গৌতম ব্রহ্ম: অণ্ডকোষ আছে, পুরুষাঙ্গ নেই। মনস্টার বেবি, মৎস্যকন্যার পর রাজ্যে ফের জন্ম নিল ‘বিরল’ শিশু। ছবিতেই স্পষ্ট, এই সদ্যোজাত শিশুপুত্র আর পাঁচটা শিশুর থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। ‘ডাইহাইড্রো টেস্টোস্টেরন’ হরমোনের অভাবে পুরুষাঙ্গ তৈরি হয় না শরীরে, যাকে ‘অ্যাফালিয়া’ বলা হয়। এই শিশুটির ক্ষেত্রে অবশ্য অদ্ভুত ঘটনা ঘটেছে। অণ্ডকোষ তৈরি হয়েছে। কিন্তু পুরুষাঙ্গ বা লিঙ্গ তৈরি হয়নি।
চিকিৎসকদের দাবি, কোটিতে একটি শিশু এমন অস্বাভাবিকতা নিয়ে জন্ম নেয়। এতটাই বিরল। সম্প্রতি পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে এমনই এক বিরল শিশুর জন্ম দেন পাঁশকুড়ার খুকুরদা গ্রামের গৃহবধূ মৌমিতা দে ঘোষ। মৌমিতার সন্তানের যে শুধু পুরুষাঙ্গ ছিল না তাই নয়, মলদ্বারও তৈরি হয়নি। ফলে জন্মের পরই বিকল্প পথে মল-মুত্র বের করার প্রয়োজন হয়।
ডাক্তারদের পরামর্শেই গত ২০ ফেব্রুয়ারি সন্তানকে নিয়ে কলকাতার এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ আসেন মৌমিতার স্বামী প্রসেনজিৎ। পেডিয়াট্রিক সার্জন ডা. পি কে মিশ্রর অধীনে ভর্তি করা হয় শিশুটিকে। ডাক্তারবাবুরা মল ও মূত্র ত্যাগের জন্য আলাদা পথ তৈরি করে দেন। স্যালাইন, অক্সিজেনও দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার দু’টোই বন্ধ করা হয়। শিশুটি এখন স্থিতিশীল।
[বারাকপুরে স্কুল গেট ও পাঁচিল ভাঙল সেনা, প্রতিবাদে পথ অবরোধ অভিভাবকদের]
ন্যাশনালে জন্ম নেওয়া মনস্টার বেবি মাস দু’য়েক বেঁচেছে। চিত্তরঞ্জন সেবাসদনের ওটিতে মৎস্যকন্যা মাত্র সাড়ে চার ঘণ্টা বেঁচে ছিল। এই শিশুটির ভবিষ্যৎ কী? ডা. প্রফুল্লকুমার মিশ্র জানিয়েছেন, ক্যারিওটাইপিং করে আগে নিশ্চিত হতে হবে বেবিটি এক্সওয়াই ক্রোমোজোমের অধিকারী। অর্থাৎ পুরুষ। তারপর ‘বার্ড উইং ফ্যালোপ্লাস্টি করে পুরুষাঙ্গ বা ‘পেনিস তৈরি করা হবে শিশুটির শরীরে। তারপর মূত্রথলিকে জুড়ে দেওয়া হবে সেই পুরুষাঙ্গে। যদিও স্বাভাবিক পুরুষাঙ্গের মতো এই লিঙ্গ উত্তেজনায় শক্ত হবে না। সর্বক্ষণ শিথিল হয়েই থাকবে। যাকে বলে ‘ফ্লাসিড পেনিস’। এই পুরুষাঙ্গও যৌন সুখ দিতে পারবে যদি পেনাইল ইরেকটর মেশিন লাগানো হয়। এই ধরনের অপারেশন রাজ্যে তো বটেই, এ দেশেও খুব কম হয়েছে। পাঁশকুড়ার এই শিশুটিরও ১৫ বছর পর এই অস্ত্রোপচার করা যেতে পারে। এমনই মত প্রফুল্লবাবুর।
যদিও জানালেন, অনেক ফ্যাক্টরের উপর নির্ভর করছে এই অপারেশন। বাবা-মা শিশুটিকে কীভাবে মানুষ করছেন। শিশুটির মানসিক গঠন কেমন। যদি শরীর ও মননে পুরুষ হয় তাহলে এই অপারেশন করা যেতেই পারে। এনআরএসের সুপার জানিয়েছেন, “বিশেষ নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে শিশুটিকে। সুস্থ রাখার সবরকম চেষ্টা করছেন চিকিৎসকরা।
কেন হয়?
- ‘ডাইহাইড্রো টেস্টোস্টেরন’-এর অভাবে পুরুষাঙ্গ তৈরি হয় না শরীরে, যাকে ‘অ্যাফালিয়া’ বলা হয়।
শিশুর ভবিষ্যৎ?
- ক্যারিওটাইপিং করে আগে নিশ্চিত হতে হবে শিশুটি এক্সওয়াই ক্রোমোজোমের অধিকারী। অর্থাৎ জিনগতভাবে পুরুষ।
- ১৫ বছর পর ‘বার্ড উইং ফ্যালোপ্লাস্টি’ করে পুরুষাঙ্গ বা পেনিস তৈরি করা যেতে পারে। তখনই মূত্রথলিকে জুড়ে দেওয়া যাবে পুরুষাঙ্গের সঙ্গে।
- স্বাভাবিক পুরুষাঙ্গের মতো এই লিঙ্গ উত্তেজনায় শক্ত হবে না। সর্বক্ষণ শিথিল হয়েই থাকবে। যাকে বলে ‘ফ্লাসিড পেনিস’।
- ‘পেনাইল ইরেকটর মেশিন’ লাগানো হলে অবশ্য ফ্লাসিড পেনিসও জেগে উঠবে। মিলবে যৌনসুখ।
[মৃত্যু হলেও স্ত্রীর কাছে ফিরবেন না, তবে বৈশাখির পাশেই মেয়র]
The post অণ্ডকোষ আছে কিন্তু পুরুষাঙ্গ নেই, শহরে জন্ম বিরল শিশুর appeared first on Sangbad Pratidin.