সুব্রত বিশ্বাস: রানাঘাট-বনগাঁ লোকালে তরুণীর শ্লীলতাহানি করে ট্রেন থেকে ফেলে দেওয়ায় অভিযুক্ত দ্বিতীয় যুবককে গ্রেপ্তার করল বনগাঁ জিআরপি। সোমবার গভীর রাতে রানাঘাট স্টেশন থেকে ধরা হয় প্রবীর গুপ্ত নামের ওই যুবককে। আগেই গ্রেপ্তার হয়েছিল অভিযুক্ত দিলীপ তালুকদার। সেই দিলীপই আরেক অভিযুক্তকে চিনিয়ে দেয়।
উল্লেখ্য, শুক্রবার রাত ৯টা ১০মিনিট রানাঘাট স্টেশন থেকে বনগাঁ লোকাল ছাড়ার পর দুই যুবক মহিলা কামরায় তরুণীর শ্লীলতাহানি করে। তাঁকে ট্রেন থেকে লাইনের পাশের ঝোপে ছুঁড়েও ফেলে দেওয়া হয়। ওই তরুণী মাথায় গুরুতর চোট পেয়েছেন। তিনি এখনও কল্যাণীর জেএনএম হাসপাতাল চিকিৎসাধীন।
[আরও পড়ুন: আসানসোলে ও বালিগঞ্জের উপনির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী কারা? জল্পনায় একাধিক নাম]
তরুণী নদিয়ার নবরায় নগর সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা। ওই স্টেশনে ট্রেন ঢোকার আগেই তরুণীকে ট্রেন থেকে ঠেলে ফেলে দুই যুবক। এদিকে ট্রেন থামামাত্রই নেমে পালানোর চেষ্টা করে অভিযুক্তরা। সেই সময় তরুণীর পরিজন এবং প্রতিবেশীরা এক যুবককে পাকড়াও করে। যদিও আরেকজন পালিয়ে যায়। দ্বিতীয় দুষ্কৃতীর নাগাল পেতে হন্যে হয়ে সন্ধান শুরু করে বনগাঁ জিআরপি। সোমবার ওসি রুপসিনা পারভিন-সহ জিআরপির অন্য সদস্যরা রানাঘাট স্টেশনে সারাদিন অপেক্ষা করছিলেন। শেষে রাত দশটার সময় অভিযুক্ত প্রবীর গুপ্ত স্টেশনে ঢুকলে ধৃত দিলীপ তালুকদার তাকে চিনিয়ে দেয়। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। অপরাধের কথা স্বীকার করেছে ধৃত।
দিলীপ মার্বেলের কাজ করলেও প্রবীর বেকার। সারাদিন স্টেশন ও ট্রেনে ঘুরে অপরাধমূলক কাজকর্মই তার কাজ বলে পুলিশ জেনেছে। প্রবীর জেরায় পুলিশকে জানিয়েছে, গাংনাপুর শ্মশান কলোনির বাসিন্দা সে। ছোটবেলাতেই তাকে রেখে বাবা- মা বাংলাদেশে চলে যায়। ঠাকুরদা-ঠাকুমার সঙ্গে থাকলেও পড়াশোনা তেমন করেনি প্রবীর। মহিলাদের উত্যক্ত করা, ঝামেলা করেই দিন কাটে তার। ধৃত দুজনের বন্ধুত্ব না থাকলেও ট্রেন যাত্রা সূত্রেই পরস্পরকে চেনে তারা।
[আরও পড়ুন: দেউচা-পাচামিতে জমি দিলেই চাকরি, তৈরি ৫ হাজারের বেশি পদ, মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণায় খুশির হাওয়া]
শুক্রবারের ঘটনার পর থেকে সন্ধের পর রানাঘাট-বনগাঁ শাখার ট্রেনে জিআরপি ও আরপিএফ পাহারায় রয়েছে। পাশাপাশি মহিলা কামরায় মেয়েদের একা-একা না ওঠার আবেদন করেছে প্রশাসন। উল্লেখ্য, চলতি বছরেই চলন্ত ট্রেনের মহিলা কামরায় শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটে। দমদম থেকে শিয়ালদহ আসার রাস্তায় তাঁর শ্লীলতাহানি করে এক যুবক। ফেসবুক লাইভে সাহায্য চান। শেষে শিয়ালদহ স্টেশনে নেমে রেল পুলিশের কাছে অভিযোগ জানান। হাওড়া ছাড়ার পর এমন শ্লীলতাহানি করে ট্রেন থেকে ফেলে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে আগেই।