সুব্রত বিশ্বাস: চতুর্থ দিনে পড়ল কুড়মি আন্দোলন (Kurmi Protest)। ট্রেন লাইনে শুয়ে-বসে চলছে আন্দোলন। শনিবারও বাতিল ৭২টি দূরপাল্লার ট্রেন (Trains)। দক্ষিণ ভারত ও মুম্বইগামী অধিকাংশ ট্রেনই বাতিল রয়েছে। যার জেরে চরম ভোগান্তির শিকার যাত্রীরা। শুধু যাত্রীরা নয়, ব্য়াপক ক্ষতির মুখে পড়েছে রেলও। ইতিমধ্যে প্রায় ১৪০০ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে খবর।
সারনা ধর্ম ও আদিবাসী উপজাতিভুক্ত হওয়ার দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে কুড়মি সম্প্রদায়। পুরুলিয়া-খড়গপুরের একাধিক স্টেশনে রাতভর অবস্থান করছে তাঁরা। যার জেরে দক্ষিণ-পূর্ব শাখার চক্রধরপুর এক্সপ্রেস, হাওড়া-বোকারো ও রাঁচি-বোকারোর ইস্পাত এক্সপ্রেস, জন শতাব্দি, দুরন্ত এক্সপ্রেস-সহ মোট ৭২টি দূরপাল্লার ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। বাতিল হয়েছে মুম্বই ও টাটানগরগামী সব ট্রেন। আগামিকাল ৬টি ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে বেশকিছু ট্রেনের যাত্রাপথ।
[আরও পড়ুন: নতুন ছবির নায়ক চাই, শহরে শহরে ঘুরছেন পর্ন তারকা!]
শুধু ট্রেন নয়, কুড়মি আন্দোলনের জেরে বাংলায় শিল্পের একাংশও বন্ধের মুখে। দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্ট-সহ আসানসোল ও দুর্গাপুরের ছোট ইস্পাত কারখানাগুলি চরম সংকটের মুখে পড়েছে। টাটার কাছে ও টাটা-খেমাসুলির মধ্যে প্রায় ৩০টি মালগাড়ি অবরুদ্ধ হয়ে রয়েছে। যেগুলিতে রয়েছে ইস্পাত তৈরির কাঁচামাল থেকে সিমেন্ট প্রস্তুতের কাঁচামাল। রয়েছে কয়লা, সার ও খাদ্যশস্য সামগ্রীর মতো অতি প্রয়োজনীয় বস্তু। অবরোধে আটকে থাকা মালগাড়িতে কাঁচামাল থাকায় স্টিল প্ল্যান্টের পাশাপাশি কলকাতা, সাঁকরাইল, ডানকুনি, পানাগড়, মেদিনীপুরের বিভিন্ন সিমেন্ট কোম্পানিগুলিও বন্ধের মুখে এসে পড়েছে। কারখানা মালিকদের আশঙ্কা, শনিবারের মধ্যে কাঁচামাল না পৌঁছলে শিল্প বন্ধ হয়ে যাবে। সংকটের মোকাবিলায় বোকারোর দিক দিয়ে ঘুরিয়ে পূর্ব রেলের আওতায় মালগাড়ি নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা শুরু হলেও তা সংখ্যায় খুব কম বলে দক্ষিণ পূর্ব রেলের অপারেশন বিভাগ জানিয়েছে।
ওই রেল জানিয়েছে, ওড়িশা ও ঝাড়খণ্ড থেকে মালগাড়িতে স্টিলের কাঁচামাল আসছিল স্টিল প্ল্যান্টগুলিতে। ধামড়া পোর্ট থেকে আসছিল কয়লা, ছত্তিশগড় থেকে আমদানি হচ্ছিল সিমেন্টের কাঁচামাল ক্লিনকার স্লাগ। সব মালগাড়িই আটকে রয়েছে অবরোধের ফলে। বিহারের দিকেও যেতে পারছে না সার, খাদ্যশস্য ও সিমেন্ট। প্রায় ৩০টি মালগাড়ি চারদিন ধরে আটকে পড়ে থাকায় রেলের ক্ষতির পরিমাণ ১৪০০ কোটি টাকার মতো বলে অপারেশন বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে।
[আরও পড়ুন: নতুন ছবির নায়ক চাই, শহরে শহরে ঘুরছেন পর্ন তারকা!]
গত তিনদিনে মেল এক্সপ্রেস বাতিল হয়েছে ২০০টি। প্রতিটি ট্রেনে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ গড়ে প্রায় ১২ লক্ষ টাকা। ফলে মেল, এক্সপ্রেসের জন্য আর্থিক ক্ষতি ২৪ কোটি টাকার বেশি। তিন দিনে মেমু ও প্যাসেঞ্জার বাতিল হয়েছে ১৩০টি। প্রতিটি ট্রেনে ক্ষতির পরিমান গড়ে ৩ লক্ষ টাকা। ফলে এ বাবদ ক্ষতি হয়েছে প্রায় চার কোটির মতো।