বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত: প্রয়াত সভাপতি সোমেন মিত্রর স্থলাভিষিক্ত হয়ে তাঁর পথই বেছে নিলেন নয়া প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরি (Adhir Chowdhury)। বামেদের সঙ্গে জোট করার ক্ষেত্রে তিনি যে যথেষ্ট আন্তরিক, বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠক করে তা স্পষ্ট করে দেন তিনি। আগামী বিধানসভা ভোটে রাজ্য কংগ্রেস বামেদের সঙ্গে জোট করে লড়াই করতে প্রস্তুত বলে জানান অধীরবাবু। এদিকে পরীক্ষিত ও অভিজ্ঞ একজনকে প্রদেশ সভাপতির দায়িত্ব দেওয়ায় কংগ্রেস হাইকম্যান্ডকে ধন্যবাদ জানিয়েছে সিপিএম।
চরম তৃণমূল বিরোধী বলেই পরিচিত অধীর চৌধুরি। আর তাঁকেই কিনা প্রদেশ সভাপতি হিসাবে বেছে নিলেন সোনিয়া গান্ধী। তাহলে কি একুশের ভোটে কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের জোট সম্ভাবনার পথ এখনই বন্ধ করে দিলেন কংগ্রেস সভানেত্রী? অধীরের নাম ঘোষণার পর থেকেই এই জল্পনা ঘোরাফেরা করছে বিধানভবনের অলিন্দে। জল্পনা যে অমূলক নয়, সাংবাদিক বৈঠক করে স্পষ্ট করেন দিয়েছেন তিনি। বলেন, “কংগ্রেস ২০১৬ সাল থেকেই বামেদের সঙ্গে জোটের পক্ষে ছিল। আমার হাত ধরেই সেই জোট প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। মাঝে জোট ব্যাহত হয়।” বামেরাই জোট ভেঙে দিয়েছিল বলে কার্যত আক্ষেপের সুরে জানান তিনি। গত লোকসভা ভোটেও বামেদের সঙ্গে কংগ্রেসের জোট ভেস্তে গিয়েছিল। একুশের বিধানসভায় সিপিএম জোট চাইলে তাঁর কোনও আপত্তি নেই। তবে বামেরা যদি না চায়, তাহলে জোট হবে না বলেও স্পষ্ট করেন নতুন প্রদেশ সভাপতি।
[আরও পড়ুন: NEET পরীক্ষার্থীদের জন্য সুখবর, রবিবার সকাল ১০টা থেকেই মিলবে মেট্রো পরিষেবা]
তাঁর মতে, বামেদের সঙ্গে এখন কংগ্রেসের সম্পর্ক আগের তুলনায় অনেকটাই মসৃণ। তাই এই জোটের প্রয়োজন। কারণ, দুই দলই তৃণমূলের হাতে আক্রান্ত। তাঁদের সবাইকে এক করতে দু’পক্ষেরই জোটবদ্ধ হওয়া প্রয়োজন বলে জানান তিনি। সিপিএমও যে জোটে আগ্রহী, নতুন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিকেসেই বার্তাও দিয়ে রেখেছে। সিপিএম পলিটবুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম (Md. Selim) জানান, লোকসভা নির্বাচনে কোনও কারণে জোট না হলেও রাজ্যের দুই বিভেদকামী শক্তি বিজেপি ও তৃণমূলকে পরাজিত করেছিলেন অধীর। আসন্ন নির্বাচনেও তৃণমূল ও বিজেপি বিরোধী ভোটকে একবাক্সে আনতে হবে বলে মনে করেন তিনি। আর অধীরবাবুর নেতৃত্বে কংগ্রেস এই কাজ করতে পারবে বলে আশাবাদী সিপিএম।
[আরও পড়ুন: একুশের আগে চমক! বিজেপির রাজ্য কমিটিতে আসছেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়]
করোনা আবহে অনেক কংগ্রেস নেতৃত্ব ও কর্মী তৃণমূল ও বিজেপিতে যোগদান করেছেন। যাঁরা দল ছেড়ে চলে গেছেন, নতুন সভাপতি তাঁদের ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। বলেন, যাঁরা ভুল বুঝে অন্য দলে চলে গিয়েছেন, তাঁরা ফিরে এলে যথাযোগ্য মর্যাদা দেওয়া হবে। এদিন নতুন প্রদেশ সভাপতিকে স্বাগত জানাতে সকাল থেকেই বিধানভবনে ভিড় জমান নেতা, কর্মীরা। ফুলের মালা পরিয়ে তাঁকে স্বাগত জানান কর্মীরা। তবে যাঁর নাম প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি হিসাবে প্রথম থেকেই ঘোরাফেরা করছিল, সেই সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য বা তাঁর অনুগামীদের এদিন বিধানভবন চত্বরে দেখাই গেল না।
ছবি: পিন্টু প্রধান।
The post সোমেনের পথেই অধীর, একুশের ভোটে বামেদের সঙ্গে জোটে আগ্রহী প্রদেশ কংগ্রেসের নতুন সভাপতি appeared first on Sangbad Pratidin.