চন্দ্রজিৎ মজুমদার, কান্দি: অভাব-অভিযোগের কথা শুনতে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) নির্দেশে ‘দিদির দূত’রা যাচ্ছেন এলাকায় এলাকায়। আমজনতার সঙ্গে কথা বলে, তাঁদেরই একজন হয়ে যাবতীয় সমস্যার কথা শুনে পৌঁছে দিচ্ছেন শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে। অনেক জায়গাতেই তাঁদের কাছে পেয়ে কার্যত নালিশের ঝাঁপি খুলে বসছেন সাধারণ মানুষ। ফলে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। তবে শনিবার মুর্শিদাবাদের কান্দিতে (Kandi) ‘দিদির দূত’দের ঘিরে যা হল, তা নজিরবিহীনই বটে। স্রেফ একটা ক্লাবের দাবিতে তৃণমূলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কার্যত হাতাহাতিতে জড়ালেন একদল যুবক। স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক ঘটনাকে ষড়যন্ত্র বলে দাবি করেছেন।
শনিবার সন্ধে নাগাদ বড়ঞা থানার তেলডুমা গ্রামে ‘দিদির দূত’ (Didir Doot) হয়ে যান বড়ঞার বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা, ব্লক তৃণমূল সভাপতি এবং অন্যান্য নেতারা। গ্রামে যখন ঘুরছিলেন তাঁরা, সেসময়ই গ্রামের যুবকরা বিধায়ককে আটকে বিক্ষোভ শুরু করেন বলে অভিযোগ। তাঁদের দাবি, আগে খেলার মাঠ ও ক্লাব করে দিন, তারপর কর্মসূচি হবে। তেলডুমা গ্রামের যুবক সাদিকুল জামান জানিয়েছেন, ”আমাদের গ্রামে ক্লাব রেজিস্ট্রেশন থাকলেও ক্লাবের কোনও ভবন নেই। খেলার মাঠ নেই। পঞ্চায়েত সদস্য, প্রধান সকলকে জানিয়ে কোনও লাভ হয়নি। তাই বলতে গিয়েছিলাম বিধায়ককে। গলা ধাক্কা খেলাম।”
[আরও পডুন: মেয়ের বিয়ের সঙ্গে ঘর তৈরির প্রতিশ্রুতি, আবাস যোজনা প্রত্যাখ্যান করা ত্রয়ীকে আশ্বাস অভিষেকের]
গ্রামের অপর যুবক মোহাম্মদ মহসিনের অভিযোগ, ”আমরা সামাজিক কাজকর্ম করি, গ্রামে কোনও দুস্থ গরিবের মেয়ের বিয়ে হলে আমরা চাঁদা তুলে সেই বিয়ের ব্যবস্থা করি। কিন্তু আমাদের সঙ্গবদ্ধ হয়ে বসার বা দাঁড়ানোর কোনও জায়গা নেই। আমরা বহুদিন বলেও লাভ হয়নি। আর সেটা বলতে গিয়েই তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা আমাদের অপমান করেন। যদিও বিধায়ক আমাদের কথা দিয়েছেন সমস্যার সমাধান তাড়াতাড়ি হবে।”
[আরও পডুন: ফের জনপ্রিয়তম রাষ্ট্রনেতার খেতাব মোদির মুকুটে, পিছনে বাইডেন-সহ তাবড় বিশ্বনেতারা]
এই পরিস্থিতিতে যুবকদের সঙ্গে তৃণমূলের (TMC) নেতা-কর্মীদের হাতাহাতি বেঁধে যায়। পুরো ঘটনা চক্রান্ত বলে দাবি করেছেন বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা। তাঁর কথায়, ”গ্রামবাসীদের অভিযোগ সত্য। গ্রামে কোনও ক্লাব নেই। আমি কথা দিচ্ছি, গ্রামে ক্লাব করে দেব খুব তাড়াতাড়ি। কিন্তু আজকে যেভাবে আমাদের সঙ্গে ব্যবহার করা হয়েছে, তা উচিত নয়। আমার মনে হয়, গ্রামবাসীদের সঙ্গে অন্য দলের নেতাকর্মীরা ষড়যন্ত্র করে এই ঘটনা ঘটিয়েছে।” বিধায়কের এই দাবি উড়িয়ে গ্রামবাসীরা বলছেন, ”আমরা আমাদের দাবি জানানোর জন্যই বিধায়ককে আটকে ছিলাম, এর বেশি কিছু করিনি। কোনও ধস্তাধস্তি, কোনও ঝামেলা হয়নি। আমরা শান্তশিষ্টভাবে আবেদন জানিয়েছি গ্রামে একটি ক্লাব করে দেওয়ার জন্য। একটি খেলার মাঠের সংস্কারের জন্য।”