলেও উল্লেখ করেন তিনি। ‘ভুল’ সংক্রান্ত তথ্য পুলিশের জন্য রয়েছে। তা আদালতে পেশ করা হবে।
সুপ্রতীম বলেন, ‘‘তারিখ লিখতে ভুল হয়েছিল। ভুল হলে তা দেখা হয় ইচ্ছাকৃত নাকি অনিচ্ছাকৃত। এ ক্ষেত্রে ভুলটা অনিচ্ছাকৃত। সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের থেকে এ বিষয়ে বিভাগীয় রিপোর্টও তলব করা হয়েছে।’’ এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) আরও বলেন, ‘‘অভিযোগ দায়ের হয়েছিল ৯ ফেব্রুয়ারি, রাত ৯টা ৫০ মিনিটে। যিনি অভিযোগ দায়ের করেছিলেন, তিনি ওই সময়ে সন্দেশখালি থানায় উপস্থিত ছিলেন। তাঁর মোবাইল টাওয়ার লোকেশনের তথ্য আমাদের কাছে রয়েছে। আদালতে তা জমা দেওয়া হবে।’’ যদিও বিরোধীদের দাবি, নিরাপদ সর্দারের বিরুদ্ধে অভিযোগের ক্ষেত্রে টাওয়ার লোকেশন ট্র্যাক করা গেল। অথচ শাহজাহানের গ্রেপ্তারির ক্ষেত্রে কেন তা করা গেল না? তাহলে অযথা ৫৫ দিন সময় লাগত না।
[আরও পড়ুন: মধ্যপ্রদেশে ভয়াবহ পথ দুর্ঘটনা, নিহত অন্তত ১৪]
উল্লেখ্য, গত ১১ ফেব্রুয়ারি বাঁশদ্রোণীর বাড়ি থেকে নিরাপদ সর্দারকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাক্তন সিপিএম বিধায়কের বিরুদ্ধে সন্দেশখালির অশান্তিতে ইন্ধন দেওয়ার অভিযোগ ছিল। জামিনের আবেদন করে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি। মঙ্গলবার বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চ নিরাপদর জামিন মঞ্জুর করে। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে বিচারপতি বলেছিলেন, “গত ১৭ দিন হেফাজতে রয়েছেন নিরাপদ সর্দার। তাঁর বিরুদ্ধে ৯ ফেব্রুয়ারি এফআইআর দায়ের হয়। পুলিশের কাছে অভিযোগ আসে ১০ ফেব্রুয়ারি। পুলিশ তো দারুণ দক্ষতার সঙ্গে কাজ করেছে। কীভাবে একজন নাগরিককে এভাবে হেফাজতে নিতে পারে পুলিশ? কেন ওই পুলিশ আধিকারিকদের এখনই গ্রেপ্তার করা হবে না? এতদিন হেফাজতে আছেন। কে এই ক্ষতিপূরণ দেবে? এটা অত্যন্ত বিস্ময়কর যে এই ধরনের একটা অভিযোগের ভিত্তিতে কীভাবে একজন নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হল।” গোটা ঘটনায় জেলার পুলিশ সুপারের রিপোর্ট তলব করেন বিচারপতি। তার দিন দেড়েকের মধ্যে ‘ভুল’ স্বীকার করলেন এডিজি দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রতীম সরকার।