সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকবে, তবে লড়াই নয়। মঙ্গলবার রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ সভায় এমনটাই বার্তা দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন (Joe Biden)। চিনের সঙ্গে সমঝোতার ইঙ্গিত দিয়ে এদিন তিনি স্পষ্ট বলেন, ‘আমেরিকায় ঠান্ডা লড়াই চায় না’।
[আরও পড়ুন: ব্রিটেনের বিতর্কিত কোয়ারেন্টাইন নীতিতে ক্ষুব্ধ ভারত, পরিস্থিতি সামলাতে আসরে বিদেশমন্ত্রী]
রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ সভার ৭৬তম অধিবেশনে মার্কিন কুটনীতিতে এক নয়া দিগন্তের ইঙ্গিত দেন বাইডেন। মিত্রদেশগুলিকে আশ্বস্ত করার পাশাপাশি, বিদেশনীতির ক্ষেত্রে ‘আমেরিকা প্রথম’ এজেন্ডা থেকে বেরিয়ে আসার ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। চিনের সঙ্গে সমঝোতার ইঙ্গিত দিয়ে ‘ঠান্ডা লড়াই চায় না আমেরিকা’ বলে সাফ জানিয়েছেন তিনি। একইসঙ্গে, করোনা মহামারী, জলবায়ু পরিবর্তন ও সাইবার নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বিশ্বকে আমেরিকা নেতৃত্ব দেবে। তবে তা সামরিকভাবে নয়। কিন্তু বিশ্লেষকদের মতে, আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের ঘটনা ‘নির্ভরযোগ্য’ মিত্র হিসেবে আমেরিকার ছবি কিছুটা মলিন হয়েছে।
এদিন চিনের নাম না করেই বাইডেন বলেছেন, ‘‘আমরা নতুন করে ঠান্ডা লড়াই চাই না। গোটা বিশ্ব যুযুধান শিবিরে ভাগ হয়ে থাক, সেটা আমেরিকার কাম্য নয়।’’ বেজিংয়ের দিকে ইঙ্গিত করে তাঁর দাবি, কিছু বিষয়ে মতভেদ থাকলেও যে কোনও দেশের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ ভাবে, সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে কাজ করতে রাজি আমেরিকা।
বলে রাখা ভাল, সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর গোটা বিশ্বজুড়ে আধিপত্য স্থাপন করেছে আমেরিকা। তবে আন্তর্জাতিক মঞ্চে সমীকরণ পালটে নয়া শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে চিন। ফলে সংঘাতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে দুই শক্তিধর দেশ। বিশেষ করে, দক্ষিণ চিন সাগর, তাইওয়ান, সাইবার ওয়ার ও বাণিজ্য নিয়ে ঠান্ডা লড়াই চলছে ওয়াশিংটন ও বেজিংয়ের মধ্যে।
কয়েকদিন আগেই অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে কৌশলগত চুক্তি করে দেশটিকে পারমাণবিক সাবমেরিন দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে আমেরিকা। আর এই পদক্ষেপ যে চিনকে নজরে রেখেই করা হয়েছে তা বলাই বাহুল্য। কিন্তু এভাবে মুখের গ্রাস ছিনিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে পারমাণবিক সাবমেরিন দিয়ে ফ্রান্সের ক্ষোভের মুখে পড়েছে আমেরিকা। আমেরিকার এই ভূমিকাকে ‘পিছন থেকে ছুরি মারা’র শামিল বলে উল্লেখ করেছে তারা। স্বাভাবিক ভাবেই এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে টানাপড়েন আরও বেড়েছে। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়া থেকে রাষ্ট্রদূতদের ফেরত আসার নির্দেশ দিয়েছে ফ্রান্স।