সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হামলার মুখে পড়ে হাসপাতালের আইসিইউ-তে ভর্তি আইনজীবী। মঙ্গলবার চট্টগ্রাম আদালতে ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিনের শুনানিতে আসতেই পারলেন না তিনি। আর এই ঘটনায় তটস্থ ৫১ জন আইনজীবী দলের কেউই চিন্ময় প্রভুর আদালতে সওয়াল করতে এলেন না। ফলে পিছিয়ে গেল জামিন মামলার শুনানি। পরবর্তী শুনানির দিন ঠিক হয়েছে আগামী ২ জানুয়ারি। ফলে এখনও একমাস কারাগারেই থাকতে হবে চিন্ময় প্রভুকে। এই ঘটনায় উদ্বেগ আরও বাড়ল ইসকন কর্তৃপক্ষের। কলকাতায় সংস্থার ভাইস প্রেসিডেন্ট রাধারমণ দাসের প্রতিক্রিয়া, ''আইনজীবীদের সকলের উপরও হামলা চলেছে। বাংলাদেশে হিন্দুদের নিরাপত্তা যে তলানিতে, তা আবারও প্রমাণ হল। হিন্দুদের বাসযোগ্যই নেই আর! বিচারের নামে প্রহসন চলছে।'' এই ঘটনায় একজন বন্দির মানবাধিকার লঙ্ঘন হল বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের।
যত সময় গড়াচ্ছে, ততই যেন হিন্দুদের বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠছে বাংলাদেশ। গত সপ্তাহে ইসকনের গ্রেপ্তার হওয়া সন্ন্যাসীর হয়ে সওয়ালে রাজি ছিলেন প্রায় ৫১ জন আইনজীবী। তাঁরা জোটবদ্ধ হয়েছিলেন। কিন্তু চিন্ময় প্রভুর পাশে দাঁড়ানোয় মৌলবাদীদের নিশানায় পড়েন তাঁরা সকলেই। ইসকন কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, একে একে ৫১ জন আইনজীবীই কোনও না কোনও ভাবে আক্রান্ত হয়েছেন। কারও বাড়ি ভাঙচুর হয়েছে, কারও পরিবারকে হুমকি দেওয়া হয়েছে। এক আইনজীবীর উপর এমনই হামলা চলে যে তিনি গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালের আইসিইউ-তে ভর্তি। আর তাঁর পরিস্থিতিতে আতঙ্কে পিছু হটেছেন বাকি আইনজীবীরাও। কেউ কেউ ভয়ে পালিয়ে গিয়েছেন এলাকা ছেড়ে। কারও বিরুদ্ধে পালটা মামলাও হয়েছে।
মঙ্গলবার চট্টগ্রাম আদালতে চিন্ময় প্রভুর শুনানিতে হাজির হলেন না তাঁর কোনও আইনজীবীই। ফলে শুনানিও হল না। বিচারক পরবর্তী শুনানির দিন ঠিক করেছেন আগামী ২ জানুয়ারি। অর্থাৎ এখনও একমাস চট্টগ্রামের কারাগারেই বন্দি থাকতে হবে ইসকনের সন্ন্যাসীকে। তবে এই ঘটনা প্রবল আলোড়ন ফেলেছে সব মহলে। সমাজ কর্মীদের অভিযোগ, এভাবে বন্দিকে বিচার পাওয়া থেকে বঞ্চিত করা ইউনুস সরকারের পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র, যা একেবারেই মানবাধিকারের পরিপন্থী। কেউ কেউ বলছেন, হিন্দু নির্যাতনের বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা আন্দোলন দমনে ইসকনকে আরও চাপে ফেলতে মরিয়া সরকারপক্ষ।