সুকুমার সরকার, ঢাকা: ‘‘ভারত যতগুলো দেশকে করোনা ভাইরাসের (Coronavirus) টিকা দিয়েছে, তার মধ্যে বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি টিকা গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশে (Bangladesh) করোনার টিকাকরণ চলমান রাখতে ভারত কাজ করে যাচ্ছে।’’ বৃহস্পতিবার আত্মবিশ্বাসের সুরে এ কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী। এদিন আগরতলার বিপরীত সীমান্ত বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া স্থলবন্দরে সাংবাদিক বৈঠকে ভ্যাকসিন প্রাপ্তি নিয়ে একথা বলেন তিনি।
ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী আরও বলেন, ”করোনা ভাইরাসের টিকার সরবরাহ নিয়ে সংকট রয়েছে। সরবরাহের তুলনায় চাহিদা অনেক বেশি। চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশে সাত মিলিয়ন টিকা সরবরাহ করা হবে।” তিনি মনে করেন, কোভিড ভ্যাকসিনের (COVID Vaccine) জন্য ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সুসম্পর্কে কোনও ভাঁটা পড়বে না। করোনা ভাইরাস মহামারী মোকাবিলায় ভারতের কাছ থেকে বাংলাদেশ ৭০ লক্ষ টিকা সরবরাহ পেয়েছে। চুক্তি মতে, খুব দ্রুত বাকি ভ্যাকসিনও পেয়ে যাবে বাংলাদেশ।
[আরও পড়ুন: বাড়ছে সংক্রমণ, করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশেই টিকা উৎপাদনের প্রস্তাব রাশিয়ার]
তবে এই মুহূর্তে ভারত থেকে বাংলাদেশে করোনা টিকা সরবরাহে অনিশ্চয়তা তৈরি হওয়ায় দেশে টিকাকরণ ঝুঁকির মুখে। ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতি মাসে ৫০ লক্ষ ডোজ করে টিকা আসার কথা থাকলেও গত দু’মাসে কোনও চালান আসেনি। টিকার বিকল্প উৎস হিসেবে চিন-রাশিয়ার সঙ্গে চলছে আলোচনা ও চিঠি চালাচালি। স্বাস্থ্যবিভাগের একটি সূত্র জানায়, সরকার রাশিয়া, চিনের পাশাপাশি অন্যান্য উৎস থেকে টিকা পেতে তৎপরতা শুরু করেছে। এর মধ্যে আন্তর্জাতিক উদ্যোগে গ্যাভি-কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটি বাংলাদেশকে ১ লক্ষ ৬১০ ডোজ টিকা বিনামূল্যে সরবরাহের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। চিনের সিনোফার্ম ইন্টারন্যাশনাল করপোরেশন তাদের উৎপাদিত ৫ লক্ষ টিকা বাংলাদেশকে উপহার হিসেবে দেবে বলে জানিয়েছে। বাংলাদেশ সরকার, বেক্সিমকো ও ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে চুক্তির পর থেকে দুটি চালানে ৭০ লক্ষ ডোজ টিকা বাংলাদেশ পেয়েছে গত জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে।
[আরও পড়ুন: করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ে নাজেহাল বাংলাদেশ, বাড়ল লকডাউনের মেয়াদ]
এদিকে, লকডাউন চলাকালীন জরুরি প্রয়োজনে ভারতে যাওয়ার ভিসা মিলবে। তবে জরুরি ভিসা ছাড়া দেশের সব ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্রের কাজ বন্ধ থাকবে। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশন এক বার্তায় এই তথ্য জানিয়েছে। এতে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশ সরকার ২২ থেকে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত লকডাউন বাড়ানোয় জরুরি ভিসা ছাড়া বাংলাদেশের সব ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্রের কাজ স্থগিত রাখা হয়েছে। প্রয়োজনে ইমেল করতে অনুরোধ করা হয়েছে। এর আগে প্রথম দফার লকডাউনেও গত ১৪ থেকে ২১ এপ্রিল ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্র সাময়িকভাবে বন্ধ ছিল।