সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কেদারনাথে (Kedarnath) হেলিকপ্টার দুর্ঘটনা অনেকগুলো প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। মঙ্গলবার কেদারনাথে হেলিকপ্টার মর্মান্তিক কপ্টার বিপর্যয়ে পাইলট-সহ সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। বস্তুত, এবার কেদারনাথ ও বদ্রীনাথে যেভাবে ভক্ত সমাগম হয়েছে, তাতে হেলিকপ্টার ব্যবসাও চাঙ্গা হয়েছে। আর তাতেই প্রচুর সংস্থাও এসেছে কপ্টার পরিষেবা দিতে। বলা যেতে পারে, কপ্টার পরিষেবা এখানে অটো পরিষেবার রূপ নিয়েছে।
মঙ্গলবারের দুর্ঘটনার পর ক্রমশ প্রকাশ্যে আসছে বিস্তর অনিয়ম, বিধিভঙ্গের অভিযোগ। খারাপ আবহাওয়া সত্ত্বেও নাকি উড়ান বন্ধ করা হয়নি পাহাড়ে। সেপ্টেম্বরে খারাপ আবহাওয়ার মধ্যে হেলিকপ্টারটি উড়ে যাওয়ার ভিডিও সামনে আসার পরে ডিজিসিএ আপত্তি জানায়। তবে তাতে থেমে থাকেনি উড়ান। মঙ্গলবার কেদারনাথ ধামের কাছে যা ঘটেছিল তার আশঙ্কা আগে থেকেই করা হচ্ছিল। চারধাম যাত্রা শুরুর আগেই তীর্থযাত্রীরা কেদারনাথ ও বদ্রীনাথ ধামে আসতে শুরু করেন। মে মাসের মাঝামাঝি থেকে অক্টোবরের শেষ পর্যন্ত এই অঞ্চলের আকাশে হেলিকপ্টারের ওড়াউড়ি শুরু হয়ে যায়। এসব হেলিকপ্টার স্থানীয়দেরও উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
[আরও পড়ুন: রাজ্যে বড়সড় নাশকতার ছক? বারাকপুর থেকে ১০০ কেজি বিস্ফোরকের মশলা উদ্ধার]
স্থানীয় গ্রামবাসী প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করলেও কোনও লাভ হয়নি। চামোলির মাইথানা গ্রামের এক সমাজকর্মী শশী ভূষণ মাইথানি ২৩ মে ফেসবুকে একটি ভিডিও আপলোড করেছিলেন, যাতে তিনি পরিস্থিতির ভয়াবহতা দেখিয়েছিলেন। ভিডিওতে একটি হেলিকপ্টারকে উপত্যকায় প্রদক্ষিণ করতে দেখা গিয়েছে। জানা গিয়েছে, ঝিরঝিরে বৃষ্টি ও কুয়াশার কারণে হেলিকপ্টারটি কেদারনাথে অবতরণ করতে পারেনি। সেটি বদ্রীনাথ থেকে তীর্থযাত্রীদের কেদারনাথে নিয়ে যাচ্ছিল। তাঁর বাড়ি থেকে শুট করা ১.৪৭ মিনিটের ভিডিওটিতে মৈথানিকে বলতে দেখা যায় যে ‘আপনি দেখতে পাচ্ছেন ঝড় আসছে। ঝোড়ো হাওয়া, বজ্রপাতের মধ্যেও কয়েক ডজন হেলিকপ্টার ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত উড়ে যায়। এত খারাপ আবহাওয়ায় হেলিকপ্টার উড়তে দেখিনি।’ মাইথানি বলেন, প্রতি ১০ মিনিটে একটি ফ্লাইট আছে। অটো রিকশার মতো যাত্রী তোলা হয়। এই উন্মত্ত জনতা একদিন রাজ্য সরকারকে অস্বস্তিকর অবস্থায় ফেলতে পারে। মাইথানি এর আগে কিছু ভিডিও শেয়ার করেছিলেন যাতে দেখা যায় যে কীভাবে হেলিকপ্টারগুলি রাজ্য প্রশাসনের ঠিক করে দেওয়া সমস্ত নিয়ম এবং নির্দেশিকা লঙ্ঘন করে থাকে।
কেদারনাথ এবং বদ্রীনাথে চিকিৎসা সহায়তা প্রদানকারী সিক্স সিগমা হেলথকেয়ারের সিইও ডা. প্রদীপ ভরদ্বাজ বলেন, দুর্ঘটনা ঘটলে পর্যাপ্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই। এ ধরনের পরিস্থিতি জনগণের জন্য চরম দুর্ভোগের সৃষ্টি করেছে। অটোর মতো উড়ে যাওয়া হেলিকপ্টারের দিকে নজর রাখতে সরকারের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা জরুরি।