নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: বাংলার পর্যবেক্ষক ঠিক করতে হিমশিম খাচ্ছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। কারণ, বিজেপির কোনও কেন্দ্রীয় নেতাই বাংলার দায়িত্ব নিতে রাজি হচ্ছেন না। অথচ গত বছর বাংলার বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই রাজ্য বিজেপির পক্ষ থেকে পূর্ণ সময়ের জন্য পর্যবক্ষেকের দাবি জানানো হয়েছিল। সেই সিদ্ধান্ত ঝুলে রয়েছে এখনও।
বাংলার ভারপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়কে (Kailash Vijayvargiya) বহুদিন আগেই বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বর তরফ থেকে বাংলায় যেতে নিষেধ করে দেওয়া হয়েছে। তাঁকে অন্য রাজ্যের দায়িত্বও দেওয়া হয়েছে। কৈলাসকে যে সরানো হবে সেকথাও ঘনিষ্ঠমহলে একাধিকবার জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। অথচ, তারপরে বছর ঘুরে গেলেও পর্যবেক্ষকের নাম ঠিক করতে পারছেন না তাঁরা। সূত্রের খবর, বিজেপির ত্রিপুরা (Tripura) জয়ের প্রধান কারিগর সুনীল দেওধরকে (Sunil Deodhar) বাংলার দায়িত্ব নেওয়ার জন্যে বলা হয়েছিল।
[আরও পড়ুন: পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও অর্পিতাকে রাতভর জেরা ইডির, ক্রমশ জোরাল গ্রেপ্তারির সম্ভাবনা]
ত্রিপুরার সঙ্গে চারিত্রিক দিক দিয়ে বাংলার অনেকটাই মিল রয়েছে এই যুক্তি দিয়েই দেওধরকে বাংলার পর্যবেক্ষক করার কথা বলাও হয়েছিল। কিন্তু তিনি সেই প্রস্তাব সবিনয়ে প্রত্যাখ্যান করেছেন বলেই জানা গিয়েছে। তার পিছনে যেমন, বঙ্গ বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জর্জরিত অবস্থা রয়েছে আবার বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা যেভাবে বাংলাতে জাতপাতের অঙ্কের হিসেবে সেখানে ভোট করাতে চাইছেন সেই বিষয়টিতেও সায় না থাকার মত কারণ রয়েছে বলেই সূত্রের খবর। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা গোবলয়ের রাজ্যগুলির মতই বাংলাতেও জাতপাতের সমীকরণে ভোটের অঙ্ক কষেই এখন থেকেই এগোতে চাইছেন। বাংলাতে যে সেই সমীকরণ খাটবে না তা বুঝতে পেরেই দেওধরের মত দক্ষ সংগঠক পিছিয়ে এসেছেন বলেই বিজেপির অন্দরে শোনা গিয়েছে।
[আরও পড়ুন: বিপুল টাকার উৎস কী? তথ্যের খোঁজে পার্থ ‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতাকেও গ্রেপ্তার করল ইডি]
তাঁকে রাজি করানো চেষ্টা অবশ্য অব্যাহত। সে পর্যন্ত তা না হলে উত্তরপ্রদেশের কোনও সাংসদকে বাংলার পর্যবেক্ষক হিসেবে বসানো হতে পারে এমন জল্পনাও রয়েছে। সেখানকার কৌশাম্বির সাংসদ ও বিজেপির তফসিলি জাতি মোর্চার প্রাক্তন সর্বভারতীয় সভাপতি বিনোদ সোনকরের (Vinod Sonkar) নাম এই তালিকার উপরের দিকে রয়েছে। সংঘ পরিবারের ঘনিষ্ঠ এই নেতা বর্তমানে ত্রিপুরার পর্যবেক্ষকের দায়িত্বে রয়েছেন। তাঁর নাম নিয়ে চিন্তাভাবনার পিছনেও সেই জাতপাতের অঙ্কই রয়েছে। বাংলার পিছিয়ে পড়া শ্রেণী ও আদিবাসীদের ভোটব্যাংকের দিকে নজর রেখে একদিকে সোনকরকের কথা ভাবা হচ্ছে আবার রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে এনডিএ প্রার্থী দ্রৌপদী মূর্মূর (Draupadi Murmu) জয় নিয়ে বাংলার আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রামগুলিতে বিজয়োৎসবও পালন করা হচ্ছে।