সৌরভ মাজি, বর্ধমান: অনলাইনে পাতা প্রতারণার নয়া ফাঁদ। ব্যাংকের কাস্টমার সার্ভিস পয়েন্ট বা সিএসপি-র গ্রাহকরাই টার্গেট। লাগছে না কোনও ওটিপি বা ব্যাংক ডিটেলস। শুধুমাত্র লটারির টাকা ট্রান্সফারের নামে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে টাকা। রাজ্যজুড়ে বেশ কয়েকজন এই ধরণের প্রতারণার শিকার হয়ে মোটা টাকা খুইয়েছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন পূর্ব বর্ধমানের (Purba Bardhaman) বাসিন্দাও।
ব্যাপারটা ঠিক কী? পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ভুয়ো পরিচয় দিয়ে গ্রাহকের মোবাইলে ফোন করে জানানো হচ্ছে অনলাইন লটারিতে তিনি পুরস্কার জিতেছেন। লটারির অর্থ পেতে যেতে হবে কাছাকাছি কোনও সিএসপিতে। সেখানে গেলেই অর্থ গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে টাকা ট্রান্সফার করে দেওয়া হবে। সরল বিশ্বাসে অনেকেই তা করছেন। তখন প্রতারক ওই গ্রাহককে বলছেন সিএসপির কর্মীকে ফোনটা দিতে বলছে। ফোনটা দেওয়ার পর ওই কর্মীর কাছে প্রতারক নিজেকে গ্রাহকের নিকটআত্মীয় বলে পরিচয় দিচ্ছে। বলছে, খুব বিপদে পড়েছে, হাসপাতালে আছে, দ্রুত মোটা অঙ্কের টাকা পাঠতে। সঙ্গে নিজের অ্যাকাউন্ট নম্বর জানিয়ে দিচ্ছে ফোনে। সিএসপির কর্মীও কিছু না বুঝেই টাকা পাঠিয়ে দিচ্ছে।
[আরও পড়ুন: ‘জাওয়াদে’র দাপটে রাতভর বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত বাংলা, কবে দেখা মিলবে রোদের?]
টাকা ট্রান্সফার হয়ে গেলে প্রতারক গ্রাহকের নম্বরটি ব্লক করে দিচ্ছে। এরপর সিএসপি কর্মী গ্রাহকের কাছে ট্রান্সফার করে দেওয়া অর্থ দাবি করছে বা অ্যাকাউন্ট থেকে ওই অর্থ পাঠানো হয়েছে জানালে গ্রাহক বুঝতে পারছেন প্রতারিত হয়েছেন। পুলিশের এক আধিকারিক জানান, এইভাবে শুধুমাত্র সিএসপি কাউন্টার নয়, সাইবার ক্যাফেতে পাঠিয়েও অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে প্রতারকরা। এর জন্য গ্রাহকদের সতর্ক থাকা প্রয়োজন। কয়েকটি অভিযোগের তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। জেলার পুলিশ সুপার কামনাশিস সেন জানান, অনলাইনের প্রতারণা রুখতে সচেতনতার প্রচার করা হচ্ছে। সাধারণ মানুষ সতর্ক না হলে প্রতারণা রোখা যাবে না। কেউ প্রতারিত হলে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশে অভিযোগ জানানোর পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
জেলা পুলিশের তরফে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি, সিএসপি কাউন্টারে সিএসপি কাউন্টারে রেজিস্টারে সব তথ্য নথিভুক্ত করে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোন অ্যাকাউন্টে টাকা যাচ্ছে তার নম্বর, গ্রাহকের নাম, মোবাইল নম্বর, সময় নথিভুক্ত করে রাখতে বলা হয়েছে। এই ধরণের প্রতারণার শিকার হলেই সাইবার থানায় অভিযোগ দায়ের করতে বলা হয়েছে। সিএসপি তথ্য নথিভুক্ত থাকলে পুলিশের পক্ষে দুষ্কৃতকারীকে চিহ্নিত করা সহজ হবে।