ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: রাজ্যের প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনা নিয়ে ফের সরব মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। বিধানসভায় দাঁড়িয়ে কেন্দ্রের মোদি সরকারকে ‘নির্দয়’ বলে কটাক্ষ করলেন তিনি। একইসঙ্গে, রাজ্যের ঋণের বোঝা বৃদ্ধির জন্য বামেদের দায়ী করলেন। সবমিলিয়ে বিধানসভা অধিবেশনের শেষপর্বে দাঁড়িয়ে একযোগে বিরোধীদের বিঁধলেন তৃণমূল নেত্রী। পরিশেষে আত্মপ্রত্যয়ী সুরে জানিয়ে দিলেন, ২০২১ সালে আরও বেশি আসন নিয়ে রাজ্যে ক্ষমতায় আসবে তৃণমূল।
এদিন বাজেট অধিবেশনের জবাবি ভাষণে রাজ্যের বঞ্চনা নিয়ে ফের সরব হন মুখ্যমন্ত্রী। মোদি সরকারকে বিঁধে বলেন, “কেন্দ্রে এত নির্দয় সরকার দেখিনি। রাজ্যের প্রাপ্য কিছুই দিচ্ছে না। এখন নির্বাচন বলে বাংলা ওদের টার্গেট। ভোটের সময় বাংলা প্রীতি হয়েছে।” নাম না করে জেপি নাড্ডাকে কটাক্ষও করেন তিনি।বলেন, “বিবেকানন্দকে ঠাকুর বানিয়েছে।” আক্রমণ শানান উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথরে বিরুদ্ধেও। মমতার কথায়, “শুনছি নাকি যোগী-ভোগীও আসবেন। নানুরে যাবেন। ওঁরা চেনেন নানুর?” চড়া সুরে আক্রমণ করেন প্রধানমন্ত্রীকেও। বলেন, “কোভিডে ১০ মাস পর ঘর থেকে বেরলেন। এখানে এসে বলে গেলেন আগাম ১ হাজার কোটি দিয়ে যাচ্ছি। তাও বিপর্যয় মোকাবিলা তহবিলের প্রাপ্য টাকা এটা।”
[আরও পড়ুন : ফের কল্পতরু মুখ্যমন্ত্রী, বিধানসভা অধিবেশনের শেষদিনে ৭২ হাজার কোটির নয়া প্রকল্পের ঘোষণা]
হলদিয়ার সভামঞ্চ থেকে আমফান পরবর্তী রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে অভিযোগ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী।পরিস্থিতি মোকাবিলায় কেন্দ্র রাজ্যকে সাহায্য করেছে বলেও দাবি করেছিলেন তিনি। তারই পালটা এদিন মমতার দাবি, “আমফানের কাজ করতে গিয়ে কোথাও একটা সমস্যা হয়েছিল। কার না হয়? সব সমস্যার সমাধান হয়ে গিয়েছে।”
সোমবার ছিল বিধানসভার বাজেট অধিবেশনের শেষদিন। এদিন গত বছরের বাজেট বহির্ভূত খরচের হিসেব দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এবার আমফান, করোনা-সহ রাজ্যের পরিকাঠামোগত কাজের জন্য বাজেটের বাইরে ২৫ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছে বলে জানান তিনি। মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, ঋণের বোঝা কমে রাজ্যে কর আদায় বেড়েছে। সেই তথ্য এদিন তুলে ধরেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১০-১১ আর্থিক বর্ষে আদায় করা করের পরিমাণ ছিল ২১ হাজার ১২৮ কোটি টাকা। ২০২১-২২ আর্থিক বর্ষে কর আদায় বেড়ে হয়েছে ৭৫ হাজার ৪১৬ কোটি টাকা। সেখানে ২০১০-১১ তে ঋণের অনুপাত ছিল ৪০.১০ শতাংশ। ২০২১-২২ এ হয়েছে ৩৪.৮১ শতাংশ। ৬ শতাংশ কমেছে রাজ্যে ঋণের পরিমাণ।