সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাংলাদেশে ইসকনকে নিষিদ্ধের দাবিতে পিটিশন দাখিল হয়েছে আদালতে। আজ বুধবার সেই মামলার শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল মহম্মদ আসাদুজ্জামানের মন্তব্য, "ইসকন এক ধর্মীয় মৌলবাদী সংগঠন।" তাহলে কি পদ্মাপাড়ে নিষিদ্ধ হতে চলেছে প্রভুপাদের সংগঠন?
হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর অত্যাচার বেড়ে গিয়েছে। চলতি নভেম্বর মাসে তা আরও লাগামছাড়া হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। গত ৫ নভেম্বর ইসকনকে নিষিদ্ধ করার দাবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করেন চট্টগ্রামের এক মুসলিম ব্যবসায়ী। ইসকনকে ‘জঙ্গি সংগঠন’-এর তকমা দেন তিনি। যার পরই স্থানীয় হিন্দুদের বিক্ষোভে কার্যত রণক্ষেত্রের রূপ নেয় চট্টগ্রাম। সেই বিক্ষোভ দিকে দিকে ছড়িয়ে পড়ে। এর মাঝেই ইসকন মন্দিরের সন্ন্যাসী চিন্ময় প্রভু ওরফে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা আনা হয়েছে। যা নিয়ে হিন্দুদের বিক্ষোভে উত্তাল বাংলাদেশ। মৃত্যু হয়েছে এক আইনজীবীরও।
এই উত্তপ্ত পরিস্থিতির মাঝেই ইসকনকে নিষিদ্ধের দাবিতে পিটিশন দাখিল করা হয়েছে বাংলাদেশের হাই কোর্টে। মামলা দায়ের করেন এক আইনজীবী। আজ সেই আবেদনের শুনানিতে মামলাকারী মৃত আইনজীবী সইফুল ইসলামের মৃত্যুর বিষয়টিও আদালতের নজরে আনেন। এর পর অ্যাটর্নি জেনারেল মহম্মদ আসাদুজ্জামান আদালতের কাছে বাংলাদেশে ইসকনের প্রতিষ্ঠার নানা বিষয় তুলে ধরেন। তখনই তিনি বলেন, "এটি একটি ধর্মীয় মৌলবাদী সংগঠন। সরকার ইসকন নিয়ে যাচাই শুরু করেছে।" তাঁর এই মন্তব্যের পরই বৃহস্পতিবার সকালের মধ্যে ইসকনের বিষয়ে সরকারের অবস্থান এবং দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির রিপোর্ট জমা দিতে অ্যাটর্নি জেনারেলকে নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যাতে আর অবনতি না হয় সেনিয়েও সরকারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২৫ নভেম্বর বিকালে চিন্ময় প্রভুকে ঢাকার বিমানবন্দর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। ২৬ তারিখ চট্টগ্রামের আদালতে তোলা হয় তাঁকে। শুনানি শেষে জামিন খারিজ হয় এই হিন্দু সন্ন্যাসীর। চিন্ময়কে আদালতে পেশের আগে থেকেই ভিড় জমতে শুরু করেছিল আদালত চত্বরে। জামিন খারিজ হতেই গোটা এলাকা রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। প্রিজন ভ্যান আটকে চলতে থাকে বিক্ষোভ। হিন্দুদের বিক্ষোভ থামাতে লাঠিচার্জের পাশাপাশি সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে পুলিশ। উত্তাল এই পরিস্থিতিতেই মৃত্যু হয় ওই আইনজীবীর। স্বাভাবিকভাবেই পড়শি দেশের অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি এবং হিন্দু-সহ অন্যান্য সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত।