ধীমান রায়, কাটোয়া: অজানা চোখের রোগে আক্রান্ত কাটোয়ার বাসিন্দা আজাদ দফাদারের পরিবার। বিয়েবাড়িতে থাকা ঝাড়বাতির রঙিন আলো থেকে বিষাক্ত গ্যাস বেরোয়। এর জেরে অসুস্থ হয়ে পড়েন বিয়ে বাড়িতে থাকা দফাদারের পরিবারের লোকেরা। আলো থেকে বের হওয়া বিষাক্ত গ্যাসে অসুস্থ হয়ে পড়েন প্রায় ৬০ জন। তাদের কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

ঘটনার সূত্রপাত মঙ্গলবার রাত থেকে। এইদিন বিয়েবাড়ির ঝলমলে আলো, হালকা গানের তালে আনন্দে মাতোয়ারা ছিলেন দফাদার পরিবার। হঠাৎই বিয়েবাড়িতে থাকা ঝাড়বাতি থেকে বেরোতে থাকে “বিষবাষ্প”। সেই ধোঁয়ায় মুহূর্তে ভরে যায় ঘরগুলো। একের পর পরিবারের লোকের চোখ লাল হতে শুরু করে সেই ধোঁয়ায়। সঙ্গে শুরু হয় অসম্ভব জ্বালা, জল পড়তে শুরু করে চোখ থেকে। পূর্ব বর্ধমানের দাঁইহাট পুরসভা এলাকার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আজাদ দফাদারদের বিয়েবাড়ির আনন্দ মুহূর্তে বদলে যায় আতঙ্কে। “অজানা” চোখের রোগে হঠাৎই আক্রান্ত হয়ে পড়েন পুরুষ মহিলা ও শিশু মিলে প্রায় ৬০ জন। ঘটনাটি জানাজানি হতেই চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়। আক্রান্তদের কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে নিয়ে গেলে তাদের দেখে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেন চিকিৎসকেরা।
চিকিৎসকদের অবশ্য দাবি, চোখের এই সমস্যা ভাইরাসজনিত কারণে হয়েছে, এতে ভয়ের কিছু নেই। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দাঁইহাট পুরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আজাদ দফাদারের মেয়ে বিউটি খাতুনের বুধবার বিয়ে। বিয়ে উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার ছিল আইবুড়ো ভাত অনুষ্ঠান। আজাদ দফাদারদের বাড়িতে আত্মীয়দের নিয়ে মঙ্গলবার রাতে খাওয়াদাওয়া সেরে পরিবারের লোকজন ও আত্মীয়রা আনন্দানুষ্ঠানে ব্যস্ত ছিলেন। সেদিন রাতেই প্রায় সাড়ে বারোটা নাগাদ আমাদের বাড়িতে কয়েকজনের চোখ হঠাৎ লাল হয়ে যায়। জ্বালা করতে থাকে। চোখে জলের ঝাপটা দেওয়া হয়, তাতেও কমেনি। তারপর দেখা যায় একে একে সকলেই সমস্যায় অসুস্থ হয়ে পড়েন।
[আরও পড়ুন: করোনা আতঙ্কের জের, স্বাস্থ্য দপ্তরের কড়া পর্যবেক্ষণে চিন ফেরত খড়গপুরের ৪ জন]
আজাদ দফাদারের আত্মীয় অনিমা খাতুন বলেন, “বিয়েবাড়ির প্যান্ডেলে ঝাড়বাতি লাগানো ছিল। মাঝরাতে দেখি ঝাড়বাতির একদিক থেকে ধোওয়া বের হচ্ছে। তারপরেই আমাদের চোখের সমস্যা সৃষ্টি হয়। ওই ধোঁয়ার থেকেই এটা হয়েছে বলে মনে হয়।” তবে ঝাড়বাতি থেকে ধোঁয়া বেরতে দেখে তৎক্ষণাৎ তা নিভিয়ে দেওয়া হয়। ঘটনার বিবরণ শুনে হাসপাতালে আক্রান্তদের দেখতে যান দাঁইহাট পুরসভার চেয়ারম্যান শিশির মণ্ডল। তিনি চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেন। কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের চক্ষু বিশেষজ্ঞ সুব্রত ঘোষ জানান, “কোনও লাইটের বা ধোঁয়ার কারণে এটা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে না। চোখের এই সমস্যার কারণ কনজাংটিভাইটিস ভাইরাস বলে মনে হচ্ছে।”
[আরও পড়ুন: খাদ্যরসিকদের জন্য সুখবর, ভরা বসন্তেও মৎস্যজীবীদের জালে ধরা পড়ছে ইলিশ]
ছবি: জয়ন্ত দাস
The post অজানা চোখের রোগে আতঙ্ক কাটোয়ায়, আক্রান্ত একই পরিবারের বহু appeared first on Sangbad Pratidin.