ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বোলপুর: ২০ তারিখ তাঁর বাড়িতে পাত পেড়ে খেয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। এর মাত্র ১৯ দিনের মাথায় তৃণমূল নেত্রীর পদযাত্রায় পা মেলালেন বাসুদেব দাস বাউল। এমনকী, সভার মঞ্চ থেকে গান গাইলেন, ‘সোনার দিদিরে বক্ষ মাঝে রাখব ছেড়ে দেব না।’ এদিনে এই ঘটনা রাজনৈতিকভাবে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
শান্তিনিকেতন সফরে এসে বোলপুরের রতনপল্লির বাসুদেব বাউলের বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজ সেরেছিলেন অমিত শাহ। কিন্তু সফর শেষে আক্ষেপ করে বাসুদেব বাউল জানিয়েছিলেন, “আমার মেয়ের উচ্চশিক্ষার কথা বলব ভেবেছিলাম, কিন্তু তা বলতে পারলাম না।” উলটে তাঁর মেয়ের উচ্চশিক্ষার দায়িত্ব নেন তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল। তখনই ঠিক ছিল ২৯ তারিখের মেগা ব়্যালিতে পা মেলাবেন বাসুদেব। এদিন তাঁর অন্যথা হয়নি।
[আরও পড়ুন : ‘বিশ্বভারতী নিয়ে ঘৃণ্য ধর্মান্ধ রাজনীতি চলছে’, ‘বর্গিহানা’ থেকে বাংলাকে বাঁচানোর আরজি মমতার]
বোলপুরের লজ মোড় থেকে জামবুনি পর্যন্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চার কিলোমিটার লম্বা রোড শোয়ে সাংস্কৃতিক মেলবন্ধ ছিল চোখে পড়ার মতো। ছিলেন বাউল, কীর্তনীয়া, ঢাকি, সাওতাল আদিবাসীরা। তাঁরা নিজের নিজের সংস্কৃতি তুলে ধরেছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমোর মেগা রোড শোয়ে। ব়্যালি শেষে জামবুনি মোড়ে জনসভা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখান থেকে বীরভূম, বাউল গানের প্রতি নিজের ভালবাসার কথা তুলে ধরেন তিনি। তাঁরই আবদারে তৃণমূলের জনসভার মঞ্চ থেকেই গান ধরেন বাসুদেব বাউল। তাঁর গানের কথাও ছিল বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।
এদিন মঞ্চ থেকে ‘হৃদমাঝারে রাখব ছেড়ে দেব না’ গানটি ধরেন বাসুদেব। তবে ভিতরে কিছু কথায় পরিবর্তন আনেন তিনি। যেমন বলেন, “সোনার দিদিরে বক্ষ মাঝে রাখব, ছেড়ে দেব না। ছেড়ে দিলে সোনার দিদি আর তো পাব না। দিদিকে আপন করে রাখব, ছেড়ে দেব না। দিদিকে আমরা সবাই বক্ষ মাঝে রাখব, ছেড়ে দেব না।” ‘জয় দিদির, জয়’ স্লোগান দিয়ে গান শেষ করেন। এদিনের তাঁর এই কর্মকাণ্ড বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। যদিও বাসুদেব দাস বাউলের সাফাই, ‘আমারা তো বাউল, সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে চলতে চাই।”