বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত: কেন্দ্রে বারবার বামেদের তৃতীয় বিকল্প (Third Front) গড়ে তোলার স্বপ্ন অধরাই থেকে গিয়েছিল। মুখ থুবড়ে পড়েছিল প্রকাশ কারাত-সীতারাম ইয়েচুরিদের তৃতীয় বিকল্পের স্বপ্ন। এবার রাজ্যে সেই তৃতীয় বিকল্প গড়ে তোলার ডাক দিল প্রদেশ কংগ্রেস। বামেদের সঙ্গে জোট গঠন করে রাজ্যের তৃতীয় বিকল্প আগামিদিনে ক্ষমতায় আসবে, এমনই আশাবাদী সুর শোনা গেল প্রদেশ সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরির (Adhir Ranjan Chowdhury) কথায়।
শনিবার হাথরাসকাণ্ড, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ও সন্ত্রাসের প্রতিবাদে মিছিল করে কংগ্রেস। বিধানভবন থেকে শুরু হয়ে মিছিল ধর্মতলায় শেষ হয়। মিছিলের নেতৃত্বে আগাগোড়া প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি থাকলেও বামেদের সেখানে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। তবে কর্মসূচি একান্তই কংগ্রেসের বলে বিতর্ক এড়িয়ে গিয়েছে আলিমুদ্দিন।
[আরও পড়ুন: পুজোর মরশুমে কলকাতা-দিঘা ট্রেন চালাতে প্রস্তুত রেল, অপেক্ষা রাজ্যের ছাড়পত্রের]
ইদানিংকালে বামেদের যে কোনও কর্মসূচিতে প্রদেশ কংগ্রেস নেতাদের উপস্থিতি থাকত চোখে পড়ার মতো। জোট গড়ে তোলার ক্ষেত্রে তা ছিল প্রথম ধাপ। বিপরীতমুখী দুই রাজনৈতিক দলের এই জোট গঠনের সূচনা করেছিলেন প্রয়াত প্রদেশ সভাপতি সোমেন মিত্র। সেই ধারাকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন বলে প্রদেশ কংগ্রেসের দায়িত্ব পাওয়ার পরই জানিয়েছিলেন কংগ্রেস সংসদীয় দলের নেতা ও নতুন সভাপতি অধীর চৌধুরি। দায়িত্ব নেওয়ার পরই বামেদের সঙ্গে জোটের পক্ষে হাইকমান্ডের কাছে দরবার করেন তিনি।
শুক্রবার দলের চার গুরুত্বপূর্ণ নেতার সঙ্গে বৈঠকে এ রাজ্য নিয়ে হাইকমান্ডের মনোভাব স্পষ্ট করে দেন তিনি। সেইসঙ্গে জানিয়ে দেন, বামেদের সঙ্গে আসন রফা নিয়ে আলোচনায় বসে শুধু সংখ্যা দাবি করলেই হবে না, রাজ্যে নিজেদের শক্তি প্রমাণ করতে হবে। সেইজন্য রাজ্যস্তরের পাশাপাশি প্রতিটি ব্লকে কংগ্রেসকে এককভাবে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। শনিবারের মিছিল সেই কর্মসূচির সূচনা বলেই মনে করছে প্রদেশ নেতৃত্ব। এদিনের মিছিল শেষে আগামী বিধানসভা ভোটে বামেদের সঙ্গে জোট করে তৃতীয় বিকল্প গঠনই যে লক্ষ্য, তা স্পষ্ট করেন অধীর। তিনি জানান, “বামেদের সঙ্গে জোট করে রাজ্যে তৃতীয় বিকল্প গড়ে তোলা হবে। তৃতীয় বিকল্প আগামিদিনে রাজ্যে সরকার গঠন করবে। যারা মনে করছে কংগ্রেস দুর্বল হয়ে গিয়েছে , কংগ্রেস ছোট দল তারা মুর্খের দল। কংগ্রেস বাংলার মানুষের কথা বলবে। মানুষের জন্য লড়বে।”
[আরও পড়ুন: বাংলার আইনশৃঙ্খলা নিয়ে টুইটে খোঁচা, মুখ্যসচিবের জবাব তলব রাজ্যপালের]
হাথরাসের ঘটনার তীব্র প্রতিবাদের পাশাপাশি কামদুনির প্রসঙ্গ টেনে রাজ্যের শাসকদলের সমালোচনা করেন অধীর চৌধুরি। তাঁর বক্তব্য, বাংলার মানুষ সন্ত্রাসের সরকার চায় না। বাংলায় কামদুনি, রায়গঞ্জ, জলপাইগুড়ি, মেদিনীপুরেও সন্ত্রাসের মডেল চলছে। সঙ্গে চলছে কাটমানির মডেল। কংগ্রেস এই দুই মডেলের বিরোধী। তাই বামেদের সঙ্গে একজোট হয়ে তৃতীয় বিকল্প গড়ে তুলে কংগ্রেসকে এক নম্বর পার্টিতে পরিণত করা হবে বলে দাবি করেন তিনি। এদিন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের সঙ্গে দেখা করেও রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন অধীর চৌধুরির নেতৃত্বে কংগ্রেসের প্রতিনিধিদল।