রাহুল রায়: সম্প্রতি নয়, বেশ কয়েক বছর আগে থেকেই এ রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির আঁচ মিলেছিল। ৮ বছর আগে কলকাতা হাই কোর্টে (Calcutta HC) দায়ের হওয়া একটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে তেমনই ইঙ্গিত পেয়েছিলেন বিচারপতিরা। সেই থেকে আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিলেন ঢাকুরিয়ার শিক্ষিকা। এসএলএসটি (SLST)পরীক্ষায় যোগ্যতার প্রমাণ দেওয়া সত্ত্বেও মেলেনি চাকরি। তবে এবার আইনি লড়াইয়ের মধ্যে দিয়ে নিজের অধিকার কেড়ে নিলেন কবিতা আঢ্য। হাই কোর্টের নির্দেশে এবার বাড়ির সামনের স্কুলেই চাকরি পেলেন তিনি। সেইসঙ্গে কম যোগ্যতাসম্পন্ন যে শিক্ষিকা এতদিন চাকরি করছিলেন, আদালতের নির্দেশে স্কুল ছাড়তে হল তাঁকে।
২০১২ সালে SLST-তে ভূগোলের (Geography) শিক্ষিকা হিসেবে চাকরির আবেদন করেছিলেন কবিতা আঢ্য। পরে দেখা যায়, তার থেকে কম নম্বর পেয়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নন, এমন একজন চাকরি করছেন। তাঁর নাম শ্রীময়ী বন্দ্যোপাধ্যায়। তা জানতে পেরে মামলা দায়ের করেন কবিতাদেবী। সেই মামলায় ২০১৫ সালে হাই কোর্টের বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত রায় দেন, এই নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে। এরপর তিনি স্কুলে যোগ দেওয়া শিক্ষিকার চাকরি বাতিল করে কবিতা আঢ্যকে সেই চাকরি দেওয়ার নির্দেশ দেন।
[আরও পড়ুন: রাতের শহরে সাইকেল চালাচ্ছেন খোদ এসপি! যানজট কমাতে অন্য ভূমিকায় পুলিশকর্তা]
পরে অবশ্য ডিভিশন বেঞ্চ বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তর রায়টি খারিজ করে দেয়। আর কবিতাদেবীর দায়ের করা মামলা পাঠানো হয় সিঙ্গল বেঞ্চে। যদিও সূত্রের খবর, সেসময় তাঁর এজলাসে তৎকালীন এসএসসি-র (SSC) তরফে আইনজীবী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় মেনে নেন, নিয়ম অনুযায়ী নিয়োগ হয়নি। কবিতাদেবীর মামলাটির এতদিন শুনানি হয়নি।
[আরও পড়ুন: ‘বলিউডে শুধু স্টার রয়েছে, দক্ষিণেই আসল সিনেমা তৈরি হয়’, বিস্ফোরক অনুপম খের]
পরে কবিতাদেবীর মামলা বিচারপতি অমৃতা সিনহার সিঙ্গল বেঞ্চে শুনানির জন্য ওঠে। সওয়াল-জবাব এবং তথ্যপ্রমাণের সাপেক্ষে বিচারপতি নির্দেশ দেন, যোগ্য প্রার্থী হিসেবে কবিতা আঢ্যকে বাড়ির কাছে চাকরি দিতে হবে। ২০১৪ সাল থেকে সিনিয়রিটির ভিত্তিতে তাঁর নিয়োগপত্র দিতে হবে এবং ২০১৪ সালে যে বেতন হতো, তার নিরিখেই বেতন দিতে হবে কবিতাদেবীকে। এই নির্দেশের পরও প্রথমদিকে তাঁকে সোনারপুরের কবিতাকে হাওড়ার পাঁচলার একটি স্কুলে নিয়োগ করা হয়। ফের তিনি আবেদন করলে আদালত এসএসসিকে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার নির্দেশ দেয়। তারপর আগের নিয়োগ বাতিল করে নিউ আলিপুরের স্কুলে কবিতা আঢ্যকে যোগ দেওয়ার সুযোগ দেয়। সঙ্গে এতদিনকার বঞ্চনার জন্য অন্যান্য সুযোগসুবিধাও দেওয়া হবে।