অর্ণব আইচ: চোখের সামনে ঘরের ভিতর পুড়ছেন বাবা। তাঁকে বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা করছেন ছেলে। আতঙ্কে আর্তনাদ করছেন স্ত্রী। কিন্তু ঘরে ঢুকবেন কী করে, দরজার মুখেই যে আগুন। সেই আগুনই স্ত্রী-ছেলের সামনে ধীরে ধীরে গ্রাস করে নিল বৃদ্ধকে। শুক্রবার মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব কলকাতার (Kolkata) সার্ভে পার্ক এলাকায়।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃত বৃদ্ধের নাম প্রদীপ রায়। সার্ভে পার্কের সন্তোষপুর এলাকার নন্দনকাননে স্ত্রী, পুত্রকে নিয়ে থাকতেন অবসরপ্রাপ্ত ওই ব্যক্তি। একাই একটি ঘরে ঘুমোতেন। ওই ঘরেই ছিল গ্যাস সিলিন্ডার। শুক্রবার সকালে যখন তাঁর ঘরটিতে আগুন লাগে, তখনও ঘুমোচ্ছিলেন তিনি। পোড়া গন্ধ ও ঘর থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখে তাঁর ঘরে যান স্ত্রী ও ছেলে। ততক্ষণে ঘরে আগুন লেগে গিয়েছে। বৃদ্ধ কোনওমতে উঠে বের হওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু দরজার কাছেই তো আগুন। ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়েছিল পুরো ঘর। পুড়তে শুরু করেছিল আসবাবপত্র। ধোঁয়ার কারণে ঘরের ভিতরই অচৈতন্য হয়ে পড়ে যান ওই বৃদ্ধ। স্ত্রী ও ছেলে উদ্ধার করতে ভিতরে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু হঠাৎই ঘরের ভিতরে থাকা গ্যাস সিলিন্ডার ফেটে যায়। হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে দেওয়াল। ফলে আগুন আরও ছড়িয়ে পড়ে। অসহায় পরিবারের লোকেদের চোখের সামনেই পুড়ে যেতে থাকেন প্রবীরবাবু।
[আরও পড়ুন: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে তৃণমূলে যোগ ‘ফুডম্যান’ চন্দ্রশেখর কুণ্ডুর]
খবর যায় দমকল ও সার্ভে পার্ক থানায়। দমকলের দুটি ইঞ্জিন আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। কিছুক্ষণের মধ্যেই আগুন দমকলের আয়ত্তে আসে। অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় বৃদ্ধকে ঘর থেকে বের করে বাঘাযতীন স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। পুলিশের অনুমান, শর্ট সার্কিটের ফলে এই অগ্নিকাণ্ড। যদিও গ্যাস লিক করে এই অগ্নিকাণ্ড কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অন্যদিকে, কিছুদিন আগে দক্ষিণ কলকাতার গড়ফার ঘোষপাড়ায় চা তৈরি করার সময় স্টোভ ফেটে অগ্নিদগ্ধ হন সাগরিকা মণ্ডল নামে এক বধূ। এসএসকেএম হাসপাতালে তিন সপ্তাহ চিকিৎসার পর এদিন মৃত্যু হয় তাঁর।
[আরও পড়ুন: নিজের টাকায় স্কুল গড়েছিলেন, আন্তর্জাতিক সম্মানে ভূষিত ‘শবর পিতা’ কলকাতা পুলিশের কনস্টেবল]
The post ঘরের ভিতর পুড়ছেন স্বামী, শত চেষ্টা করেও বৃদ্ধের প্রাণ বাঁচাতে পারলেন না স্ত্রী-পুত্র appeared first on Sangbad Pratidin.