সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক : বাড়ির অমতে ভালবেসে ভিনধর্মের এক যুবককে বিয়ে করেছিলেন৷ পাঞ্জাবের লেহরাগাগা শহরে সেনা অফিসার স্বামীর সঙ্গে সংসার পাতেন নাগাল্যান্ডের মেয়ে অনিতা৷ কিন্তু, শিকড়ের টান কি আর এত সহজে ছিঁড়ে ফেলা যায়! তাই নিজের পরিবারের লোকেদের দেখা করার জন্য অধীর হয়ে উঠেছিলেন অনিতা৷ কিন্তু, বহু চেষ্টা করেও নাগাল্যান্ডে ডিমাপুরে পরিবারের লোকেদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি তিনি৷ এভাবেই কেটে যায় পাঁচ-পাঁচটি দশক৷ অবশেষে বেঙ্গল ক্যাডারের এক মহিলা আইএএস অফিসারে সৌজন্যে ফের নিজের পরিবারের লোকেদের সঙ্গে দেখা হল অনিতার৷
[বাক স্বাধীনতা রক্ষার লড়াইয়ে টাইম ম্যাগাজিনের স্বীকৃতি গুরমেহরকে]
সালটা ১৯৬৭৷ অনিতা তখন আঠেরো বছরের কিশোরী৷ তরুণ সেনা অফিসার ভাকিল চন্দের প্রেমে পড়ে যান তিনি৷ কিন্তু, ভাকিল চন্দের পরিবার ছিল হিন্দু৷ আর অনিতারা খ্রীস্টান৷ ভিনধর্মের এক যুবকের সঙ্গে মেয়ের সম্পর্ক মেনে নেয়নি অনিতার পরিবার৷ ১৯৬৮ সালে বাড়ির অমতে বিয়ে করেন ভাকিল ও অনিতা৷ বিয়ের পর স্বামীর সঙ্গে পাঞ্চাবের লেহরাগাগা শহরে চলে আসেন অনিতা৷ সেখানেই সংসার পাতেন তাঁরা৷ এই দম্পতির দুই ছেলে৷ দুজনেরই বয়স এখন চল্লিশ পেরিয়েছি৷ বিবাহিত জীবন সুখের হলেও, কোথায় যেন একটি শূন্যতা গ্রাস করছিল অনিতাকে৷ ডিমাপুরে ফেলে আসা পরিবারের লোকেদের দেখার জন্য মনটা ব্যাকুল হয়ে উঠেছিল৷ চেষ্টা করেছিলেন বিস্তর৷ কিন্তু লাভ হয়নি৷ পরিবারের লোকেদের কথা ভেবে যখন ক্রমেই হতাশায় ডুবে যাচ্ছিলেন, তখনই অনিতার সঙ্গে দেখা হয় বেঙ্গল ক্যাডারের আইএএস অফিসার প্রীতি গোয়েলের৷ প্রীতি, অনিতাকে কথা দিয়েছিলেন, ডিমাপুরে তাঁর পরিবারের লোকেদের সঙ্গে দেখা করিয়ে দেবেন৷ কথা রেখেছেন ওই মহিলা আইএএস অফিসার৷ প্রীতির উদ্যোগে পঞ্চাশ বছর পর ডিমাপুরে গিয়ে পরিবারের লোকজনের দেখা করে এসেছেন অনিতা৷
[১৫ লক্ষ টাকা কবে পাব? প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি কেরলের কৃষকের]
তবে পঞ্চাশ বছর সময়টা তো কম নয়৷ একদিন যাঁদের ছেড়ে প্রেমিকের সঙ্গে ঘর ছেড়েছিলেন, তাঁদের অনেকেই আজ আর পৃথিবীতে নেই৷ অনিতা বলেন, ‘পরিবারের সঙ্গে দেখা হয়েছে৷ আমি খুব খুশি৷ আমার কাছে এটা স্বপ্নের মতো৷ তবে আমি, মার সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলাম৷ কিন্তু, মা মারা গিয়েছেন৷ তবে ভাই ও তাদের পরিবারের সঙ্গে খুব ভাল সময় কাটিয়েছি৷’
[ফেসবুক সহায়, নাবালিকা বিবাহ প্রমাণ করে মুক্তি তরুণীর]
জানা গিয়েছে, যাঁর জন্য অনিতা ফের তাঁর পরিবারকে খুঁজে পেলেন, সেই মহিলা আইএএস অফিসার প্রীতি গোয়েল এখন কর্মসূত্রে হুগলিতে থাকেন৷ বহু চেষ্টা করেও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি৷ তবে প্রীতির মা কান্তা গোয়েল এখনও লেহরাগাগা শহরেই থাকেন৷ তিনি জানিয়েছেন, বিয়ের পর প্রথম কয়েক বছর সুখেই কেটেছিল ওই দম্পতির৷ কিন্তু, পরে নিজের পরিবারের লোকেদের অভাব বুঝতে পারেন অনিতা৷ কান্তা গোয়েল বলেন, ‘প্রায়ই উনি আমাদের বাড়িতে আসতেন৷ মেয়ের সঙ্গে গল্প করতেন৷ একদিন কথায় কথায়, নিজের পরিবারের কথা মেয়ে জানান৷’ এরপরই প্রীতি গোয়েল ডিমাপুরে অনিতার পরিবারকে খুঁজে বের করার উদ্যোগ নেন৷ পেয়েও যান৷ প্রায় দু’বছরের চেষ্টায় অনিতাকে তাঁর পরিবারের লোকেদের সঙ্গে মিলিয়ে দিলেন তিনি৷
[ভারতে বিপদে পড়ে রুশ নাগরিকের ভিক্ষা, পাশে বিদেশমন্ত্রী]
The post ৫০ বছর পর নিজের পরিবারকে ফিরে পেলেন এই নাগা মহিলা appeared first on Sangbad Pratidin.