ধীমান রায়, কাটোয়া: সন্তান জন্মগতভাবে অসুস্থ। স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন তার দায় চাপিয়েছেন বধূর উপরেই। সেই সঙ্গে পণের জন্য চাপ। প্রতিবাদ করায় বধূকে বিড়ির ছ্যাঁকা দেওয়ার অভিযোগ স্বামীর বিরুদ্ধে। পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার (Bhatar) থানার এরুয়ার গ্রামের বাসিন্দা মর্জিনা বেগম নামে নির্যাতিতা বধূ বৃহস্পতিবার তার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
মর্জিনা বেগম জানান, তাঁর বাপেরবাড়ি এরুয়ার গ্রামে। বাবা নেই। গরিব পরিবার। বিধবা মা কোনওরকমে সংসার চালান। সাতবছর আগে এরুয়ার গ্রামেই শেখ বুলুর সঙ্গে দেখাশোনা করে তাঁর বিয়ে হয়। শেখ বুলু রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। মর্জিনা জানান, বিয়েতে শ্বশুরবাড়ির চাহিদামতো তাঁর মা খুব কষ্ট করেই তিনভরি সোনার গহনা, ৫০ হাজার টাকা নগদ, বিছানা, আলমারি-সহ অন্যান্য দানসামগ্রী যৌতুক হিসাবে দিয়েছিলেন। কিন্তু বিয়ের কয়েকমাস পর থেকেই অতিরিক্ত ৫০ হাজার টাকা ও একটি মোটরসাইকেলের দাবি করতে থাকেন মর্জিনার স্বামী, ও শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা। এরই মাঝে একটি অসুস্থ সন্তানের জন্ম দেন বধূ।
[আরও পড়ুন: স্বাস্থ্য পরিষেবা ঘরে পৌঁছনোর উদ্যোগ, পুরুলিয়ার চিকিৎসকদেরও গ্রামে যাওয়ার নির্দেশ মমতার]
অভিযোগ, সন্তানের অসুস্থতার জন্য বধূকেই দায়ী করেন স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন। অতিরিক্ত টাকা ও মোটরসাইকেলের জন্য চাপ দিতে থাকে। মারধরের পাশাপাশি শেখ বুলু প্রতিদিন রাতে মর্জিনার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় জলন্ত বিড়ির ছ্যাঁকা দিতে থাকেন। প্রাণ বাঁচাতে একদিন রাতে বাপেরবাড়িতে চলে যান বধূ। মা আমিনা বিবি পরেরদিন ভাতার হাসপাতালে বধূকে ভরতি করেন। পরে মায়ের সঙ্গে গ্রামে ফিরে যেতেই শেখ বুলু ও তার পরিবারের লোকজন মর্জিনা বিবিদের ওপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ। আমিনা বেগমের অভিযোগ, “ওরা আমাদের ঘর থেকে বের করে দিয়েছে। বাধ্য হয়ে গ্রাম ছাড়তে হয়।” ঘটনার পর থেকে মর্জিনা গলসি এলাকায় এক আত্মীয়বাড়িতে রয়েছেন। সেখান থেকেই তিনি এদিন ভাতার থানায় অভিযোগ জানাতে আসেন।