সন্দীপ চক্রবর্তী: ২১ দিনের লকডাউনে সবে সাতটা দিন পেরিয়েছে। আশঙ্কা ধীরে ধীরে সত্যি হয়ে উঠছে। সমস্ত কাজ বন্ধ হয়ে পড়ায় বিপুল আর্থিক ক্ষতির মুখে সব রাজ্য়ই। বাংলাও তার ব্যতিক্রম নয়। সরকারি প্রকল্পের মাধ্যমে জনগণকে সুবিধা দিতে গিয়ে ভাঁড়ারে টান পড়ছে। এই পরিস্থিতিতে ২৫ হাজার কোটি টাকা চেয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আরজি জানালেন, যত দ্রুত সম্ভব এই টাকা রাজ্যকে দেওয়ার। চিঠিতে তিনি এও উল্লেখ করলেন যে রাজ্যের প্রকল্পগুলি চালাতে বিস্তর অসুবিধার মুখে পড়তে হচ্ছে। বিশেষত সামাজিক পরিষেবা প্রদানকারী প্রকল্পের ক্ষেত্রে অর্থ সংকট বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বৃহস্পতিবার এই লকডাউন পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সূত্রের খবর, তারপরই সিদ্ধান্ত হতে পারে যে ১৪ এপ্রিলের পর দেশে লকডাউনের সময়সীমা আরও বাড়বে কি না। যদিও এই বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থাকবেন না বলে জানিয়েছেন। এদিন নবান্ন থেকে তিনি বলেন, “ভিডিও কনফারেন্স আছে। তবে আমাদের ওখানে কিছু বলতে বলা হয়নি। শুধু উপস্থিত থাকার কথা বলেছে। আগেরবার ৩ মিনিট সময় পেয়েছিলাম, বলেছিলাম। এবার শুধু শুধু তিনঘণ্টা সময় নষ্ট করব কেন? অন্য কাজ করব এই সময়ে।”
দিন দশেক আগে, করোনা মোকাবিলায় কোন রাজ্য কতটা প্রস্তুত, তা জানতে চেয়ে মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে বসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন যে যত দ্রুত সম্ভব দেশে বিদেশি বিমানের ওঠানামা বন্ধ করতে হবে। করোনা সংক্রমণ রুখতে ওটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূ্র্ণ কার্যকরী পদক্ষেপ হবে। সেদিন প্রধানমন্ত্রী এই কথা শুনেছিলেন। এরপর লকডাউন ঘোষণা করার আগেই কেন্দ্রের তরফে দেশি-বিদেশি বিমান পরিষেবা বন্ধ করার ঘোষণা হয়।
[আরও পড়ুন: নিজামুদ্দিনের জমায়েতে যোগ দেওয়া আরও এক ব্যক্তির মৃত্যু, কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা]
এদিকে, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ হু হু করে ছড়িয়ে পড়ছে দেশজুড়ে। প্রতি ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তের ক্রমবর্ধমান সংখ্যা কপালে চিন্তার ভাঁজ চওড়াই করছে। মনে করা হচ্ছে, স্টেজ থ্রি বা গোষ্ঠী সংক্রমণ পর্যায়ে ঢুকে পড়েছে ভারত। এই পরিস্থিতিতে লকডাউনের সময়সীমা বাড়ানো হবে কি না, তা নিয়ে একটা জল্পনা চলছিলই। সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী-মুখ্যমন্ত্রীদের বৈঠকে মূল আলোচ্য বিষয় হতে চলেছে সেটাই। কোন রাজ্যের লকডাউন পরিস্থিতি কেমন, তা বিশদে জানতে চাইবেন প্রধানমন্ত্রী। তারপর ঠিক হতে পারে যে ১৪ এপ্রিলের পর লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানো হবে কি না। যদি লকডাউন আরও বেশিদিন চলে, সেক্ষেত্রেই বা রাজ্যগুলি কতটা প্রস্তুত, তাও খতিয়ে দেখা হবে। শিল্প, অর্থনৈতিক ক্ষেত্র আরও কতটা ক্ষতির মুখে পড়তে, তাও বিবেচ্য বিষয়। ফলে বৃহস্পতিবারের বৈঠকের দিকে নজর এখন সবমহলের।
[আরও পড়ুন: করোনা মোকাবিলায় সামনের সারিতে আজিম প্রেমজি, বড় অনুদান Wipro’র]
The post লকডাউনের জেরে প্রভূত ক্ষতি, কেন্দ্রের কাছে অর্থ সাহায্য চেয়ে মোদিকে চিঠি মমতার appeared first on Sangbad Pratidin.