সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাংলাদেশের ভোটযুদ্ধে বাধা নেই শেখ হাসিনার দল আওয়ামি লিগের। এমনটাই বলছে মহম্মদ ইউনুসের নির্বাচন সংস্কার কমিশন। কিন্তু হাসিনায় ঘোর আপত্তি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের। যাতে কোনওভাবেই আওয়ামি লিগ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না পারে তার জন্য যথাযথ পদক্ষেপ করার আহ্বান জানাচ্ছেন তাঁরা। এখানেই আন্তর্জাতিক মহলের প্রশ্ন, এই ছাত্রনেতারাই হাসিনার পতনের মধ্যে দিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়েছিলেন। অথচ তাঁরাই একটা রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না দেওয়ার ডাক দিচ্ছেন। এটা কি স্বৈরতন্ত্র নয়?
চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি নির্বাচন হয়েছিল বাংলাদেশে। বিপুল ভোটে জয়লাভ করে সরকার গড়ে আওয়ামি লিগ। তারপর পদ্মা দিয়ে অনেক জল বয়ে গিয়েছে। আট মাসের মধ্যে ৫ আগস্ট জনরোষে পতন ঘটে হাসিনা সরকারের। এখন মহম্মদ ইউনুসের অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে দ্রুত ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবি তুলছে বিএনপির মতো একাধিক রাজনৈতিক দল। সংশয় রয়েছে আওয়ামি লিগের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা নিয়েও। কিন্তু গতকাল বৃহস্পতিবার রংপুর জেলা শাসকের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের মুখমুখী হয়ে নির্বাচন সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেন, "আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে আওয়ামি লিগের কোনও বাধা নেই। সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে এবারের নির্বাচন উৎসবমুখর হবে। এজন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে কোনও ধরণের বাঁধা দেওয়া হবে না। আমরা চাই, একটা অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন। আমি আশা করি সব দল নির্বাচনে অংশ নেবে।"
জানা গিয়েছে, সব রাজনৈতিক দলের আলাপ আলোচনা শেষে আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুসের কাছে সংস্কার প্রস্তাব পেশ করা হবে বলেও জানিয়েছেন বদিউল আলম মজুমদার। এদিকে, আওয়ামি লিগের নির্বাচনে শামিল হওয়া নিয়ে তাঁর মন্তব্য মানতে নারাজ ছাত্রনেতারা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমার বক্তব্য, আওয়ামি লিগ বাংলাদেশে একাধিক গণহত্যার জন্য দায়ী। এছাড়া গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যা-সহ বিভিন্ন মানবাধিকারবিরোধী কর্মকাণ্ডে হাসিনার দল ১৬ বছর ধরে জড়িত ছিল। জুলাই গণহত্যায় প্রায় দুহাজার শহিদের প্রাণ এবং ৩০ হাজার মানুষের অঙ্গহানির জন্য তারা দায়ী। যে দলটি বাংলাদেশের নির্বাচনব্যবস্থাকে কলঙ্কিত করেছে, তাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ প্রদান উচিত নোয়। পাশাপাশি বদিউল আলম মজুমদারকে তাঁর বক্তৃতা প্রত্যাহার করে আওয়ামি লিগকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না দেওয়ার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন ছাত্রনেতারা।
তবে শুধু বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনই নয় আওয়ামি লিগের ভোটযুদ্ধে নামা নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই আপত্তি রয়েছে বিএনপি-জামাতেরও। কারণ হাসিনাহীন বাংলাদেশ ক্ষমতা দখল করতে চায় তারা। গত আগস্ট মাসেই দেশ বাঁচাতে, দল বাঁচাতে রাজনীতির ময়দানে নামার কথা জানিয়েছিলেন হাসিনাপুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়। আপাতত বোন রেহানাকে নিয়ে ভারতে রয়েছেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। জয় জানিয়েছিলেন বাংলাদেশে ফিরবেন হাসিনা। ফলে আওয়ামি লিগ নির্বাচনে নাম লেখালে হাসিনা নাকি জয় কে নামবেন লড়াইয়ে সেদিকে নজর থাকবে ওয়াকিবহাল মহলের।