shono
Advertisement

Breaking News

Bangladesh

হাসিনার মতোই পরিণতি হবে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনের? বাংলাদেশে বিরাট বিক্ষোভ

হাসিনার পদত্যাগ নিয়ে করা মন্তব্যে রাষ্ট্রপতির উপর প্রবল ক্ষুব্ধ ইউনুস সরকার।
Published By: Suchinta Pal ChowdhuryPosted: 06:30 PM Oct 22, 2024Updated: 06:48 PM Oct 22, 2024

সুকুমার সরকার, ঢাকা: এবার বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মহম্মদ সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগের দাবিতে সরব বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। বিক্ষোভে শামিল হন ছাত্ররা। রাজধানী ঢাকার নানা প্রান্তে তাঁরা মশালমিছিল, মানববন্ধন করেন। কয়েকদিন আগেই রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন সাফ জানান, তাঁর কাছে শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র নেই। এতেই নতুন করে বিতর্কের শুরু হয়। প্রশ্ন ওঠে, তাহলে কী সত্যিই ইস্তফা দিয়েছিলেন হাসিনা? রাষ্ট্রপতির এহেন মন্তব্যে প্রবল ক্ষুব্ধ ড. মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। রাগে ফুঁসছেন ছাত্র আন্দোলনের সদস্যরাও। রাজনৈতিক মহলে জল্পনা শুরু হয়েছে যে, হাসিনার মতোই পরিণতি হবে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনের? জনরোষে গদি হারাতে হবে তাঁকে?  

Advertisement

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ আন্দোলনে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিতে বাধ্য হন শেখ হাসিনা। গদি হারিয়ে এখন তিনি ভারতের আশ্রয়ে রয়েছেন। প্রায় আড়াই মাস পেরিয়ে গিয়েছে বাংলাদেশের এই রাজনৈতিক পালাবদলের। কিন্তু হাসিনার ক্ষমতাচ্যুত হওয়া নিয়ে এখনও বিস্তর জলঘোলা চলছে। এই ঘটনায় গভীর ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছেন আওয়ামি লিগের নেতা-কর্মীরা। কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের দাবি, সম্প্রতি ভিডিও বার্তা দিয়ে দলের নেতা-কর্মীদের হাসিনা জানান, তিনি পদত্যাগ করেননি। যেকোনও সময় বাংলাদেশে ঢুকে পড়বেন।

এর পর মুজিবকন্যার পদত্যাগ নিয়ে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন ঢাকার এক সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, “আমি বহুবার পদত্যাগপত্র সংগ্রহের চেষ্টা করেছি, কিন্তু ব্যর্থ হয়েছি। ৫ আগস্ট সকাল সাড়ে ১০টায় প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন থেকে বঙ্গভবনে ফোন আসে, প্রধানমন্ত্রী প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য আসবেন। কিন্তু এক ঘণ্টার মধ্যে আর একটি ফোনে জানানো হয় যে, শেখ হাসিনা আসছেন না। এ বিষয়ে আর বিতর্কের সুযোগ নেই। তিনি দেশ ছেড়ে চলে গিয়েছেন এবং এটাই সত্য। কিন্তু ভবিষ্যতে এ বিষয়ে যাতে আর কোনও প্রশ্ন না ওঠে, তা নিশ্চিত করতে সুপ্রিম কোর্টের মতামত চাওয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে আদালতের মতামতের ভিত্তিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়।”

এই মন্তব্য নিয়েই রাষ্ট্রপতিকে তোপ দাগেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। সাহাবুদ্দিনের বক্তব্যকে মিথ্যাচার বলে দাবি করেন তিনি বলেন, “তাঁর এই পদে থাকার যোগ্যতা আছে কি না, এ নিয়েই প্রশ্ন রয়েছে। তিনি যদি তাঁর বক্তব্যে অটল থাকেন, তাহলে বিষয়টি উপদেষ্টা পরিষদে আলোচনা হতে পারে। রাষ্ট্রপতি নিজেই ৫ আগস্ট রাত ১১টা ২০ মিনিটে তিন বাহিনীর প্রধানকে নিয়ে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বলেছিলেন, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তাঁর কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন এবং উনি তা গ্রহণ করেছেন।” অন্যদিকে, ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, “হাসিনাকে উৎখাত করা হয়েছে। একটি অবৈধ সরকারকে জনগণ অভ্যুত্থানের মাধ্যমে উৎখাত করা হয়েছে। এখানে পদত্যাগপত্রের কোনও ভূমিকা নেই।” এর পরই ফেসবুকে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবি তোলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। ঘোষণা করা হয় কর্মসূচির।

মঙ্গলবার মহম্মদ সাহাবুদ্দিনের অপসারণের দাবিতে ঢাকায় বঙ্গভবন ঘেরাও করার ঘোষণা করতেই সংশ্লিষ্ট এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য ছাড়াও মোতায়েন করা হয় সেনাবাহিনীর এপিসি ও জলকামান। বঙ্গভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখান স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা কমিটির সদস্যরা। এদিন দুপুর ১২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রাজু ভাস্কর্য থেকে শুরু করে বঙ্গভবনের দিকে যায় স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা কমিটি। হাইকোর্ট মাজার মোড় এলাকায় পুলিশের বাধা অতিক্রম করেই তাঁরা এগিয়ে যান। কিন্তু ভিতরে ঢুকতে চাইলে পুলিশ আটকে দেয় বিক্ষোভকারীদের। উল্লেখ্য, গত আগস্ট মাসেই হাসিনাপুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় দাবি করেছিলেন, “মা দেশ ছেড়ে ভারতে যাওয়ার আগে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেননি। সংবিধান মতে তিনি এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।” জয়ের সেই দাবিই আরও একবার উসকে যায় রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনের মন্তব্যে। তাঁর অপসারণের দাবি এবার বিক্ষোভ- আন্দোলন শুরু হয়েছে বাংলাদেশে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • এবার বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মহম্মদ সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগের দাবিতে সরব বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। পথে নেমেছেন ছাত্ররা।
  • কয়েকদিন আগেই রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন সাফ জানান, তাঁর কাছে শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র নেই। এতেই নতুন করে বিতর্কের শুরু হয়।
  • গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ আন্দোলনে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিতে বাধ্য হন শেখ হাসিনা।
Advertisement