সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জীবনের বৃত্তটা এত দিনে যেন সম্পূর্ণ হল!ম্যাচ গড়াপেটার মতো কলঙ্কের নাগপাশে জড়িয়ে ভারতীয় ক্রিকেট ছেড়ে বেরিয়ে যেতে হয়েছিল মহম্মদ আজহারউদ্দিনকে। গড়াপেটার অভিযোগ প্রমাণ হয়ে যাওয়ার পর আজহারকে আজীবন নির্বাসনে পাঠিয়ে দিয়েছিল ভারতীয় বোর্ড। যার পর ক্রিকেটকিট চিরতরে তুলে রাখতে হয় সাতচল্লিশ টেস্টে দেশকে নেতৃত্ব দেওয়া অধিনায়ককে। ৯৯ টেস্ট, ৩৩৪ ওয়ান ডে খেলার পর। আজহার বারবার আর্তনাদ করেছেন বলে যে, তিনি নির্দোষ। কেউ শোনেনি। আজহার বারবার হাহাকার করেছেন, দেশের হয়ে শততম টেস্ট খেলা নিয়ে। কেউ পাত্তা দেয়নি। লোকে ভেবেছিল, এটাই শেষ। ধ্রুপদী হায়দরাবাদির আর ক্রিকেটে ফেরা হবে না।
[আরও পড়ুন: নির্বাচকদের ‘রাজনীতি’র জন্যই বিশ্বকাপ দলে সুযোগ পাননি, বিস্ফোরক যুবরাজ]
কে জানত, উনিশ বছর পর সব আবার পালটে যাবে? কে জানত, যে আজহারকে চিরব্রাত্য করে দিয়েছিল ভারতীয় ক্রিকেট, ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছিল অবহেলার অতলে, সেই আজহারই আবার উনিশ বছর পর ফিরে আসবেন ভারতীয় ক্রিকেটের মূলস্রোতে? ক্রিকেট প্রশাসকের বেশভূষায়। শুক্রবার হায়দরাবাদ ক্রিকেট সংস্থার প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়ে গেলেন মহম্মদ আজহারউদ্দিন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রকাশ জৈনকে একশোর উপর ভোটে হারিয়ে! এবং জিতে উঠে আজহার বলে দিলেন, “একটা কথা আমি বলতে চাই। ক্রিকেটের উন্নতি হলে ক্রিকেট সংস্থারও উন্নতি হবে। ক্রিকেট সংস্থার উন্নতি হলে সবাই ভাল থাকবে। গত তিন বছর ধরে হায়দরাবাদ ক্রিকেট সংস্থার অবস্থা ভাল না। কিন্তু এবার থেকে সব পালটে যাবে। এবার থেকে আমরা এগোবো।”
[আরও পড়ুন: এবার বলিউডেও ধোনি! অভিনয় করছেন সঞ্জয় দত্তের সিনেমায়]
ক্রিকেটের মূলস্রোতে ফিরে আসা মোটেও সহজ ছিল না আজহারের জন্য। নানা বাধা—বিপত্তি পার করতে হয়েছে প্রাক্তন ভারত অধিনায়ককে। ভারতীয় ক্রিকেট থেকে চিরনির্বাসনের পর আজহারের প্রথম আত্মপ্রকাশ ঘটে রাজনৈতিক ভূমিকায়। ২০০৯ সালে কংগ্রেসে যোগ দেন তিনি। ২০০৯ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত সাংসদ ছিলেন। কিন্তু তারই মধ্যে আবার অদৃষ্ট আক্রমণ করে প্রাক্তন ভারত অধিনায়ককে। বাইক দুর্ঘটনায় পুত্র আয়াজউদ্দিনকে হারান আজহার। ২০১২ সালে শেষ পর্যন্ত নির্বাসনের শাস্তি ওঠে আজহারের উপর থেকে। অন্ধ্রপ্রদেশ হাইকোর্ট তাঁর আজীবন নির্বাসনের শাস্তিকে বেআইনি ঘোষণা করে দেয়। তার পরেও চড়াই উতরাই পেরোতে হয়েছে। যেমন, ২০১৭ সালে হায়দরাবাদ ক্রিকেট সংস্থার প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ছিলেন আজহার। মনোনয়নও জমা করেন। কিন্তু বোর্ডের শাস্তি ওঠেনি বলে তা বাতিল করে দেওয়া হয়। এবং নির্বাসনের শাস্তি আদালত প্রত্যাহার করে দেওয়ার পরেও যেখানে যেখানে তিনি গিয়েছেন, সমালোচিত হতে হয়েছে। ভারতের পাঁচশো নম্বর টেস্ট অনুষ্ঠানে ডাকা হয়েছিল আজহারকে। সমালোচিত হয়েছিল বোর্ড। ইডেন বেল উদ্বোধনে আজহারকে আমন্ত্রণ করেছিলেন সিএবি প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। ফলাফল, সৌরভের সিদ্ধান্তকে একযোগে আক্রমণ করেন গৌতম গম্ভীর এবং সঞ্জয় মঞ্জরেকর।
The post ভারতীয় ক্রিকেটে চমকপ্রদ প্রত্যাবর্তন আজহারের, পেলেন গুরুত্বপূর্ণ পদ appeared first on Sangbad Pratidin.