সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: বিসর্জনের আতসবাজি প্রদর্শনীতে অঘটন! আলোর রোশনাই বদলে গেল আঁধারে। শহর পুরুলিয়ার জেলে পাড়া সার্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির আতশবাজি প্রদর্শনী দেখতে গিয়ে পাকা বাড়ির ছাদের কার্নিশ ভেঙে মৃত্যু হল ২ জনের। সোমবার রাত সাড়ে ন'টা পর্যন্ত যা খবর পাওয়া গিয়েছে তাতে জখম হয়েছেন ১৬ জন। তবে পুলিশের আশঙ্কা জখমের সংখ্যা বাড়বে। পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "আতসবাজি প্রদর্শনীর সময় একটি দুর্ঘটনা ঘটে। পুলিশ দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে জখমদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে এসেছে। "
ফি বছরের মতো এবারও দ্বাদশীতে পুরুলিয়া শহরের জেলেপাড়া দুর্গাপুজো কমিটির আতশবাজি প্রদর্শনী চলছিল ওই পুজো কমিটির মন্দির লাগোয়া রাসমেলা মাঠে। বিসর্জনের শোভাযাত্রার আগে এই প্রদর্শনী চলে। এবার ভিড় হয়েছিল অনেকটাই বেশি। তাই রাসমেলা প্রাঙ্গণ ছাড়া বিভিন্ন বাড়ির দেওয়ালে ও ছাদে মানুষজন উঠে পড়েছিলেন। আতসবাজি প্রদর্শনী শেষ হওয়ার ঠিক আগে ওই পাকা বাড়ির ছাদের কার্নিশ হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে। ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয় ২ জনের। তার মধ্যে একজন মহিলা। জখম হয় ১৬ জন।
এর পরেই চিল চিৎকার শুরু হয়ে যায় ওই এলাকায়। বাঁচাও, বাঁচাও আর্তনাদের মধ্যে এদিক সেদিক ছুটতে থাকেন এই প্রদর্শনী দেখতে আসা মানুষজন। খবর পেয়ে দ্রুত আসে পুলিশ। সঙ্গে সঙ্গে আহতদের উদ্ধার করে দেবেন মাহাতো গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে আসে। হাসপাতালে চিকিৎসকরা ২ জনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ওই আতসবাজি প্রদর্শনীতে দর্শকদের নিয়ে যাওয়া টোটো চালক সুকুমার মালাকার বলেন, "প্রদর্শনী শেষ হওয়ার মুহূর্তে এই ঘটনা ঘটে। সেই সময় মাতৃ প্রতিমা বিসর্জনের শোভাযাত্রার প্রস্তুতিও নেওয়া হচ্ছিল।" ঘটনার পরেই থমকে যায় বিসর্জনের প্রস্তুতি শোভাযাত্রা। পরে অবশ্য রীতি মেনে মায়ের বিসর্জন হয়।
এদিন সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পৌঁছান জেলা পুলিশ আধিকারিকরা। পৌঁছায় দমকলও। দেবেন মাহাতো গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পৌঁছায় বিশাল পুলিশ বাহিনী। দুর্ঘটনাস্থল থেকে একটি শিশুকে পাওয়া যায়। তাকে চাইল্ড লাইনের হাতে তুলে দেয় পুলিশ। রাতে ঘটনাস্থলে যান পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। যান রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো।