বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত: প্রার্থী তালিকা প্রকাশ হতেই গুজরাট (Gujarat) বিজেপির (BJP) অন্দরের ক্ষোভ কার্যত বিদ্রোহে পরিণত হয়েছে। টিকিট না পেয়ে নির্দল প্রার্থী হয়ে দাঁড়াচ্ছেন একাধিক প্রাক্তন বিধায়ক। বিদ্রোহ সামাল দিতে সক্রিয় হতে হয়েছে অমিত শাহ (Amit Shah) ও জে পি নাড্ডাদের (JP Nadda)। আমেদাবাদ ছুটে যেতে হচ্ছে গেরুয়া শিবিরের হেভিওয়েট নেতাদের। মূলত নতুন মুখ, দলবদল করে আসা কংগ্রেস (Congress) ও নির্দলদের প্রার্থী করতে গিয়ে ৩৮ জন বিধায়ককে বাদ দেন মোদি-শাহরা। তাতেই বিপত্তি। বিদ্রোহ সামাল দিতে না পারলে এর প্রতিফলন ভোটবাক্সে পড়া নিশ্চিতই।
ভদোদরার ছ’বারের বিধায়ক মধু শ্রীবাস্তবকে এবার টিকিট দেয়নি পদ্মশিবির। তালিকা প্রকাশ হতেই নির্দল হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রবীণ বিধায়ক। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে শাহর দূত হয়ে ভদোদরা যান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হর্ষ সাংভি। তাঁর সঙ্গে দেখা করা দূর অস্ত, উল্টে রবিবার দলের রাজ্য কার্যালয়ের সামনে তুমুল বিক্ষোভ দেখান শ্রীবাস্তব ও অনুগামীরা। রাজ্য দফতরের সামনে পুলিশ পিকেট বসাতে হয়। বিক্ষুব্ধ প্রাক্তন বিধায়ক জানান, কর্মী-সমর্থকরা তাঁকে নির্দল প্রার্থী হয়ে লড়তে বলেছেন। তাঁদের দাবিকে গুরুত্ব দিতেই তিনি লড়বেন।
[আরও পড়ুন: তানজানিয়া থেকে অভিনব কায়দায় সোনা পাচারের ছক, বিমানবন্দরে উদ্ধার ৬১ কেজি!]
প্রাক্তন বিধায়ক ও রাজ্যে পরিচিত আদিবাসী মুখ হর্ষদ ভাসাভাকে প্রার্থী করেন গেরুয়া শিবির। দু’দিন আগে ক্ষোভের কথা রাজ্য দফতরে জানিয়েছিলেন। শনিবার সমর্থকদের সঙ্গে নিয়ে তাঁর পুরনো কেন্দ্র নর্মদা জেলার নন্দোদ আসনে মনোনয়ন জমা দেন। ভাসাভা বর্তমানে রাজ্য বিজেপির তফসিলি উপজাতি মোর্চার সভাপতি। টানা দশ বছর রাজপিপলার বিধায়ক ছিলেন। তাঁকে প্রার্থী না করায় নন্দোদ ও রাজপিপলা দু’টি আসনেই বিজেপিকে বেগ পেতে হবে।
[আরও পড়ুন: স্বস্তি রামদেবের, পতঞ্জলির ওষুধ উৎপাদনে নিষেধাজ্ঞা তুলল সরকার]
রাজপিপলা আসনে কংগ্রেস থেকে আসা প্রাক্তন সাংসদ প্রয়াত চান্দু দেশমুখের মেয়ে দর্শনাকে প্রার্থী করেছে বিজেপি। আবার ভদোদরা জেলার পাদ্রা আসনে নতুন মুখ চৈতন্যসিং জালাকে প্রার্থী করেছেন শাহরা। এই আসনের প্রাক্তন বিধায়ক দীনেশ প্যাটেলও নির্দল হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। গতবার আসনটি কংগ্রেস জিতলেও দীনেশ এলাকায় যথেষ্ট প্রভাবশালী নেতা বলেই পরিচিত। ভদোদরা ডেয়ারির চেয়ারম্যান এবং জেলার সমবায় আন্দোলনের পরিচিত মুখ। সৌরাষ্ট্রেও ক্ষোভের আগুন কার্যত দাবানলে পরিণত হয়েছে। কারজানে আসনে কংগ্রেস থেকে আসা অক্ষয় প্যাটেলকে প্রার্থী করায় কার্যত আড়াআড়ি ভাগ হয়ে গিয়েছে জেলা বিজেপি। প্রাক্তন বিধায়ক সতীশ প্যাটেল দল ছেড়ে নির্দল হয়ে দাঁড়াচ্ছেন।
কেশোদ আসনে বিধায়ক অরবিন্দ লাদানিকে সরিয়ে প্রার্থী করা হয়েছে দেবভাই মালাম। প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হতেই দলের সমস্ত পদ থেকে ইস্তফা দেন মন্ত্রী লাদানি। প্রার্থী নিয়ে ক্ষোভ কার্যত রাস্তায় নেমে আসায় দু-একদিনের মধে্যই আমেদাবাদ যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অমিত শাহ ও জে পি নাড্ডা। বিক্ষুব্ধদের সঙ্গে তাঁরা কথা বলবেন। তাতে কতটা চিড়ে ভেজে এখন সেটা দেখার। এদিকে, কংগ্রেস গুজরাতে আরও ৩৩ জন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। কংগ্রেসের এখনও পর্যন্ত মোট ঘোষিত প্রার্থীর সংখ্যা দাঁড়াল ১৪২।