ধীমান রায়, কাটোয়া: ভিনরাজ্য থেকে করোনার উপসর্গ নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন পুর্ব বর্ধমান জেলার আউশগ্রামের এক ব্যক্তি। সোমবার বাড়ি ফিরেই তিনি নিজে আউশগ্রামের বননবগ্রাম হাসপাতালে ভরতি হতে আসেন। যদিও তাঁকে সঙ্গে সঙ্গে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করে দেওয়া হয়। তবে আ্যম্বুল্যান্স না মেলায় দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়। বাধ্য হয়ে হাসপাতালের বাইরে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে রইলেন সন্দেহজনক ওই রোগী। এদিকে স্থানীয় এলাকাতেও ছড়িয়ে পড়ে আউশগ্রাম এলাকায় করোনা ভাইরাস ধরা পড়েছে। তা নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়।
আউশগ্রামের উত্তর রামনগর গ্রামের বাসিন্দা বছর পঞ্চাশের আনন্দ মণ্ডল নামে ওই ব্যক্তি রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। তিনি কর্মসূত্রে পুনেতে থাকতেন। তিনি জানিয়েছেন, প্রায় ১২ দিন ধরে জ্বর, বমি, পায়খানা এবং মাথার যন্ত্রণা হচ্ছে তাঁর। পুণেতে এক চিকিৎসককে দেখিয়েছিলেন তিনি। তারপর তাঁকে দীর্ঘ বিশ্রামে থাকার পরামর্শ দেন ওই চিকিৎসক। আনন্দবাবু বলেন, “আমি অসুস্থতার কারণে বাড়ি চলে আসি। এদিন সকালে গ্রামে ফেরার পরেই পাড়া-প্রতিবেশীরা আমাকে বলে ভিনরাজ্য থেকে যাঁরা ফিরে আসছেন তাঁদের আগে শারীরিক পরীক্ষানিরীক্ষা করাতে হবে। তাই আমি প্রথমে রামনগর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে দেখাই। সেখান থেকে আমাকে বননবগ্রামে স্থানান্তরিত করে দেওয়া হয়। এখানে আসার পর আমাকে বলা হয়েছে বর্ধমান মেডিক্যালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে থাকতে।”
[আরও পড়ুন: করোনা সতর্কতায় আন্তঃরাজ্য সীমানায় নজরদারি, ৭৮ টি পয়েন্টে শুরু নাকা চেকিং]
সোমবার দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ বননবগ্রাম হাসপাতালে যান তিনি। তবে তাঁকে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা ওয়ার্ডের ভিতরে ঢুকতে নিষেধ করেন। আনন্দবাবু বাইরেই বসে থাকেন। অবশ্য তাঁকে মুখে মাস্ক পরিয়ে রাখা হয়। তারপর ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক ধীমান মণ্ডল বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানান। তিনি বলেন, “ওই রোগীর যে উপসর্গ রয়েছে তা ভাইরাসঘটিত সেটা নিশ্চিত। কিন্তু করোনা কিনা তা পরীক্ষা না করে বলা যাবে না। তবে তাঁকে আউটডোরে দেখানো হয়েছে। রোগীর রক্ত ও কফের নমুনা নেওয়া হয়েছে পরীক্ষার জন্য। পাশাপাশি আমরা রোগীকে বর্ধমানে পাঠাচ্ছি।”
আনন্দবাবুর বাড়িতে রয়েছেন স্ত্রী, এক মেয়ে ও নাতনি। তবে বাড়ির কাউকে তাঁর সঙ্গে এদিন দেখা যায়নি। বর্ধমানে যেতে বললে আনন্দবাবু জানান, তিনি একা রয়েছেন। তাই তাঁর পক্ষে বর্ধমানে যাওয়া সম্ভব নয়। তখন ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক উদ্যোগ নেন যাতে তাঁকে বর্ধমান মেডিক্যালে পাঠানো যায়। তবে আউশগ্রাম ১ নম্বর ব্লক হাসপাতালের নিজস্ব আ্যম্বুল্যান্স নেই। বাইরের গাড়িচালকরাও ওই রোগীকে নিয়ে যেতে রাজি হচ্ছিলেন না। তাই দীর্ঘক্ষণ হাসপাতালের বাইরে জ্বর গায়ে অপেক্ষা করতে হয় অসুস্থ আনন্দ মণ্ডলকে।
ছবি: জয়ন্ত দাস
The post প্রেসক্রিপশনে করোনা সন্দেহ, বর্ধমান মেডিক্যালে কোয়েরেন্টাইনে পুণে ফেরত ব্যক্তি appeared first on Sangbad Pratidin.
